বিজ্ঞাপন

বাজেট: আকার কমিয়ে বাস্তবায়নে জোর চসিকের

June 27, 2024 | 7:15 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: রেকর্ড পরিমাণ সরকারি অনুদান পেলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বাজেটের আকার তেমন বাড়েনি। বরং অনুদাননির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব উৎসের ওপর ভর করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এক হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

চসিক দাবি করেছে, বিদায়ী অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ৮৮ শতাংশ, যা চসিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। এর আগের অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ৫৪ শতাংশ। বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজেটের আকার কমিয়ে আনা, সরকারের কাছ থেকে কাঙ্খিত উন্নয়ন অনুদান পাওয়া ও গৃহকর আয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা বাড়ার কারণে বাজেট বাস্তবায়ন বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে নগরীর নন্দনকাননে থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এক হাজার ৬৬১ কোটি নয় লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। গত অর্থবছর মোট এক হাজার ৮৮৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল।

এবার এক হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকার ঘোষিত বাজেটে নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর অনুদান খাত থেকে আয় হবে ৯৫২ কোটি ৫ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

বাজেটে তিন ধরনের কর বাবদ মোট আয় ধরা হয়েছে ৬৭১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে সর্বোচ্চ ২৩৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। হাল কর ও অভিকর খাতে ২৩২ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর বাবদ ২০০ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।

গত অর্থবছরে মোট আয় ধরা হয়েছিল ৬৪০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেট অনুসারে চসিকের আয় হয়েছে ৪১৫ কোটি ৭ লাখ টাকা।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে ৯৫২ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে ৩৮ কোটি ৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যাশার চেয়ে বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুদান মিলেছে বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের কাছ থেকে উন্নয়ন অনুদান প্রত্যাশা করা হয়েছিল ৮৯৪ কোটি টাকা। বিপরীতে বরাদ্দ মিলেছে ৯৮৩ কোটি টাকা।

অনুদান বাড়লেও বাজেটের আকার সেভাবে বাড়েনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট ছিল সর্বোচ্চ প্রায় ২ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। সেটি ক্রমান্বয়ে কমিয়ে গত অর্থবছরে বাজেট ঘোষণা করা হয় ১ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা।

সিটি মেয়রের দাবি, বাজেটকে বাস্তবসম্মত করতে আকার কমানো হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার কারণে সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’

সংশোধিত বাজেট অনুসারে বিদায়ী অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৮ শতাংশ। এর আগে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছিল। ওই অর্থবছরে বাজেটের আকারও ছিল ২ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেট ছিল ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

বিজ্ঞাপন

ঘোষিত বাজেটে নগর উন্নয়ন খাতে সর্বোচ এক হাজার ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে উন্নয়ন খাতে ৯৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও খরচ হয়েছে এক হাজার ১৫ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বকেয়া দেনা পরিশোধ করা হয়েছে ১৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরে দেনা পরিশোধ করা হয়েছে ১১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এবারের বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে বেতন, ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে ৩২৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

বাজেট ঘোষণার পর বক্তব্যে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি এক হাজার ৭৫ কোটি টাকা দেনা নিয়ে। তিন বছর ধারাবাহিকভাবে দেনা পরিশোধের পর আজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দেনার পরিমাণ ৪৪০ কোটি টাকা। আয়কর বাবদ ১১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ ১৩৪ কোটি ১১ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। আনুতোষিক বাবদ ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা ও ভবিষ্যৎ তহবিল বাবদ ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।’

চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক এবং স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা তুলে ধরে সিটি মেয়র নিয়মিত কর পরিশোধের জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনের সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপনবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল। এসময় প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এনইউ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন