বিজ্ঞাপন

পেনশন প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে জবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা

May 26, 2024 | 6:47 pm

জবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষকেরা। এ সময় প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি জানান। এছাড়া দাবি আদায় না হলে ২৮ মে, ২ ঘণ্টা এবং ৪ মে অর্ধ-কর্মদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সদস্যরা এ মানববন্ধনে আয়োজন করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষকেরা বলেন, ‘একটি জাতিকে ধ্বংস করতে পারমাণবিক বোমা দরকার নেই, শিক্ষাব্যবস্থাকে আঘাত করলেই হয়। বাংলাদেশ যখনই এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই একটি মহল শিক্ষকদের পেছনে লাগে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুন্দর একটা স্কিম, কিন্তু একটি মহল অল্প কয়েকজন পেশাজীবীকে অন্তর্ভুক্ত করে নিজেদের আওতামুক্ত রেখেছে। এ ধরনের স্কিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। সর্বজনীন শব্দটার যথার্থ ব্যবহার হওয়া উচিত। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। দাবি আদায়ে তীব্র আন্দোলন করতে হবে।’

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, ‘পেনশন স্কিমের উদ্যোগ যারা নিয়েছেন তারাই এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তাহলে সর্বজনীন কীভাবে হলো? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জৌলুস নষ্ট করার জন্য, সরকারকে ভুল বোঝানোর জন্য এই স্কিম তৈরি করা হয়েছে। আত্মমর্যাদা টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষক রাজনীতির কালার চয়েজ বাদ দিয়ে সব শিক্ষককে একসঙ্গে হতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা জলি বলেন, ‘শিক্ষকেরা সহজে কিছু পান না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে, কোনো অযৌক্তিক কিছু আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারত না। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ না থাকায় আমাদের ওপর এই স্কিম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কঠোর আন্দোলন করতে হবে।’

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, ‘সর্বজনীন বলতে যা বুঝি, সেখানে হয়তো গরমিল আছে আমার বোঝার। একশ্রেণিকে বাদ দিয়ে কিছু অংশকে স্কিমের আওতায় আনা কীভাবে সর্বজনীন হয়। আমি সরকারকে অনুরোধ করব, পেশাজীবীদের মধ্যে সর্বজনীনতা বজায় রাখার নিশ্চয়তা করতে হবে। কালো প্রথা চালু করার আগে সরকারকে আরেকবার ভাবার অনুরোধ করছি।’

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমে বয়সসীমা ৬০ বছর দেওয়া, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বয়সসীমা ৬৫ বছর। তাই এখানে একটি ধোঁয়াশা রয়েছে। তা ছাড়া আমলারা নিজেরা এই স্কিমের আওতাভুক্ত না হয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংযুক্ত করে বড় বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আমাদের দাবি মানা না হলে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার দুই ঘণ্টার কর্মবিরতিতে যাব।’

বিজ্ঞাপন

জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রথমে চালু করেছিল যারা পেনশন সুবিধা পান না তাদের জন্য, কিন্তু পরে কোনো এক কুচক্রীমহল এটা করেছে। পরবর্তী কর্মসূচিতে যাতে যাওয়া না লাগে, তার আগেই আশা করি সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে। প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের বাদ দিতে হবে।’

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে ‘প্রত্যয় স্কিম’ নামের একটি প্যাকেজ চালু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই পরবর্তী সময়ে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিমের’ প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তার আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন