বিজ্ঞাপন

৭৫ বছরের যাত্রায় আওয়ামী লীগের কান্ডারি যারা

June 23, 2024 | 1:17 pm

নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পাকিস্তান নামক এক কৃত্রিম রাষ্ট্রের শেকল থেকে জাতিকে মুক্ত করে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র উপহার দিতে যে রাজনৈতিক দলটি নেতৃত্ব দিয়েছে, তার নাম আওয়ামী লীগ। ভাষা সংগ্রাম, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকারের জন্য ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে পাকিস্তানের কবর রচনা করে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যে দলটি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে, সে দলটি আওয়ামী লীগ। এ দেশের সব অর্জন আর আন্দোলন-সংগ্রামে জড়িয়ে থাকা সেই দলটি ৭৫ বছর পূর্ণ করে ৭৬ বছরে পা রাখল আজ রোববার (২৩ জুন)।

বিজ্ঞাপন

মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যুগে যুগে বহু নেতা তৈরি হয়েছেন অসাম্প্রদায়িক এই দলে। তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা এসব নেতাকে ধীরে ধীরে দল পরিচালনায় অন্তর্ভুক্ত করে সফলও হয়েছে আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগের বিদ্রোহী প্রগতিশীল অংশের উদ্যোগে এক গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনে ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগ’ নামে আত্মপ্রকাশ যে দলটির, ১৯৫৫ সালে সেই দলটি নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটিকে বাদ দিয়ে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক একটি দল হিসেবে হিসেবে। দলটি পরিণত হয় মুক্তিকামী বাঙালি জনগোষ্ঠীর ভরসাস্থলে।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় যুক্ত ছিলেন মওলানা ভাসানী, শামসুল হক ও শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতারা। পরে দলটির সঙ্গে যুক্ত হন পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। এক পর্যায়ে তিনিই হয়ে ওঠেন দলের প্রধান নেতা। ষাটের দশকে এই দলটির নেতৃত্বে পাদপ্রদীপে আসেন প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্মসম্পাদক ও পরে সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৪৮ সালে প্রথমে ভাষার দাবিতে সোচ্চার হওয়া, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গড়ে তোলা, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, পূর্ব বাংলার স্বাধিকারের দাবি ছয় দফা উত্থাপন, আগরতলা মামলা মোকাবিলা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান, বাঙালির জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের সংবিধান রচনা, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদপ্রাপ্তি, দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং র‌্যাডিকেল আর্থসামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ ও রূপায়ণ প্রভৃতির প্রাণপুরুষ ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তিনি পান ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি। আর বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ভেতর দিয়ে তিনি লাভ করেন ‘জাতির পিতা’র আসন। বাংলাদেশের দীর্ঘ ইতিহাসে তিনি খ্যাত হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে। তিনি ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের পথচলায় ২২টি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব, তথা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অনেকেই। এখন পর্যন্ত দলটির সভাপতি হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ ১০ বার এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের। কেন্দ্রীয় কমিটি না থাকা অবস্থায় সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন একবার নির্বাচিত হয়েছেন দলের আহ্বায়ক। এ ছাড়া মহিউদ্দিন আহমেদ দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

অন্যদিকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ৯ জন। সবচেয়ে বেশি চারবার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। তিনবার করে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তাজউদ্দিন আহমদ ও ওবায়দুল কাদের। আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুবার করে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাঠপর্যায় থেকে উঠে আসা নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন দলটিতে। প্রভাবশালী বা অভিজাত হিসেবে পরিচিতরা সেভাবে আসেননি এই দলে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত নিয়মিতভাবে দলটির ২২টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মাধ্যমে দলটিতে এসেছে নতুন মুখ।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তান আমল: আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রথম জাতীয় সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। পরে প্রতিনিধিদের সমর্থনে ৪০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৫৩ সালের দ্বিতীয় সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। আর দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৫৫ সালের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর রূপমহল সিনেমা হলে দলের তৃতীয় সম্মেলনে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। এ সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৫৭ সালে চতুর্থ সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন মওলানা ভাসানী। ১৩ জুন আরমানিটোলার নিউ পিচকার হাউজে ও পরদিন গুলিস্তান সিনেমা হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

দলের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফের নির্বাচিত হন মাওলানা তর্কবাগীশ ও শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৬৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। আর প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক হন তাজউদ্দীন আহমদ।

১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে আটক থাকাবস্থায় অনুষ্ঠিত হয় দলের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন। ১৯ ও ২০ অক্টোবর হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭০ সালের উত্তাল সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের অষ্টম সম্মেলন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ছয় দফা ও ১১ দফা গ্রহণ করে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেয় আওয়ামী লীগ। ৪ ও ৫ জুন হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭২ সালের ৭ থেকে ৮ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রথম এবং সব মিলিয়ে নবম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সার্কিট হাউজ রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের দশক জাতীয় সম্মেলন সার্কিট হাউজ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয় প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা দলের পদে থাকতে পারবেন না। ফলে বঙ্গবন্ধু দলীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সভাপতি হন এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক হন জিল্লুর রহমান।

এরপর ঘটে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের নৃশংস ও ভয়াবহ ঘটনা। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার অনুপস্থিতিতে চরম প্রতিকূল সময় ১৯৭৭ সালের ৩ ও ৪ এপ্রিল হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে দলের একাদশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। পরের বছর ১৯৭৮ সালে ৩ থেকে ৫ মার্চ হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুর রাজ্জাক।

১৯৮১ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮২ সালে আব্দুর রাজ্জাক দলত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। নেতৃত্ব পাওয়ার পর দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

১৯৮৭ সালের ১ থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের চতুর্দশ জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯২ সালের ১৯ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের পঞ্চদশ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ দুই বছর থেকে বাড়িয়ে তিন বছর মেয়াদি করা হয়। এতে শেখ হাসিনা সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত ষোড়শ জাতীয় সম্মেলন ছিল আওয়ামী লীগের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ৬ ও ৭ মে আউটার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা ও জিল্লুর রহমান। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে, তখন পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দলের সপ্তদশ জাতীয় সম্মেলন। এ সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আব্দুল জলিল।

২০০৯ সালের ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় দলটির অষ্টাদশ জাতীয় সম্মেলন। এতে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় দলটির ঊনবিংশতিতম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বিংশতিতম জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের একবিংশতিতম জাতীয় সম্মেলনে পুনরায় শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ দ্বাবিংশতিতম জাতীয় সম্মেলনেও পুনরায় সভাপতি পদে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের নির্বাচিত হন।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন