বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমিসহ ঘর পাচ্ছে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬ পরিবার

June 9, 2024 | 9:43 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরও সাড়ে ১৮ হাজার ৫৬৬টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘরগুলো দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ফরিদপুরসহ কয়েকটি জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ‘ঈদ উপহার’ হিসেবে হাসি ফুটবে সুবিধাভোগী এ সব পরিবারের মাঝে।

বিজ্ঞাপন

আগামী মঙ্গলবার (১১ জুন) মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন। একই সঙ্গে কক্সাবাজার, ভোলা ও লালমনিরহাট জেলার ভূমিহীনদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করবেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নেন দেশে একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। সেই ধারাবাহিকতায় এবার পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে সাড়ে ১৮ হাজার ঘর হস্তান্তর করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন-গৃহহীন হাজার হাজার পরিবারকে ঘর করে দিয়েছেন। তার এই উদ্যোগ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন এতে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৫ লাখ পরিবারকে ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধায় ৬৩০, কুড়িগ্রামে ৩২১, রংপুরে ১০৪৯, দিনাজপুরে ৯০৯, লালমনিরহাটে ১২৮২টি, রাজশাহী বিভাগের নওগাঁয় ৫৫, সিরাজগঞ্জে ১৮৪, জয়পুরহাটে ২০, রাজশাহীতে ১৩০, বগুড়ায় ১৮৬, নাটোর ৮৭২টি, খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহে ৬০৩, চুয়াডাঙ্গায় ১০, সাতক্ষীরায় ২৫০, যশোরে ৩৬২, মেহেরপুরে ২২৯, খুলনায় ৮৪, নড়াইলে ২১৩, বাগেরহাটে ৮১২টি, ঢাকা বিভাগের ঢাকায় ৫১৯, গোপালগঞ্জে ৭৩৬, মাদারীপুরে ৩২০, শরীয়তপুরে ২৪৩, কিশোরগঞ্জে ৩৩০, গাজীপুরে ২৬, টাঙ্গাইলে ১০৩, মুন্সীগঞ্জে ৯, ফরিদপুরে ৬৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনায় ১৭৭, ময়মনসিংহে ৩২৯, জামালপুরে ৫, সিলেট বিভাগের সিলেটে ১৮৩, হবিগঞ্জে ৮১, সুনামগঞ্জে ৬৩, চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সাবাজারে ২৬১, চট্টগ্রামে ২৫০, রাঙামাটিতে ৬৮০, বান্দরবানে ৩৮২, খাগড়াছড়িতে ৮৬০, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫০, লক্ষ্মীপুরে ১০৬, নোয়াখালীতে ৯০০, কুমিল্লায় ১৮৬, ফেনীতে ২৪০, বরিশাল বিভাগের ভোলায় ২২১৭, ঝালকাঠিতে ৮৫, বরগুনায় ৩৫৩, পটুয়াখালীতে ৩০, বরিশালে ৪৬২টি ঘর বিতরণ করা হবে।

সাতক্ষীরা: সারাবাংলার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সাতক্ষীরায় পঞ্চম পর্যায়ের ২৫০ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পেতে যাচ্ছে। আগামী ১১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এই ঘর হস্তান্তর করবেন।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, পঞ্চম পর্যায়ে জেলার আশাশুনি ও সদর উপজেলায় ২৫০টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার নির্বাচন করা হয়েছে। যার মধ্যে আশাশুনি উপজেলায় ১৪০ টি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একক গৃহ এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বালিথা এল্লারচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জরাজীর্ণ ব্যারাক হাউজ প্রতিস্থাপনপূর্বক নতুনভাবে নির্মিত ১১০ টি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একক গৃহ প্রদান করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায় পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় ৩ হাজার ২২৭ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএমএ মমিন জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও ভুমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলায় ১০০৬টি গৃহ নির্মাণের মধ্য দিয়ে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও পুরাতন জরাজীর্ণ আরো ৬১৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পাকা গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি এলাকায় নির্মিত প্রতিটি গৃহে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট রয়েছে। প্রতিটি ঘরে নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। প্রতিটি গৃহে পৃথক মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

উল্লেখ্য, লালমনিরহাট জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করার লক্ষ্যে মোট ৫ হাজার ৮৫৭ টি ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার চিহ্নিত করা হয়। তাদেরকে দুইশতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর দিয়ে লালমনিরহাট জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গাউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ-জোহরা জানান, আগামী বৃহস্পতিবার (১১জুন) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ম পর্যায়ে নির্ধারিত গৃহ উপকারভোগী পরিবারের কাছে জমিসহ হস্তান্তর কাজের উদ্বোধন করবেন।

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে ৬টি এবং আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামে ৪ জন উপকারভোগীদের জমি ও গৃহের কবুলিয়ত এবং নামজারীর কপি তুলে দেওয়া হবে।

এরা হলো আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামের স্বামী মফিজুর মল্লিক ও তার স্ত্রী কবিতা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী জাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী লিপি খাতুন, ওই গ্রামের কাওছার আলী ও তার স্ত্রী তামান্না খাতুন মেঘনা, স্বামী কামরুজ্জামান কল্লোল ও তার স্ত্রী সুরভী খাতুন।
তিতুদহ ইউনিয়নের হুলিয়ামারী গ্রামের মোফাজ্জেল মণ্ডলের মেয়ে সালেহা বেগম, তিতুদহ গ্রামের স্বামী আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী পারভীনা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী ইদবার আলী ও তার স্ত্রী নারগিস বেগম, বাদল উদ্দীনের মেয়ে ছারু খাতুন, স্বামী আনোয়ার শেখ ও তার স্ত্রী রশিনা বেগম এবং স্বামী রুহজেল হোসেন ও তার স্ত্রী আরজিনা খাতুন।
উল্লেখ্য, ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২০১টি পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে জমি এবং গৃহ প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সমাজের অনগ্রসর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে ২ শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর প্রদান করা হচ্ছে। জমিসহ ঘরের মালিকানা পেয়ে তারা অর্থনৈতিক উন্নন প্রক্রিয়া নিয়োজিত করেছেন। ফলে এসব পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নততর হচ্ছে। উন্নয়নের মূলধারায় নারীদের সম্পৃক্ত করা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে আশ্রয়ণের বাড়ি ও জমির মালিকানা স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে।

পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের উৎপাদনমুখী নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সঞ্চয়ী হতেও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘরে বিনামূল্য বিদ্যুৎ সংযোগ ও সুপেয় পানির সুব্যবস্থার মাধ্যমে উপকারভাগীদের জন্য আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন