বিজ্ঞাপন

‘মাদকবিরোধী অভিযানে এক শ্রেণির গণমাধ্যমের মন খারাপ’

May 31, 2018 | 5:09 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এক শ্রেণির মিডিয়া চিৎকার করেছে, মাদক সমস্যা। সরকার যখন মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখন তাদের মন খারাপ। আসলে তারা গণমাধ্যমের কাজ না করেও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান হতে চায়।’

বৃহস্পতিবার (৩১ মে) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে এক আলোচনায় র‌্যাবের মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকাকে শিশুদের আচরণের সঙ্গে তুলনা করেন বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কিছু ছোট বাচ্চা আছে যারা বলবে, কলা খাবো। আশপাশে দোকান না থাকলে বলবে দোকানের কাছে যাবো। কলা দেওয়ার পর বলবে ছিলে দাও। ছিলে দেওয়া হলে তখন বলবে বন্ধ করে দাও, পরে খাবো। দেশে এক শ্রেণির মিডিয়া আছে, যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে।’

বিজ্ঞাপন

এ ধরনের মিডিয়া মূলত নিজেরা ক্ষমতাবান হতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা (গণমাধ্যম) সরকারকে চাপে রাখতে চায়, সমাজকে চাপে রাখতে চায়, সমাজের গোষ্ঠীগুলোকে চাপে রাখতে চায়। তারা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বলতে চায়, দেখ, আমি কী পারি। অভিযানে মাদক নির্মূল হলে তো তারা সরকারকে চাপে রাখতে পারবে না। তাই তাদের মন খারাপ।’

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকেও এ ধরনের গণমাধ্যমই পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক।

তবে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান সফল করতে গণমাধ্যমের সার্বিক সহায়তা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি আবারও বলছি এক শ্রেণির মিডিয়ার সমস্যা আছে, সবার নয়। আমি সবার সমর্থন চাই। মিডিয়ার শতভাগ সমর্থন চাই। কোথায় মাদক বিক্রি হচ্ছে, কে বিক্রি করছে— আপনারা লাইভ দেখান। আমরা অভিযানে যাব। সংবাদপত্রগুলোতে খবর ছাপান, সবাই মিলে আমরা তা ধ্বংস করে দেবো। মাদক নির্মূল করতে আপনাদের সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

তথ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনি মিডিয়ার মালিকদের ডাকুন। তাদের সঙ্গে বসুন। মিডিয়ায় যেন এমন কোনো খবর প্রচার না হয় যার কারণে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান ভেস্তে যায়।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জঙ্গি ও মাদক হচ্ছে দানব। এই দানব বাংলাদেশের রাজনীতিতে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। জঙ্গি সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী দুইই অভিশাপ। সেই অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য ওকালতি করবেন না। ১৬ কোটি মানুষের নিরাপত্তার জন্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।’ তামাকের ব্যবহার কমাতে এ সময় তামাকজাত পণ্যে কর আরও বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মানসের সভাপতি অধ্যাপক ড. অরুপ রতন চৌধুরীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘তামাক ব্যবহারকারীর মাথার চুল থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। বিশ্বের ১০০ কোটি পুরুষ তামাক ব্যবহারকারী। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ উন্নত  দেশে ও ৫০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক।’

তামাক ব্যবহারে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, তামাকজাত রোগের কারণে প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাক গ্রহণ করছে। স্কুলের আশেপাশের ৯০ শতাংশ দোকানে তামাক পণ্য বিক্রি হয়।’ ধুমপানের কারণে দেশে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ৩ শতাংশ বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এতে আরও বক্তব্য ইব্রাহিম মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক জালাল উদ্দিন আশরাফুল হক ও অন্যরা। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ‘তামাক করে হৃদপিণ্ডের ক্ষয়, স্বাস্থ্যকে ভালোবাসি তামাককে নয়’।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন