বিজ্ঞাপন

‘সেন্টমার্টিন নিয়ে নিশ্চুপ ভূমিকা নতজানু পররাষ্ট্রনীতির প্রকাশ’

June 15, 2024 | 8:30 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সেন্টমার্টিন দ্বীপে সাম্প্রতিক ঘটনায় সরকারের নিশ্চুপ ভূমিকা তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এই আলোচনা সভা আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পত্রিকায় খবরে এসেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে সংকট, সেখানে আতঙ্ক। কী দুঃখজনক! মানে এটিতে কী বলব! কত ব্যর্থতা এই সরকারের যে আমার একটি দ্বীপ সেই দ্বীপে আমরা যেতে পারছি না, সেই দ্বীপে গেলেই অন্যদেশ থেকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে এবং মেরেও ফেলা হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত সরকার কোনো রকমের কোনো বক্তব্য পর্যন্ত দেয়নি। হোম মিনিস্টার বললেন, এখনও এমন কোনো অবস্থা হয়নি যে, এটিতে আমরা স্টেটম্যান্ট দেব বা কিছু বলব।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই যে নতজানু নীতি, মিয়ারমারের মতো দেশকেও কিছু বলা যাবে না। এটি কতটা দাসসুলভ মনোভাব হতে পারে। একটি কথা মনে পড়ে যে, দাস্য সুখে হাস্য মুখে। সুখ তো হাস্য সুখ, মুক্ত হাসি। সীমান্তে লোক মারছে একটি কথা বলে না, পানি দেয় না একটি কথা বলে না। আর সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে কয়েক লাখ মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ এ নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকরা এক প্লাটফর্মে আসুন। আমি সবার কথা বলছি না, আমি গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাস করেন, তারা যদি একই জায়গায় আসেন তাহলে কিন্তু আমার মনে হয় আপনারা অনেক বেশি শক্তিশালী হবেন। এখানে আমরা বিভক্তি দেখতে পাই। এই বিভক্তিটাকে এড়িয়ে দেখেন যারা সিনিয়র আছেন তারা চেষ্টা করেন, তরুণরা যারা আছেন তারা চেষ্টা করেন যে, এবার অন্তুত চেষ্টা করেন যেন আমরা এক হই।’

তিনি বলেন, ‘এই লড়াইটা কিন্তু সহজ লড়াই নয়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই গণতান্ত্রিক সংগ্রাম খুবই কষ্টকর লড়াই। এই লড়াইটা একদিনে উল্টে যাবে, একদিনে পাল্টে যাবে তা হবে না। মাঝে মাঝে নেমে যাবে। আবার উঠতে হবে সেভাবে কাজটা আমাদের করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে। মানুষ ছাড়া গণতান্ত্রিক লড়াই হবে না। আমি রাতারাতি দুই-চারটা বোমটোম ফুটিয়ে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব না।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতির জন্য এর চেয়ে ঘন অমানিষা আর কখনও আসেনি। সব দিক দিয়ে আমাদের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা সবদিক থেকে বিপন্ন করে দেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে সংবাদ কর্মী যারা আছেন যারা সাহস করে কাজ করছেন তাদেরকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘এই যে বেনজীরের বেনজীর কাজ এটি তো যেভাবেই হোক গণমাধ্যমের আপনারাই তুলে নিয়ে এসেছেন। আপনারাই বের করেছেন। এর মধ্যে কিন্তু অনেক কিছু বের হচ্ছে। আমি আজকেই একটি পত্রিকায় দেখলামৃ সাবেক সেনা প্রধান আজিজের (আজিজ আহমেদ) ঘটনাগুলো কিছু কিছু বের হয়ে আসছে। যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে এখন সে কিন্তু কর্মক্ষেত্রের বাইরে। তার ভাইদেরকে পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার জন্য সে পুরোপুরি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। এটি ভাবা যায় না, সেনা বাহিনীর একজন সাবেক প্রধান তিনি এরকম জালিয়াতি করবেন? আমরা চিন্তা করতে পারি না, পুলিশ প্রধান সে এরকম ভয়াবহভাবে ডাকাতি করে গোটা দেশে একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলবে। তার দুর্নীতি চিন্তা করা যায় না। কিন্তু এরা সেটিকে সম্ভব করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি কাল একটি টেলিভিশনে দেখলাম সংবাদ প্রচারের আগে শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু বাণী প্রচার করা হয়। উনি (শেখ মুজিবুর রহমান) বলছেন, যারা সম্পদ লুণ্ঠন করে, সম্পদ পাচার করে নিয়ে যায় তাদের এদেশের মাটিতে কোনো জায়গা নেই। আমি বলি, আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তারা কি এটি একবারও শুনছে, দেখছে? কারা সম্পদ লুণ্ঠন করছে, কারা সম্পদ পাচার করছে এটি দেশের প্রত্যেকটা মানুষ জানে। আপনারা (সাংবাদিকরা) হয়ত সব কিছু লিখতে পারেন না। আমরা কিছু কথাটা বলার চেষ্টা করি। যেমন কয়েকদিন আগে বলেছি যে, ‘নগদ’ টাকা পাচার করছে কীভাবে? প্রতিটি টাকায় তাদের পাঁচ পয়সা করে কমিশন আছে। এই কমিশনের টাকা কোথায় যায়? আমি এই সম্পর্কে কোনো উত্তর পাইনি।’

বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভপতি শহিদুল ইসলাম সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, এম এ আজিজ, আবদুল হাই শিকদার, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, কায়কোবাদ মিলন প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন