বিজ্ঞাপন

নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপে সুপার এইটের কাছাকাছি বাংলাদেশ

June 14, 2024 | 12:17 am

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

সাকিব আল হাসানের ফিফটি ও মাহমুদউল্লাহ, তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে ১৫৯ চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল বাংলাদেশ। তবে নেদারল্যান্ডসও জবাব দিচ্ছিল চোখে চোখ রেখে। একটা সময় বাংলাদেশের জয় নিয়ে শঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। ১৫তম ওভারে রিশাদ হোসেন ঘুড়িয়ে দিলেন ম্যাচের মোর।

বিজ্ঞাপন

এক বলের ব্যবধানে দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের দিকে ম্যাচ হেলে দিয়েছেন রিশাদ। পরের ওভারে আরও একটা উইকেট নিয়ে নেদারল্যান্ডসকে খাদের কিনারায় ফেলেন বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনার। শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কোনো জবাবই দিতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আজ ২৫ রানের দারুণ একটা জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

এই জয়ে বিশ্বকাপের সুপার এইট অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেল তিন ম্যাচে দুই জয় পাওয়া বাংলাদেশের। নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালের সঙ্গে জিতলে সরাসরি সুপার এইটে উঠে যাবে বাংলাদেশ। খর্বশক্তির নেপালের বিপক্ষে হারলেও সুযোগ থাকবে নাজমুল হোসেন শান্তদের। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নেপালের বিপক্ষে হারতে হবে বিশাল ব্যবধানে অপর দিকে শ্রীলংকাকে বিশাল ব্যবধানে হারাতে হবে নেদারল্যান্ডসের। যদিও বাস্তবে দুটোই অনেক ‘কঠিন’।

চলতি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ম্যাচগুলো হচ্ছিল ছোট স্কোরের। ১২০-৩০ রান তোলাই দায় হয়ে যাচ্ছিল দলগুলোর। কিন্তু বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংসটনে। যেখানকার পিচ অতোটা বোলিংবান্ধব নয়।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৪ জুন) কিংসটনে সেটা দেখাও গেল। সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে স্বাচ্ছন্দেই ১৫৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ব্যাটে বল আসছিল ভালো। পরে নেদারল্যান্ডসের টপ অর্ডারও বেশ দারুণভাবেই এগুচ্ছিল।

পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারালেও ১৪ ওভার পর্যন্ত দারুণভাবে ম্যাচে ছিলেন ডাচরা। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বিক্রমজিৎ সিং ও এঙ্গেলব্রেখট দারুণ ব্যাটিং করেছেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৩ বলে ৩৭ রান তোলেন দুজন। ১৬ বলে ৩ ছয়ে ২৬ রান করা বিক্রমজিৎ সিংকে মাহমুদউল্লাহ এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেললে পরে চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডের সঙ্গে জুটি গড়েন এঙ্গেলব্রেখট। চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৪২ রান তোলেন দুজন। ম্যাচটা আস্তে আস্তে হেলে পড়ছিল নেদারল্যান্ডসের দিকে।

সেখানেই রিশাদ হোসেনের লেগস্পিন ভেলকি। নিজের প্রথম দুই ওভারে ১৯ রান খরচ করা রিশাদ ১৫তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে নেদারল্যান্ডসের কোমড় ভেঙে দিয়েছেন। ১৫তম ওভারে মাত্র ৭ রান খরচ করে এঙ্গেলব্রেখট ও ডি লিডকে ফেরান রিশাদ। নিজের শেষ ওভারে নিয়েছেন আরও একটা উইকেট।

বিজ্ঞাপন

রিশাদ ধাক্কায় যতটা পিছিয়ে পড়েছিল নেদারল্যান্ডস সেখান থেকে মোস্তাফিজুর রহমান আর উঠতেই দেননি। ১৭তম ওভারে মাত্র ১ রান খরচ করে ১ উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ৩ রান। বাংলাদেশের জয়টা সেখানেই মূলত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল!

শেষ ওভারে ৩৩ রান লাগত নেদারল্যান্ডসের। তাসকিন আহমেদের সেই ওভার থেকে ৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি ডাচরা, সঙ্গে একটা উইকেটও হারিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানে থেমেছে নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ হোসেন ৩৩ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়েছেন। ৩০ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। মোস্তাফিজ ১ উইকেট পেলেও ৪ ওভার খরচ করেছেন মাত্র ১২ রান।

দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব

এর আগে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং স্কোরে বড় অবদান সাকিব, তানজিদ তামিম ও মাহমুদউল্লাহর। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ওভারে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১ রান করা শান্ত। তিনে নামা লিটন দাসও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেনি। এনগেলব্রেচের দুর্দান্ত এক ক্যাচে তাকেও ১ রানে ফিরতে হয়।

এরপর তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিমকে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন সাকিব আল হাসান। বছর খানেক ধরেই রানের জন্য সংগ্রাম করা সাকিবকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছির সর্বত্র। সাকিব তার জবাবটা আজ দিয়েছেন উপযুক্ত সময়ে। দলের খুব প্রয়োজনের সময় দারুণ একটা অর্ধশতকের ইনিংস খেলেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

বিজ্ঞাপন

দলীয় ৭৩ রানের মাথায় ৫ চার, এক ছয়ে ২৬ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন তামিম। পাঁচে নেমে ফর্মে থাকা তাওহিদ হৃদয় আজ রান পাননি। ১৫ বলে ফিরেছেন ৯ রান করে।

হৃদয় ফিরলে সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটি দলকে বড় স্কোরের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। ২ চার, ২ ছয়ে রিয়াদ করেন ২১ বলে ২৫ রান। রিয়াদ ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন সাকিব। ৯ চারে সাজানো ইনিংসে করেছেন ৪৬ বলে ৬৪ রান। ৭ বলে ১৪ রান করে শেষ দিকে দারুণ অবদান রেখেছেন জাকর আলীও।

শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ডাচদের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন আরিয়ান ও মেকেরেন।

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন