বিজ্ঞাপন

ঈদযাত্রায় প্রস্তুত রেলওয়ে

May 31, 2018 | 5:56 pm

।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। সারাদেশের রেলের প্রধান এ কেন্দ্র এখন যাবতীয় কাজ শেষ করে ক্ষণ গুণছে ঈদযাত্রার। সে অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার (১ জুন) থেকে ছাড়া হচ্ছে ঈদের অগ্রিম টিকেট। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদ যাত্রায় ট্রেন বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টিকেট কাউন্টার। সেইসঙ্গে যাত্রী হয়রানি কিংবা ভোগান্তি কমাতে জোরদার করা হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।

এবারের ঈদে কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট ছাড়া হচ্ছে শুক্রবার ভোর থেকে। এদিন দেওয়া হবে ১০ জুনের টিকেট। ২ তারিখ ১১ জুনের, ৩ তারিখ ১২ জুনের, ৪ তারিখ ১৩ জুনের, ৫ তারিখ ১৪ জুনের এবং ৬ তারিখ ১৫ জুনের টিকেট ছাড়া হবে।

এছাড়া ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে যাত্রীরা টিকেট পাবেন ১০ জুন থেকে। ওইদিন দেওয়া হবে ১৯ জুনের টিকেট, পরদিন ২০ জুনের, ১২ তারিখ ২১ জুনের, ১৩ তারিখ ২২ জুনের, ১৪ তারিখ ২৩ জুনের এবং ১৫ তারিখ ২৪ জুনের ফিরতি টিকেট দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী সারাবাংলাকে জানান, স্বাভাবিক নিয়মে দেশের সবগুলো রুটে যে সব ট্রেন চলাচল করে এবারের ঈদেও সেগুলো থাকছে। তবে প্রয়োজন হলে বিভিন্ন ট্রেনে অতিরিক্ত বগি যোগ করা হবে। এছাড়া তিন জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন ঢাকা-পার্বতীপুর, ঢাকা-রাজশাহী ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় অনেকে ঈদের অগ্রিম টিকেট নিতে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজন টিটিপাড়ার ফয়সাল এসেছেন ১৪ তারিখের জন্য। ৬নং কাউন্টারে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর পর তিনি জানতে পারলেন আজ ঈদের টিকেট ছাড়া হচ্ছে না। কাউন্টার ম্যান তাকে পরে আসতে বলেছেন। তবে কোনদিন এলে ১৪ জুনের টিকেট পাবেন সে বিষয়ে কাউন্টার থেকে কিছু বলা হয়নি।

এদিকে ঈদের টিকেট পাওয়া না গেলেও চলতি টিকেট নিতে প্রতিদিনের মতো স্টেশনে ভিড় দেখা গেছে। তাদের মধ্যে আনোয়ার নামের এক যাত্রী জানান, আগামী কাল শুক্রবারের টিকেট নিতে কাউন্টারে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে অন্য কাউন্টারে যাওয়ার কথা বলেছে। আমি ওই কাউন্টারে গিয়েও টিকেট পাইনি। বিষয়টি স্টেশন মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন খানের কাছে জানিয়েছি, তবে তিনিও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক গণমাধ্যমকে জানান, কমলাপুরের পাশাপাশি রাজধানীর বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী, যশোর, ঈশ্বরদী, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটসহ দেশের বড় স্টেশনগুলো থেকেও অগ্রিম টিকেট মিলবে এ ঈদে।

রেলযাত্রা নিরাপদ রাখতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা বুথ বসানো হয়েছে। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্যরাও যাত্রীদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় মুসুল্লিদের আনা-নেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেন সার্ভিস রাখা হয়েছে। ঈদের দিন কমলাপুর থেকে একজোড়া বিশেষ ট্রেন মুসুল্লিদের আনা-নেওয়া করবে।

স্টেশন ম্যানেজারের দাবি, রেলে টিকেট কালোবাজারে বিক্রির সুযোগ আগেও ছিল না এবারও নেই। আমরা এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছি। তবে শিডিউল নিয়ে শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রেল ভ্রমণ তুলনামূলক আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী হওয়ায় সারাদেশের যাত্রীদের (দক্ষিণের ছয় জেলা- বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর ছাড়া) প্রথম পছন্দ ট্রেন। তাই বছরের প্রায় সব সময়ই কমলাপুরে প্রচণ্ড ভিড় থাকে যাত্রীদের। আর প্রয়োজনের তুলনায় ট্রেন কম থাকায় টিকেট নিয়ে প্রতিবারই বাড়াবাড়ি রকমের কাড়াকাড়ি চলে যাত্রীদের মধ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের মোট ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার মিটার গেজ ও ৪০৯ কিলোমিটার ব্রগেজ রেল পথে মোট ৩৪০টি ট্রেন চলাচল করে। তবে ঈদের সময় এসব ট্রেনের ট্রিপ বেড়ে যায়।

সারাবাংলা/এমএস/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন