বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের জনপ্রত্যাশাকে মর্যাদা দিন— ভারতের নতুন সরকারকে ফখরুল

June 10, 2024 | 6:34 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে বাংলাদেশের জনপ্রত্যাশাকে ভারতের নতুন সরকার মর্যাদা দেবে- এমনটিই আশা করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১০ জুন) সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘আধুনিক কৃষি, অভিন্ন নদীর পানি আগ্রাসন এবং জলবায়ু ভারসাম্যহীনতা রোধে শহীদ জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে কৃষকদল। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহাদত হোসেন বিপ্লব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের নতুন সরকার নিয়ে সাংবাদিকরা আমাদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। এই সস্পর্কে আমার বলার একটাই- ভারত নিঃসন্দেহে আমাদের প্রভাবশালী প্রতিবেশী। আমরা ভারতের নতুন সরকারের কাছে এটাই আশা করব যে, তার দেশে যেভাবে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, তাদের নির্বাচন কমিশন যেভাবে কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে, আমরাও এখানে গণতন্ত্রকে সেভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা, ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনপ্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে। সেভাবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলো। সে ছাত্রলীগের নেতা ছিল, পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগও করেছে, এমপিও হয়েছে। এখন সে আর রাজনীতিতে নাই। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি রাজনীতি করছ না কেন? সে বলল, কোন রাজনীতি করব? আমি বললাম, আওয়ামী লীগ করবা। সে বলল, আওয়ামী লীগ কি আওয়ামী লীগ আছে? এটা তো এখন আজিজ আর বেনজীরের আওয়ামী লীগ!’

‘এই যে, দেখুন একজন আওয়ামী লীগের নেতা তার উপলব্ধিটা এই হয়েছে যে, সে রাজনীতি থেকে চলে গেছে। এটাই বাস্তবতা’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাস আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আজকের আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই, যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল। সেই আওয়ামী লীগ নেই, যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম-লড়াই করেছিল। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই তাদের কেমিস্ট্রেতে পরিবর্তন শুরু হয়। সেই পরিবর্তনটা হচ্ছে সর্বগ্রাসী হয়ে যাওয়া। শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলেছিলেন, সবাই পায় সোনার খনি, আমি পাই চোরের খনি।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরা (সরকার) বাংলাদেশকে একটা নতজানু ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। অনেকে বলবে, এত উন্নয়ন করছে, মেগা প্রোজেক্ট করছে, এত ফ্লাইওভার সব কিছু। কিন্তু সেইসঙ্গে এই ফ্লাইওভার, মেগা প্রোজেক্ট থেকে তারা কত মেগাপাচার করেছে, চুরি করেছে। একইসঙ্গে আমার সাধারণ মানুষের, গ্রামের মানুষের কী উপকারটা হয়েছে। এত উন্নয়ন করেছে যে, ঢাকা শহরে আর লোক থাকতে পারছে না। তারা চলে যাচ্ছে গ্রামে। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য! গ্রামে ফিরে গিয়েও তার কর্মসংস্থান নাই, কাজ পাচ্ছে না। কোথায় কাজ পাবে? দেশে তো কোনো কাজ নাই।’

তিনি বলেন, ‘আজ এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই শেষ পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে। বাজেট দিয়েছে, সম্পূর্ণ বাজেটটা হচ্ছে তাদের লুটপাটের বাজেট। বিচার নাই, কোথাও কোনো ব্যবসা করতে গেলে তার কোনো সুযোগ পাবেন না। টাকা দিতে হবে, টাকা ছাড়া, ঘুষ ছাড়া কেউ কথা বলে না। শিক্ষাব্যবস্থা দেখুন, কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, ছাত্ররা আবার মাঠে নেমেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে, গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার, ভোটের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। আজ তারা পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, যে ফ্যাসিবাদে আমরা নির্যাতিত হচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের লক্ষ্য- যেমন করে হোক এই দানবকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সেই পথ একটাই- জনগণকে সংগঠিত করে আন্দোলন আরও তীব্র করা এবং সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করা।’

বিজ্ঞাপন

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও দফতর সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহসভাপতি নাসির হায়দার, মামুনুর রশীদ খান, এসএম ফয়সাল, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, আনম খলিলুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জামসেদ আলী রিপন প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন