বিজ্ঞাপন

টানা ৪ বছর বাড়ছে, তবু চামড়ার দাম এক যুগ আগের দুই-তৃতীয়াংশ

June 3, 2024 | 11:51 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২০১৩ সালের পর থেকে শুরু করে ২০২০ সাল— সাত বছর ধরে কমতে কমতে গরুর কাঁচা চামড়ার দাম নেমে গিয়েছিল আড়াই ভাগের এক ভাগে। একই সময়ে খাসির কাঁচা চামড়ার দাম নেমে গিয়েছিল প্রায় চার ভাগের এক ভাগে!

বিজ্ঞাপন

এরপর গত চার বছর ধরেই টানা বাড়ছে কাঁচা চামড়ার দাম। গত বছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা বেড়েছে এ বছরও। এই টানা চার বছরে বাড়তে থাকার পরও চামড়ার দাম যেখানে গিয়ে ঠেকল, সেটি এক যুগ আগের দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ তিন ভাগের দুই ভাগ মাত্র। আর খাসির চামড়ার দাম নেমে এসেছে তিন ভাগের এক ভাগে! এ হিসাব অবশ্য কাগজে-কলমের, বাস্তবে চামড়ার দাম আরও কমে গেছে বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের।

সোমবার (৩ জুন) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিবের উপস্থিতিতে কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা শেষে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এ বছরের জন্য কাঁচা চামড়ার ঘোষণা দেন।

নতুন ঘোষণা অনুযায়ী এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। পাশাপাশি সারা দেশে খাসির চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম হবে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বকরির চামড়ার দাম হবে প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

নতুন এ দাম অনুযায়ী ঢাকায় একেকটি গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে এক হাজার ২০০ টাকা। অন্যদিকে আর ঢাকার বাইরে একেকটি গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে এক হাজার টাকা। একটি চামড়ার সর্বনিম্ন এই দাম এবারই প্রথম নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ

এক যুগ আগে আড়াই গুণ ছিল চামড়ার দাম

গত এক যুগের কাঁচা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০১৩ সালে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সরকার কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়। ওই বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয় ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

এক যুগ পরে এসে দেখা যাচ্ছে, গরুর চামড়ার দাম নেমে এসেছে ঢাকায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। ঢাকায় বা ঢাকার বাইরে এবং সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন যে মাত্রা ধরেই হিসাব করা হোক না কেন, এই এক যুগের ব্যবধানে গরুর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ কমে গেছে। অর্থাৎ এ বছরের চামড়ার নির্ধারিত দাম এক যুগ আগের নির্ধারিত দামের মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ।

খাসির কাঁচা চামড়ার দশা আরও বেহাল। ২০১৩ সালে সারা দেশে খাসির চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এক যুগ পর এ বছর খাসির কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। বর্গফুটে ২৫ টাকা ধরলে এই দাম এক যুগ আগের দামের ৪৫ শতাংশ, ২০ টাকা ধরলে মাত্র ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ খাসির চামড়ার দাম তিন ভাগের দুই ভাগই কমে গেছে এই ১২ বছরে।

৭ বছরে গরুর চামড়ার দাম কমে ৪০ শতাংশে

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বছরই নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ২০১৩ সালের নির্ধারিত দামের কথা আগেই বলা হয়েছে। এরপর সাত বছর ধরে কমেছে চামড়ার দাম। ২০১৪ সালে গরুর কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় আগের বছরের চেয়ে ১৫ টাকা কম— ঢাকার মধ্যে প্রতি বর্গফুট ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। পরের বছর ২০১৫ সালে এক ধাক্কায় দাম কমানো হয় প্রতি বর্গফুটে আরও ১৫ টাকা। ওই বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা র্নিধারণ করা হয় চামড়ার দাম।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ ও ২০১৭ সালেও বলতে গেলে কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ২০১৫ সালের মতোই। ২০১৬ সালে প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয় গরুর কাঁচা চামড়ার দাম। পরের বছর ২০১৭ সালে দাম নির্ধারণ করা হয় ২০১৫ সালের মতো— ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

এর থেকে বর্গফুটে ৫ টাকা কমিয়ে পরের দুই বছর দাম একই রাখা হয়। অর্থাৎ ২০১৮ ও ২০১৯ সালে গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ঢাকায় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৩০ টাকা। ২০২০ সালে তা আরও ১০ টাকা কমে দাঁড়ায় ঢাকায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকায়। সে হিসাবে সাত বছরের ব্যবধানে গরুর কাঁচা চামড়ার নির্ধারিত দাম কমে প্রায় ৪০ শতাংশে নেমে আসে।

খাসির চামড়ার দাম কমেছে আরও বেশি

তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৩ সালে খাসির কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। পরের বছর এক ধাক্কায় তা নেমে আসে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। ২০১৫ সালে এর দাম নির্ধারণ করা হয় ২০ থেকে ২২ টাকা। ২০১৬ সালে ২০ টাকা এবং ২০১৭ সালে আবার ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয় এর দাম। তবে এ বছর ঢাকার বাইরের জন্য এর দাম নির্ধারণ করা হয় ১৫ থেকে ১৭ টাকা।

২০১৮ ও ২০১৯ সালে খাসির কাঁচা চামড়ার একই দাম রাখা হয়— ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, ঢাকার বাইরে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। পরের বছর ২০২০ সালে তা আরও এক দফায় কমানো হয়। ওই বছর সারা দেশেই খাসির কাঁচা চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৩ থেকে ১৫ টাকা। সে হিসাবে খাসির চামড়ার দাম সাত বছরের ব্যবধানে ২৩ শতাংশে নেমে আসে, যা ২০১৩ সালের দামের চার ভাগের এক ভাগেরও কম!

৪ বছর ধরে বাড়ছে চামড়ার দাম

সাত বছর ধরে কমার পর অবশেষে ২০২১ সালে এসে কিছুটা বাড়ে চামড়ার দাম। আগের বছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় গরুর কাঁচা চামড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরের বছর ২০২২ সালে দাম বাড়ে বর্গফুটে ৭ টাকা করে। ওই বছর প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ঢাকায় ৪৭ থেকে ৫২ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

পরের দুই বছরেও দাম বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ২০২৩ সালে ৩ টাকা বেড়ে প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ বছর আরও দাম বেড়ে তা হয়েছে ঢাকায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

এই চার বছরের হিসাব বলছে, গরুর কাঁচা চামড়ার দাম বেড়েছে প্রতি বর্গফুটে ২০ টাকা করে, যা ৫০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ এ বছরের নির্ধারিত দাম চার বছর আগের নির্ধারিত দামের দেড় গুণেরও বেশি।

গরুর মতো খাসির চামড়ার দামও কিছুটা বেড়েছে এই চার বছরে। আগের বছরের চেয়ে বর্গফুটে ২ টাকা বাড়িয়ে ২০২১ সালে সারা দেশের জন্য খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ১৫ থেকে ১৭ টাকা। ২০২২ ও ২০২৩ সালে খাসির চামড়ার দাম একই রাখা হয়— প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা। এ বছর তা বাড়িয়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা করা হয়েছে। সে হিসাবে চার বছরে খাসির কাঁচা চামড়ার দামও ৩৩ শতাংশ থেকে ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন দাম বাড়ানোর বাস্তবতা নেই

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বছরই চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয় ঈদুল আজহার আগে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, কেবল ঈদুল আজহাতে যে পরিমাণ পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয় তার পরিমাণ সারাবছর সংগ্রহ করা কাঁচা চামড়ার অর্ধেকেরও বেশি। আর সে কারণেই এই সময়ে যেন চামড়া সঠিকভাবে ও সঠিক দামে কেনাবেচা হয়, সেদিকেই নজর দিতে চায় মন্ত্রণালয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা কমে যাওয়া ও যুদ্ধ পরিস্থিতিসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে কাঁচা চামড়ার দাম বাড়ানোর অবস্থা ছিল না। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় দাম বাড়ানোর কথা বলা হয়। সে প্রস্তাব ব্যবসায়ীরা মেনে নিয়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভার পর বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, চামড়া কিনবেন ট্যানারিওয়ালারা। তারা একটি ন্যূনতম মূল্য নিশ্চিত করবেন, সেটাই আমাদের পরামর্শ। ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২০ বর্গফুট হয় বলে হিসাব করে পাওয়া গেছে। সেই হিসাবে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চামড়া সংগ্রহ যেন সঠিকভাবে হয়, নির্ধারিত মূল্যে যেন সংগ্রহ করতে পারে, সেটাই আমরা চাই। গত কয়েক বছর ধরে ভালো মূল্য পাচ্ছি না। আজকে একটা টেনটেটিভ (আনুমানিক) মূল্য ঘোষণা করা হলো। এটা ইন্ডিকেটিভ প্রাইস (নির্দেশনামূলক দাম)। আশা করি এবার ভালো দামে চামড়া বিক্রি হবে, ব্যবসায়ীরাও ভালো দামে চামড়া কিনতে পারবেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপট যদি বিবেচনায় নিই, বহির্বিশ্বে কিন্তু চামড়ার দাম বাড়েনি। সবকিছুই তো ডিমান্ড-সাপ্লাই চেইনের ওপর নির্ভরশীল। এখন যেমন ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে, গাজায় যুদ্ধ চলছে, অন্যান্য দেশে অস্থিরতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও মূল্যস্ফীতি আছে। ফলে পাশ্চাত্যের দেশগুলো, যারা আমাদের চামড়া খাতের মূল ক্রেতা, তাদের ওখানে চাহিদা কমে গেছে। আবার চীনে আর্টিফিশিয়াল লেদার, সিনথেটিক লেদারের ব্যবহার বেড়েছে। কেডসে ফেব্রিকসের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে চামড়ার চাহিদাটাই কমে গেছে।’

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে চামড়ার দাম বাড়ানোর অবস্থা ছিল না জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা চামড়ার দাম গত বছরের মতো রাখার জন্যই মন্ত্রণায়লকে বলেছিলাম। মন্ত্রণালয় আমাদের বলেছে মূল্যস্ফীতির কথা, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা, টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ার কথা। সে কারণে চামড়ার দাম বাড়ানোর কথা বলেছে। আমরাও মেনে নিয়েছি। আশা করি চামড়া সংগ্রহ ভালো হবে।’

দেশে কাঁচা চামড়ার যে বাৎসরিক বাজার, এর অর্ধেকেরও বেশি জোগান আসে ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদে। এ সময় কোরবানি হওয়া পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তাদের কাছ থেকে পাইকাররা কিনে চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে বিক্রি করেন ট্যানারিতে। তবে যথাসময়ে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ না করার কারণে অনেক চামড়া নষ্ট হয় বলে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে থাকেন। নির্ধারিত মূল্যে ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাঁচা চামড়া না কেনার পেছনে সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করাকেও তারা কারণ হিসেবে দেখিয়ে থাকেন।

কাঁচা চামড়া কেনাবেচায় দামের চেয়ে তাই সংরক্ষণের দিকে বেশি মনোযোগী হতেদ আহ্বান জানাচ্ছেন শাহীন আহমেদ। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, কাঁচা চামড়ায় সঠিক সময়ে লবণ না দিতে পারলে কিন্তু চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। বাজারে গিয়ে কেউ তো পচা মাছ কিনবে না! ব্যবসায়ীরাও কেন নষ্ট হয়ে যাওয়া চামড়া কিনবে? তাই কোরবানির পর যত দ্রুতসম্ভব লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। তাহলে ট্যানারি ব্যবসায়ীরাও সঠিক দামে চামড়া কিনতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না।

চামড়া সংরক্ষণে সবাইকে সচেতন করতে সরকারের পদক্ষেপ কামনা করে শাহীন বলেন, এ বছর লবণের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে শুনেছি। তবু বৃষ্টি হলেই লবণের দাম বাড়ে। সরকার যদি মফস্বলেও লবণ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখত, তাহলে লবণ নিয়ে কোনো সংকট থাকত না। পাশাপাশি দ্রুত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণেও সবাইকে সচেতন করতে হবে। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে, এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

এদিকে সরকার বছর বছর চামড়ার দাম নির্ধারণ করলেও কোরবানিদাতারা সঠিক দাম পান না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর নজরদারি করবে। স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থাও বিষয়টি নজরদারি করবে।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন