বিজ্ঞাপন

রান অফে গড়াতে পারে ইরানের নির্বাচন, এগিয়ে মাসুদ পেজেশকিয়ান

June 29, 2024 | 2:29 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের নির্বাচনে আংশিক ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। এতে দেখা গেছে মাসুদ পেজেশকিয়ান এগিয়ে আছেন। কিন্তু তিনি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেননি। ফলে নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে গড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাঈদ জলিলির সঙ্গে আগামী ৫ জুলাই ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে তাকে।

বিজ্ঞাপন

গত মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর ইরানে নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়েছে গতকাল শুক্রবার (২৮ জুন)। এ নির্বাচনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শনিবার প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং সাঈদ জলিলির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। তবে তাদের কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি।

দেশটির নির্বাচনী সদর দফতরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এক কোটি ৯০ লাখ ভোট গণনার পর দেখা গেছে, পেজেশকিয়ান ৪২.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। সাঈদ জলিলি পেয়েছেন ৩৯.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

সর্বশেষ গণনা অনুসারে, পেজেশকিয়ান ৮৩ লাখ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। প্রাক্তন পারমাণবিক আলোচক জালিলি ৭১ লাখ ভোটে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন। অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে ঘালিবাফ পেয়েছেন ২৭ লাখ ভোট এবং পৌরমোহাম্মাদি পেয়েছেন এক লাখ ৫৮ হাজার ভোট।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে এখনও কোনো স্পষ্ট বিজয়ী পাওয়া যায়নি। ইরানের আইন অনুযায়ী, যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট অর্জন করতে সক্ষম না হন, তাহলে শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে নতুন নির্বাচন হবে। ইরানের নির্বাচনী আইনের অধীনে, ফলাফল ঘোষণার পর প্রথম শুক্রবার এই রান অফ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। যার অর্থ, ভোটের এই হার স্থির থাকলে আগামী ৫ জুলাই রান অফ ভোট হতে পারে।

এর আগে, শুক্রবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চলে এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। বিশ্বের ৯৫টি দেশ থেকে ইরানি ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছেন এবার। ইরানের নির্বাচনী সদর দফতরের মুখপাত্র মোহসেন ইসলামি বলেছেন, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের লক্ষ্য ছিল ভোটার টার্ন আউট বাড়ানো। কিন্তু প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, মাত্র ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ ভোটার অংশগ্রহণ করেছেন। তবে চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশ হয়নি। যদি ৪০ থেকে ৪২ শতাংশের মধ্যে এই হার থাকে তাহলে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের ইতিহাসে তা হতে যাচ্ছে সর্বনিম্ন।

বিজ্ঞাপন

মাসুদ পেজেশকিয়ান কে?

ইরানের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে আছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। নির্বাচনের চার প্রার্থীর মধ্যে তিনিই একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি রক্ষণশীল বা কট্টরপন্থি কোনো উপদলের অন্তর্ভুক্ত নন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ইরানের পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন।

Iranian presidential candidate Masoud Pezeshkian

পাঁচবারের আইনপ্রণেতা পেজেশকিয়ান পার্লামেন্টে তাব্রিজ নামক এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেছেন । তিনি ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। তিনি একজন হার্ট সার্জন। মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরানের পার্লামেন্টের স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্যও ছিলেন।

তিনি ২০০০ সালের দিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। মাসুদ পেজেশকিয়ান ২০২১ সালেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ইরানের সর্বোচ্চ অভিভাবক কাউন্সিল তাকে ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে।

বিজ্ঞাপন

সাঈদ জলিলি কে?

নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন সাঈদ জলিলি। তিনি সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এসএনএসসি) সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সরাসরি প্রতিনিধি। এই এসএনএসসিকে ইরানের ছায়া সরকার বলা হয়ে থাকে।

সর্বোচ্চ নেতা তাকে ২০০৭ সালে কাউন্সিলের সচিব হিসেবে নিযুক্ত করেন। এই পদে তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন। এই সময়ে তিনি ইরানের পারমাণবিক ফাইল পরিচালনা করেছিলেন।

 Iranian presidential candidate Saeed Jalili

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে বেশ কিছু সময় ধরে উত্তেজনা বাড়ার পর তাকে নিরাপত্তা প্রধান হিসেবে বদলি করা হয়।

৫৮ বছর বয়সী জলিলি ২০১৩ সালেও প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেবার তিনি হাসান রুহানির কাছে হেরে যান। তিনি ২০২১ সালেও প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য রাইসিকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র আলী বাঘেরি কানি ইরানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সারাবাংলা/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন