বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৯ হাজার মানুষ: জেলা প্রশাসন

May 26, 2024 | 8:49 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রামে উপকূলবর্তী ছয় উপজেলার প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বাসিন্দাকে নিজ বাড়িঘর থেকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে ধসের আশঙ্কার পরও নগরীতে পাহাড় থেকে লোকজন সরানো যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন রেডক্রিসেন্টের কর্মীদের সহায়তায় লোকজনকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে দিনভর মাইকিং চলছে।

বিজ্ঞাপন

ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি আসার পর রোববার (২৬ মে) দুপুর থেকে উপজেলা প্রশাসন আরও তৎপর হয়ে ওঠে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ প্রশাসনের স্থানীয় কর্মকর্তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উপকূলবর্তী এলাকায় যান। উপকূলে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরানোর কাজ শুরু করেন তারা।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছাইফুল্লাহ মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, কর্ণফুলী ও বাঁশখালী- এ ছয় উপজেলায় উপকূলবর্তী এলাকার নয় হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে সক্ষম হয়েছি। তারা এখন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরে এখনও কাউকে সেভাবে জোরপূর্বক আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। তবে যারা সাগর তীরবর্তী এলাকায় ও পাহাড়ে বসবাস করছেন, তাদের আমরা সরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, জেলায় মোট এক হাজার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করছেন ৯৩৫৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৯৯১ জন, নারী ৩৮৪৭ জন, শিশু ১৫০৭ এবং ১০ জন প্রতিবন্ধী। এ ছাড়া, গরু, মহিষ, ছাগল মিলিয়ে ৬৬৩টি গবাদি প্রাণীকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে গঠিত ২৯৫টি মেডিকেল টিমের মধ্যে ১৮২টি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার দুপুর থেকে চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও মেঘলা আকাশে গুমোট ভাব, সঙ্গে হালকা বাতাসও বইছে। চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় উত্তাল সাগর থেকে ঢেউ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় আছড়ে পড়ছে তীরে।

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী রোববার বিকেলে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসংলগ্ন জেলেপাড়াসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন। এর আগে, সকালে তিনি রেমাল মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে নিজ কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সোমবার সিটি করপোরেশন পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলে ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে।’

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যেও পাহাড়ের পাদদেশসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ছেড়ে লোকজন না যাওয়ায় সভায় ক্ষোভ জানান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় তিনি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সরিয়ে নিতে কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘পাহাড়ের পাদদেশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হবে যেকোনোভাবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিতে হবে। আমরা অনুরোধ করছি, ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকরা নিজ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন