বিজ্ঞাপন

রামপালে জোয়ারে ডুবছে ৪টি গ্রাম, বাঁধ মেরামতে বরাদ্দ অপ্রতুল

June 7, 2024 | 9:25 am

মনিরুল ইসলাম দুলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বাগেরহাট: বাগেরহাটের রামপালে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙে ৪টি গ্রামের ৮ শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি-ঘর। গত ১২ দিন ধরে প্রতিদিন দু’বার জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে ৪টি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায় এসব চিত্র।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কর্মকর্তারা রামপালে ক্ষতিগ্রস্ত রোমজাইপুর এলাকা পরিদর্শন করলেও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম আড়ুয়াডাঙ্গা, সাতপুকুরিয়া, জিগিরমোল্লা ও সিংগড়বুনিয়া পরিদর্শন করেননি কোনো জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্তারা। শুধুমাত্র ১৬১ জন দুর্গতকে ১০ কেজি চাল ও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্যে রোমজাইপুরের বেরিবাঁধের জন্য মাত্র ২ লাখ টাকা ও আড়ুয়াডাঙ্গায় বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্যে মাত্র এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা খুবই অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।

জীবন ও জীবিকার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামবাসী নিজেরাই মেরামতের কাজে ইতিমধ্যে শুরু করেছেন।

উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের সিংগড়বুনিয়া, রোমজাইপুর, সাতপুকুরিয়া, আড়ুয়াডাঙ্গা, জিগিরমোল্লা গ্রাম চারিদিক দিয়ে মোংলা ঘঁষিয়াখালী ও মাদারতলা নদী দিয়ে ঘেরা। এই বদ্বীপের মধ্যেই এলাকাবাসীর বসবাস। প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ এলাকা ক্ষতবিক্ষত হয়ে আসছে। সিডর, আইলা ও আমফানের ঝড়ে একইভাবে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে গ্রামকে গ্রাম প্লাবিত করেছে। গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে আবারো লন্ডভন্ড হয়েছে এলাকাগুলো।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে শুধুমাত্র রোমজাইপুর এলাকায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু গত ১২ দিনের মধ্যে কেউই খোঁজ নেননি অন্য তিনটি গ্রামের দুর্গত মানুষের। এ কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবশেষে নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে সোমবার (৩ জুন) থেকে ভাটার সময় গ্রামবাসী সরকারের দেওয়া সহায়তা ও স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছেন।

বাঁধ মেরামতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফকির গিয়াস উদ্দিন, মো. নজরুল ইসলাম। তারা বলেন, ‘আমাদের এ এলাকা অবহেলিত। যে কারণে আমাদের খোঁজ কেউ রাখেন না। আমাদের এলাকায় হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের তলিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলের জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা-পাকা রাস্তা।’

বিজ্ঞাপন

সাতপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম ও মহিউদ্দিন ইসলাম বলেন, ‘সরকার যদি স্থায়ীভাবে আমাদের বাঁধের ব্যবস্থা না করে তা হলে আমাদের দ্বীপের মধ্যে ডুবে মরতে হবে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলা সদস্য মোল্লা আ. সবুর রানা বলেন, ‘প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় উপজেলার মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় গ্রামরক্ষা বাঁধ না দিলে মানুষের বিপদ বাড়বে।’ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত গ্রামরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের এই নেতা।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন