বিজ্ঞাপন

রাজশাহীতে গরম মসলার বাজার গরম

June 15, 2024 | 10:37 pm

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: একদিন পরেই মুসলিম ধর্মালম্বীদের আরেকটি বড় উৎসব ঈদুল আজহা। এখন সবাই ব্যস্ত কোরবানির পশু কিনতে। আর গৃহিণীদের চিন্তা কোরবানির অন্যতম অনুষঙ্গ মসলা নিয়ে। প্রতি মাসে মসলা কিনতে না হলেও কোরবানির সময় মসলা কেনা জরুরি হয়ে পড়ে। কারণ কোরবানির মাংস রান্নার জন্য অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় মসলা বেশি প্রয়োজন হয়।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও সেমাই, ফিরনি রান্নাতেও কিছু মসলা লাগে। এর মধ্যে রয়েছে এলাচ, লবঙ্গ, কিশমিশ, পেস্তা বাদাম, দারুচিনি ইত্যাদি। আবার কুরবানির মাংস রান্নার জন্য কিংবা জাল দিয়ে রাখার জন্যও পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গুঁড়ামরিচ, গোলমরিচ, ধনিয়া গুঁড়া প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়। তবে কোরবানি সামনে রেখে রাজশাহীতে প্রায় সব মসলারই দাম বেড়েছে বাজারে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বেশি নিচ্ছেন। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মসলার সরবরাহকারীরা দাম বেশি রাখছে। অজুহাত দিচ্ছেন আমদানি খরচ বৃদ্ধির।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা মসলা মজুদ করে বেশি মুনাফা করছে। বাজারের বিভিন্ন দোকানে আগে থেকে মজুদ করে তারা বেশি লাভে বিক্রি করছে।

বিজ্ঞাপন

এলাচ দেখতে খুবই ছোট, কিন্তু বাজারে দামের দিক থেকে এর যেন একটা দাপট আছে। এখন প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ৫০০ টাকায়। তবে ছোট দানার এলাচ আর বড় দানার এলাচের দামের মাঝে কিছুটা হেরফের আছে।

লবঙ্গ মাংস রান্না থেকে শুরু করে অনেক কাজে ব্যবহার হয়। যেকোনো উৎসবের মজাদার রান্নার জন্য লবঙ্গ যেন এক অন্যতম উপাদান। তাই লবঙ্গ যত ছোট দেখাক না কেন, এর যেমন একটা আলাদা ঝাঁজ আছে, তেমনি দামেও ঝাঁজ রয়েছে। লবঙ্গ এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। গত কোরবানি ঈদের তুলনায় এবার লবঙ্গের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

গৃহিণীদের কাছে কিশমিশের কদর অনেক। বিশেষ করে কোনো উৎসব বা বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তখন ফিরনির সঙ্গে কিশমিশের যোগসূত্র হয় নিবিড়ভাবে। আবার ঈদে সেমাই রান্নার সময় কিশমিশ না হলে যেন রান্না পূর্ণতা পায় না। কিশমিশের দাম এখন ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা কেজি।

বিজ্ঞাপন

পেস্তা বাদাম কিংবা দারুচিনি কমবেশি ব্যবহার হয়ে থাকে বিভিন্ন উৎসবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইদের সময়। এই পেস্তা বাদাম বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে প্রতি কেজি ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। আর দারুচিনির দাম কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা। তবে পাইকারি থেকে খুচরা দামের হেরফের অনেক বেশি।

মহানগরীর সাহেববাজারে ঘুরে দেখা গেছে , জিরা ৯০০ টাকা কেজি, লবঙ্গ ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, ধনিয়া ১৮০ টাকা কেজি, কালোজিরা ৩২০ টাকা কেজি, পাঁচ মসলা ২০০ টাকা কেজি, গোলমরিচ ৮০০ টাকা কেজি, দারুচিনি ৪৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া হলুদ ৩০০ টাকা, তেজপাতা ১৪০ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কোরবানি ছাড়াও প্রতিদিন মসলা জাতীয় যেসব পণ্য সংসারে প্রয়োজন তা হলো পেঁয়াজ, রসুন আর আদা। উৎসব-পার্বণে এর চাহিদা যেন আরও বেড়ে যায়। পেঁয়াজ কয়েক দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি। তরতর করে দু’দিন না যেতেই শনিবার (১৪ জুন) এর দাম হয়ে যায় ৯০ টাকা কেজি। এদিন কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা কেজিতে।

পেঁয়াজের দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে রসুনও যেন বসে নেই। মহানগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। অথচ এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের দাম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। অথচ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

আদা কোরবানির বেশি ব্যবহার হলেও প্রায় প্রতিদিনই এ মসলার প্রয়োজন হয় বিভিন্ন রান্নায়। আদার দাম কয়েক দিন আগে ছিল ২৫০ টাকা কেজি। এখন দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ টাকা। এখানেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে বলে মনে করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।

মসলা ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী বলেন, ‘এলাচ আর জিরা মানুষ কতটুকু খায়? এরপরও একটু দাম বাড়লে হইচই করে। অথচ দেশে কোন জিনিসের দাম কম, সব তো বাড়তির দিকে। বিভিন্ন কারণে মসলার দাম বেড়েছে।’

সাহেববাজারের মসলার পাইকারি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই মসলা ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয়। সেখানকার ব্যবসায়ীরা ডলারসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন। আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ কারণে এখন দাম বাড়ছে।’

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন