বিজ্ঞাপন

এলডিসি উত্তরণে ঝুঁকি থাকলেও মোকাবিলা সম্ভব: অর্থমন্ত্রী

June 9, 2024 | 11:26 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে কিছু চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকিও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মধ্যম আয়ের ফাঁদ। তবে ঝুঁকি থাকলেও দূরদর্শী উদ্যোক্তা আর তরুণ জনগোষ্ঠীর কাঁধে ভর দিয়ে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর লক্ষ্যে মসৃণ উত্তরণ সংক্রান্ত কৌশলটিতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত রূপান্তরের উপর গুরুত্ব আরোপ করা উচিত বলে মনে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নীতিনির্ধারকরা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ জুন) রাজধানীতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভাগ (ইউএন ডেসা) আয়োজিত টেকসই উত্তরণের কৌশল শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা। সম্প্রতি ইউ এন ডেসার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার উক্ত টেকসই উত্তরণের কৌশলের খসড়া প্রস্তুতকরণের কাজ শুরু করেছে। এই খসড়া প্রস্তুতকরণের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় মতামত বিনিময়ের উদ্দেশ্যে কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন।

ইআরডি সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইস এবং ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও এসএসজিপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম জাহাঙ্গীর।

বিজ্ঞাপন

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘আমরা জানি স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবে। তবে সঠিক নীতি, পদ্ধতি ও কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করতে পারবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে এই দেশের কর্মঠ জনগণ, গতিশীল ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী।’ এ ছাড়া উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে ঝুঁকির কথা জানিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ হলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্ববাজারের অংশীদারদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। একইসঙ্গে এলডিসির সুযোগ বন্ধে হয়ে যাওয়ার ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মধ্যম আয়ের ফাঁদ।’

বিজ্ঞাপন

মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর লক্ষ্যে স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক নীতি কৌশলটিতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত রূপান্তরের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক কৌশলপত্রটি দেশের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।’

ইআরডি সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহকে সম্ভাবনায় পরিণত করার আহ্বান জানান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘নীতি কৌশলটিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করা এবং রফতানি বহুমুখীকরণের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ থাকা প্রয়োজন।’

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’ তিনি এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা, জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত রূপান্তর ও পরিবেশগত মান সুনিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় টেকসই উত্তরণের কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসটিএস সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক ড. এম এ রাজ্জাক। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মপরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এসটিএস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পরামর্শক মি. কুয়োং মিন গুয়েন।

এ সময় এলডিসি উত্তরণের পথে অর্থনীতির পাশাপাশি পরিবেশ ও সামাজিক সূচকগুলোর উন্নয়নেও সমান নজর রাখার তাগিদ দেন বক্তারা। সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নীতিনির্ধারকরা অভিমত দেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রেক্ষাপটে প্রণীতব্য নীতি ও কৌশল দেশের আসন্ন নবম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

পাশাপাশি তারা বলেছেন, মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর লক্ষ্যে মসৃণ উত্তরণ সংক্রান্ত কৌশলটিতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত রূপান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন