বিজ্ঞাপন

৫৩ বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে হাজার গুণ

June 6, 2024 | 12:20 pm

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ঘোষণা করা হয় ১৯৭২ সালের ৩০ জুন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ঘোষিত দেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার। আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। এটি হবে দেশের ৫৪তম বাজেট। এই বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত ৫৩ বছরের ব্যবধানে দেশের বাজেটের আকার বাড়ছে ১০১৪ গুণ।

বিজ্ঞাপন

বর্তমান সরকারের ১৬ বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে ৭ গুণ। ২০০৯ সালে দলটি ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরের ১১ জুন  অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯-১০ অর্থবছরের ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এই বাজেটটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এটি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট। আজ শেখ হাসিনা সরকারের টানা ১৬তম বাজেট উপস্থাপন করবেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি হতে যাচ্ছে প্রথম বাজেট। এই বাজেটের সম্ভাব্য আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবারের বাজেটে মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সুখী সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’।

বাজেট বৃদ্ধির এই হারকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১৬ বছরে গড় প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে রয়েছে। তার মানে হলো, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বাড়ছে। অর্থনীতির আকার বাড়লে বাজেটের আকারও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়লেও বাস্তবায়নের হার ক্রমান্বয়ে কমছে। অর্থবছরের শুরুতে যে বাজেট ঘোষণা করা হয় বছর শেষে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে বাজেটের আকার বৃদ্ধির বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাই বাজেটের আকার বাড়ার পাশাপাশি বাজেটের বাস্তবায়নের দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলে তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদরা।

এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, প্রতি বছর বাজেটের আকার বাড়লেও বাস্তবায়নের হার কমছে। তাই বাজেটের আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের হার বাড়াতে হবে। বাজেটের গুণগত মান এবং বাস্তবায়নের হার না বাড়লে এসব বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বাজেট বলা যায়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বাজেটের আকার

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জুন (১৯৭২-৭৩ অর্থবছর) ৭৮৬ কোটি টাকার প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। এরপর ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের জন্য ১৯৮১ সালের ৬ জুন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানদেশের দশম বাজেট উপস্থাপন করেন, যার আকার ছিল ৪ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। ১৯৯১ সালের ১২ জুন ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ২০তম বাজেটের আকার ছিল ১৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। এটিও উপস্থাপন করেন এম সাইফুর রহমান। পরবর্তীতে ২০০০ সালের ৮ জুন ২০০০-০১ অর্থবছরে ৩০তম বাজেট ছিল ৩৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। এটি উপস্থাপন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ২০১০ সালের ১০ জুন, ২০১০-১১ অর্থবছরের ৪০তম বাজেট ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের ৫০তম বাজেট উপস্থাপন করেন। ওই বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কেটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আজ সকালে শেখ হাসিনা সরকারের টানা ১৬তম বাজেট উপস্থাপন করবেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এই বাজেটের সম্ভাব্য আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

সারাবাংলা/জিএস/আইই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন