বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত

June 30, 2024 | 12:11 am

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

বিশ্বকাপ জিততে শেষ ৩০ বলে ঠিক ৩০ রান প্রয়োজন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, হাতে ছিল ৬টি উইকেট। ক্রিজে ছিলেন ভারতীয় স্পিনারদের ‘খুন’ করতে থাকা হেনরিক ক্লাসেন ও সেট হয়ে যাওয়া ডেভিড মিলার। তবুও সেখান থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল জিততে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা! দক্ষিণ আফ্রিকা বলেই হয়ত!

বিজ্ঞাপন

জাসপ্রিত বুমরাহ ও আর্শদ্বীপ সিংয়ের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। কিন্তু হার্দিক পান্ডিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে ৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি প্রোটিয়ারা। যাতে হারতে হারতে স্বপ্নের শিরোপা জিতে নিয়েছে ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ৭ রানের ব্যবধানে জিতেছে ভারত। ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শিরোপা ঘরে তুলল ভারতীয়রা।

২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের দেখা পেল ভারত। গত বছর ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে কেঁদেছিল পুরো ভারত। ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই একটা ম্যাচই হেরেছিল ভারত। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো রোহিত শর্মার দল।

শনিবার (২৯ জুন) বার্বাডোজে ভারতের বোলিং ইনিংসের সূচনাটা হয়েছিল দুর্দান্ত। দ্বিতীয় ওভারে রেজা হেনড্রিক্সকে সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ। পরের ওভারে আর্শদ্বীপ সিং এইডেন মার্করামকে ফেরালে  চাপে পর যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান কুইন্টন ডি কক ও ট্রিস্টার্ন স্টাবস। ৩৮ বলে ৫৮ রান তোলেন দুজন।

বিজ্ঞাপন

চারে নেমে পাল্টা আক্রমণ করেন স্টাবস। অক্ষর প্যাটেলকে রিভার্স  সুইপ করতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ৩১ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুত রান তোলার দায়িত্বটা কাঁধে নিয়েছিলেন কুইন্টন ডি কক। কিন্তু আর্শদ্বীপ সিংকে পরপর দুই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ফিরেছেন ফিফটির আগেই। ৩১ বলে ৪টি চার ১টি ছয়ে ৩৯ রান করে ফিরেছেন ডি কক।

এরপর ভারতীয় স্পিনারদের রীতিমতো কচুকাটা করে ম্যাচটা দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন হেনড্রিক্স ক্লাসেন। ১৪তম ওভারে কুলদ্বীপ যাদবের এক ওভার থেকে ১৪ রান তুলে নেওয়ার পর ১৫তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের ওভার থেকে তুলে নেন ২৪ রান!

ক্লাসেন পরপর দুই ওভারের ঝড়ে এরপর ফাইনাল জিততে ৩০ বলে ঠিক ৩০ রান লাগত দক্ষিণ আফ্রিকার। হাতে ছিল ক্লাসেন, ডেভিড মিলারসহ ৬টি উইকেট। তবুও ম্যাচ জিততে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা!

বিজ্ঞাপন

১৭তম ওভারে দারুণ এক স্লোয়ারে ‘খুনে’ ক্লাসেনকে ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। সেই ওভারে হার্দিক রান খরচ করেন মাত্র ৪। পরের ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ মাত্র ২ রান খরচ করে ১ উইকেট তুলে নেন। তার পরের ওভারে আর্শদ্বীপ সিং মাত্র ৪ রান খরচ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আরও চাপে ফেলেন।

শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মিলাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে থেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের হয়ে ২০ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। বুমরাহ ১৮ রানে ও আর্শদ্বীপ সিং ২০ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে বিরাট কোহলি ও অক্ষর প্যাটেলের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল ভারত। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ভারতের শুরুটা হয়েছিল দারুণ ইতিবাচক। বিরাট কোহলি তিন বাউন্ডারিতে প্রথম ওভার থেকে তুলে নেন ১৫ রান। পরের ওভারের রোহিত শর্মা পরপর দুই বলে দুই বাউন্ডারি আদায় করে নেন। কিন্তু সেই ওভারের চতুর্থ বলে কেশভ মহারেজকে আবারও সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোহিত। সুইপ খেলতে গিয়ে ৫ বলে ৯ রান করে ফেরেন ভারতীয় অধিনায়ক। এক বল পরে কেশভ মহারাজের দ্বিতীয় শিকার বনেছেন রিশভ পন্ত।

বিজ্ঞাপন

খানিক বাদে সূর্যকুমার যাদবও ফিরলে বড্ড চাপেই পরে ভারত। হার্দিক পান্ডিয়া, শিভম দুবেদের রেখে এরপর অক্ষর প্যাটেলকে পাঁচ নম্বরে পাঠিয়েছিল ভারত। তার দায়িত্ব ছিল উইকেট ধরে রেখে রানের চাকা সচল রাখা। তিন উইকেট পরে যাওয়ার পর কোহলি খোলসবন্দি হলেও অক্ষর প্যাটেল রানের চাকা সচল রাখার কাজটা করেছেন দুর্দান্তভাবে।

চতুর্থ উইকেটে ৫৪ বলে ৭২ রান তুলেছেন দুজন। তার মধ্যে অক্ষর প্যাটেলের ৩১ বলে ৪৭ রান। রান আউট হয়ে ফেরার আগে ১ চার ৪টি ছয়ে এই রান করেছেন অক্ষর। ১৭তম ওভারে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন বিরাট কোহলি। মন্থর হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য হাত খুলে খেলেছেন ভারতীয় তারকা। ফিফটির পর ১১ বল খেলে করেছেন ২৬ রান।

ছয়ে নেমে কার্যকরী একটা ইনিংস খেলেছেন তরুণ শিভম দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ২৭ রান করে ফিরেছেন দুবে। হার্দিক পান্ডিয়া অপরাজিত ছিলেন ২ বলে ৫ রান করে।

২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানে থেমেছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আনরিখ নরজে ২৬ রানে ও কেশভ মহারেজ ২৩ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এসএইচএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন