বিজ্ঞাপন

‘হাওর ও জলাভূমিগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনায় পাল্টে যাবে দেশ’

June 9, 2024 | 10:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: হাওর ও জলাভূমিগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনায় পাল্টে যাবে বাংলাদেশের চেহার। অর্থনৈতিকভাবে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে, বিকাশ হবে পর্যটন শিল্পের। হাওর ও জলাভূমির এই অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিহার্য।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ জুন) ‘১০০ বছরে হাওর ও জলাভূমি’ শীর্ষক সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতর ও ‘আমরা নারী’ এর যৌথ উদ্যোগে অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করে। সমুদ্র অর্থনীতি ও পরিবেশ বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন ‘মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (এমজেএন)’ এ অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিল।

বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। ‘আমরা নারী’ এর ফাউন্ডার এম এম জাহিদুর রহমান বিপ্লবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ‘হাওর সংরক্ষণ ও উন্নয়নে মিডিয়ার ভূমিকা’ নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি এহসানুল হক জসীম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মো. আখতারুজ্জামান।

মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘দেশের হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণে এই অধিদফতর আন্তরিকভাবে কাজ করছে। দেশের সব জলাভূমি সংরক্ষণে এবং এগুলোর উন্নয়নে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ’৮০-র দশকে বাংলাদেশে বন ছিল ৭ শতাংশ, থাকতে হবে ২৫ শতাংশ। বর্তমানে ১৭ শতাংশ। দেশের ৮০ শতাংশ এলাকা বছরের ৮ মাস ধরে সবুজ থাকে। আমরা ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করছি। হাওরে ৭ মাস পানি থাকে। তখন মানুষের কাজ থাকে না। এই সময় তারা হাওর থেকে মাছ ধরে থাকে।’

হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘দেশের ৭১ শতাংশ জিডিপি আসতে পারে মিঠা পানির মাছ রফতানি করে। ধানের চেয়ে মাছ চাষে তিনগুণ বেশি লাভ। মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিলে ১ কোটি মাছ পালনে ১০ কোটি টাকা ব্যয় করলে তা ২ হাজার কোটি টাকা বিক্রি করা সম্ভব।’

সিলেটের রাতারগুল জলাবনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘রাতারগুলে বিপুল সংখ্যক গাছ রয়েছে। এসব গাছের গোঁড়ায় মাছ আশ্রয় পাচ্ছে। গাছে পাখি আশ্রয় নেয়। রাতারগুলের এই মডেল হাওর ও দেশের অন্যান্য জলাভূমির ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে। তাতে পরিবেশেরও উন্নতি হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি মনে করেন, বর্তমান সময়ে হাওর ও জলাভূমিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে পলি। শুধু পলি নয়, পাথর ও বালিকণাও রয়েছে। প্রতি বছর কমপক্ষে এক বিলিয়ন মেট্রিক টন পলি পড়ে। এতে করে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রসঙ্গ টেনে মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি বাড়লে যশোর, নোয়াখালী ও বরিশাল অঞ্চল ডুবে যাবে। হাওর ও জলাভূমি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।’

এহসানুল হক জসীম বলেন, ‘বাংলাদেশের সাতটি জেলা এবং ভারতের কিছু এলাকা ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও হাওর নেই। হাওরের খাদ্য উৎপাদন ১৭ শতাংশ, ২০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয়। দেশের গ্যাসের ৯০ শতাংশ হাওর অঞ্চল থেকে উৎপাদিত হয়ে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের অল ওয়েদার সড়কের কারণে হাওরের পানি যেতে পারে না। এতে ক্ষতি হচ্ছে। পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০২২ সালে ভয়াবহ হওয়ার ক্ষেত্রে এটা অন্যতম কারণ। সেই বন্যায় ১০০ জনের মতো মানুষ মারা গেছে। অথচ এই তথ্য গণমাধ্যমে আসেনি। হাওরের সংবাদগুলো যথাযথভাবে গণমাধ্যমে আনতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) এর পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম তানভীর হাসান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমদ, সেভ আওয়ার সি- এর মহাসচিব গাজী মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার সিটি এডিটর নাসিমা আক্তার সোমা, মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি রাশেদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক কেফায়েত শাকিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমদ, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের পরিচালক গাজী মিজানুর রহমানসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন