বিজ্ঞাপন

ঢাকায় এখনো ঈদের আমেজ, কর্মস্থলে ফেরাদের ভিড় বাড়ছে

June 20, 2024 | 5:41 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হয়েছে দুদিন হলো। কিন্তু এখনো অফিস আদালতে পূর্ণ জনবল কাজে ফেরেনি। ফলে অফিস-আদালতে এখনো ঈদের আমেজে কিছুটা ঢিলেঢালা কাজ চলছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে অনেকেই ঈদের ছুটি কাটিয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকা ফিরেছেন। অনেকে আবার পরিবার রেখে ঢাকা ফিরেছেন একা। ফলে ঢাকা শহরও এখনো স্বাভাবিক সময়ের মতো জমজমাট হয়ে ওঠেনি। আবার ঈদ শেষ হলেও এখনো বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চ ঘাটে রয়েছে বাড়ি ফেরা মানুষের আনাগোনা।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে যেসব ট্রেন ঢাকায় ফিরেছে তার সবগুলোই প্রায় যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। আবার যেসব ট্রেন ঢাকা ছেড়েছে, সেগুলোতেও সিট ফাঁকা দেখা যায়নি।

আবার কর্মব্যস্ত ঢাকার পথে মানুষের ভিড়। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা যাত্রী ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ঈদের ছুটির সঙ্গে এক দিন বাড়তি ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই আজ (বৃহস্পতিবার) কাজে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরতে হলো। তবে পরিবার রেখে এসেছি। তারা শনিবার ফিরবে।

বিজ্ঞাপন

আরেক যাত্রী রিয়াজ বলেন, ছুটি শেষ হয়েছে আগেই। ফোনে একদিনের বাড়তি ছুটি নিয়েছিলাম, সেটাও শেষ। তাই বাধ্য হয়ে ফিরতে হলো।

যারা ঢাকা ছাড়ছেন তারাও বললেন ছুটি কাটানোর কথা। যশোরের যাত্রী মহিউদ্দীন আহমেদ ফায়ার সার্ভিসের একটি উইংয়ে কাজ করেন। তিনি বলেন, ঈদে ইমার্জেন্সি ডিউটি করায় ছুটি পাইনি। তাই ঈদের পর ছুটি নিয়েছি। এখন সেই ছুটি কাটাতে বাড়ি যাচ্ছি।

তবে ট্রেনে ঢাকায় ফেরা সব যাত্রীর মুখেই শোনা গেল ঈদযাত্রা নিয়ে প্রশংসার কথা। তারা বলছেন, এবারে ঈদযাত্রা কিংবা ফিরতি ঈদযাত্রার কোনোটিতেই তাদের ঝামেলা পোহাতে হয়নি বা কোনো ধরনের হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়নি।

বিজ্ঞাপন

ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে সবাই এখন ফিরছে ঢাকায়। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, ট্রেনের ফিরতি টিকিটও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় এবং শিডিউল বিপর্যয় না হওয়ায় বড় ধরনের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না যাত্রীদের। তবে শুক্রবার-শনিবার ঢাকায় ফেরা মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।

এদিকে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে সড়কপথেও। রাজধানীর মহাখালী, সায়েদাবাদ, গাবতলীর বাস টার্মিনালগুলোতে আসা প্রতিটি বাসই যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। তবে বাসযাত্রায় বাড়তি চাপ ছিল না।

শাকুরা বাস কাউন্টারের কর্মী সোহাগ বলেন, অফিস খুলেছে। তাই চাকরিজীবীরা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে সে সংখ্যাও খুব বেশি নয়। মূল ভিড় হবে শুক্র-শনিবার থেকে।

একই কথা বলেছেন ঈগল পরিবহনের কর্মী আলাউদ্দীন। তিনি বলেন, কালকের চেয়ে আজ যাত্রী বেশি ছিল। সামনে শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় যাত্রী কিছুটা কম। তবে শুক্র-শনিবার আবার ভিড় বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার পথে ফিরতি যাত্রায় বৃহস্পতিবার বরসহ বরযাত্রীও আসতে দেখা গেল কমলাপুর রেল স্টেশনে। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

এদিকে সদরঘাটে সকালে যেসব লঞ্চ এসেছে, সেগুলোতে যাত্রী বোঝাই ছিল বলে জানিয়েছেন এমভি টিপুর কর্মী সোলায়মান আহমেদ। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় মানুষ ফিরতে শুরু করেছেন।

ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করা সুরভী-৬ লঞ্চের কর্মী মিরাজ বলেন, কদিন ধরে কেবিন খালি নিয়ে যেতে আসতে হয়েছে। গতকাল থেকে কোনো সিট খালি নেই। তবে বরিশাল ছেড়ে যাওয়ার সময় কিছু সিট হয়তো খালি থাকবে। পদ্মাসেতু হওয়ার পর থেকে কখনোই পূর্ণ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়তে পারি না।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে সবাই ফিরে ফিরে না আসায় এখনো রাজধানীজুড়ে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। রাস্তাঘাট খালি। সড়কে নেই পর্যাপ্ত গণপরিবহণ। বেশির ভাগ মানুষকেই রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াত করতে দেখা গেছে। অফিস-আদালত খুললেও সেখানেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। অনেকেই বলছেন, কেউ কেউ বাড়তি দুদিন ছুটি নেওয়ায় কর্মস্থল এখনো কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠেনি।

গত ১৭ জুন সারা দেশে উদ্‌যাপিত হয় পবিত্র ঈদুল আজহা। এবার ঈদের তিন দিন ছুটির সঙ্গে আগের দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটি যুক্ত হওয়ায় পাঁচ দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন কর্মজীবীরা। মঙ্গলবার ঈদের ছুটি শেষ হলে বুধবার থেকে খুলেছে অফিস-আদালত। তবে অনেকে আবার বুধ-বৃহস্পতিবার ছুটি নেওয়ায় আগামী সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের আগে অফিসগুলো পূর্ণ জনবল পাবে না।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন