বিজ্ঞাপন

‘ভারতকে রেল করিডোর দিয়ে বিপদ ডেকে আনছে সরকার’

June 25, 2024 | 8:24 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভারত থেকে প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ঢাকায় ফিরেছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য কিছু আনতে না পারলেও প্রকারান্তরে ভারতকে এবার রেল করিডোর দেওয়ার চুক্তি করা হয়েছে। রেল করিডোরসহ ভারতকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে কেন দেওয়া হচ্ছে? বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পাচ্ছে? ভারতকে সড়ক পথে ট্রানজিট সুবিধা দেবার পর এখন তাদেরকে একতরফা রেল সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের লাভ কি? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। এসব পদক্ষেপে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা কতখানি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে? এসব বিষয়েও সরকারের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। আসলে এই করিডোর দিয়ে বিপদ ডেকে আনছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে শেখ হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

দিল্লিতে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির শীর্ষ বৈঠকে সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তি সম্পর্কে সাইফুল হক বলেন, সরকার ভারতের সঙ্গে সাধারণ কূটনৈতিক দরকষাকষির ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছে। ভারতের সাহায্যে ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে তারা ভারত তোষণ নীতি গ্রহণ করেছে। ভারতের অনুগত থাকার কারণে তিস্তার পানি চুক্তি, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধসহ বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে এবারও ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তিই করতে পারেনি। বাস্তবে এসব ইস্যু এখন টেবিলের নীচে।

তিনি বলেন, ভারতের উপর সরকারের নির্ভরতা যত বাড়ছে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় নিরাপত্তা ততই ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে এবারও কেবল আশ্বাস নিয়েই ঢাকায় ফিরে আসতে হয়েছে। তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনার কথা বলে বাস্তবে পানি বণ্টনের বিষয়টি তারা বাংলাদেশকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। এটা কিছুটা “গরু মেরে জুতা দান করার” মত ঘটনা। গঙ্গার পানি চুক্তি কবে কিভাবে নবায়ন হবে তাও পরিষ্কার করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তির পরিবর্তে এবার পানির ব্যাপারে বাংলাদেশকে একটা বুঝ দেবার জন্য তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় ভারত যুক্ত হবার কথা বলেছে। তিস্তাকে শুকিয়ে মেরে এখন তারা তিস্তার ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হতে চায়! তাদের এই আগ্রহও দেখা যেতনা যদি চীন তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় বিরাট বিনিয়োগের প্রস্তাব সহকারে আগ্রহ না দেখাত।

সাইফুল হক বলেন, সীমান্তে প্রায় প্রতি সপ্তাহে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে গুলি করে হত্যার বর্বোরোচিত ঘটনা বন্ধেও শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যায়ে কার্যকরি কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হয়নি। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার বক্তব্যে- (কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি হয়, বিএসএফ এমনভাবে আক্রান্ত হয় যে গুলি না চালিয়ে উপায় থাকে না) এটা স্পষ্ট যে, সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে বাংলাদেশিদের হত্যা চলতেই থাকবে। আশ্চর্যজনক হচ্ছে- বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বক্তব্যের প্রতিবাদ পর্যন্ত করার সাহস করেননি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বরাতে জানা গেছে যে, উভয় সরকার প্রধান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন, সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন। এসব নিয়ে দেশবাসীর কাছে সরকারের পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। ভারত দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়েও ঢুকে যাচ্ছে কিনা তাও সরকারের স্পষ্ট করা দরকার।

সাইফুল হক বলেন, সমতা,ন্যায্যতা, আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতির ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সমস্যাসমূহের দ্রুত সমাধান করা জরুরি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনইউ

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন