বিজ্ঞাপন

জালিয়াতির পর অবসরে পাঠানো সার্ভেয়ারের চাকরি পুনর্বহাল

June 30, 2024 | 4:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পদ্মা সেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণকে কেন্দ্র করে এক কোটি ৬৪ লাখ টাকা জালিয়াতির ঘটনায় বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো এক সার্ভেয়ারকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়েছে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের সাবেক সার্ভেয়ার মাইনুল হাসানকে জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের তদন্তে জালিয়াতিতে সহায়তার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে গত বছরের নভেম্বরে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আপিলের প্রেক্ষিতে গত ৯ জুন তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিলুর রহমানের সই করা আদেশে তার বাধ্যতামূলক অবসরের শাস্তি কমিয়ে গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে ৫ বছরের জন্য বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই আদেশে জানানো হয়, মাইনুল হাসানের বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলার এল এ শাখার দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি জালিয়াতির অভিযোগ করেছিলেন। এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার, মাদারীপুরকে আহ্বায়ক করে একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

এতে জানানো হয়, ‘উপ- পরিচালক, স্থানীয় সরকারের দেওয়া প্রতিবেদনে দেখা যায় মাদারীপুর জেলাধীন শিবচর উপজেলায় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অধীন ০৬/২০১৭-২০১৮ নম্বর এল.এ কেসে অধিগ্রহণ করা সাবাজনগর মৌজার বিআরএস ৩৮৯, ৩৯৯, ৫০০, ৪০৪, ৪০৫, ও ৪০৬ নম্বর দাগে মোট ৩.৩৭ একর জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। পরবর্তীতে আলী হোসেন মল্লিক ও মো. শাহীন গং জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে এ খাস খতিয়ানভুক্ত দাগের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার আবেদন করলে দাখিল করা জাল কাগজপত্র যাচাই না করে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে সুপারিশ ও সহায়তা করেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি এলএ শাখায় দায়িত্ব পালনকালে সরকারের মোট এক কোটি ৬৪ লাখ ৯২ হাজার ৭৮২ টাকা ক্ষতিসাধন করেন এবং নিজে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। এ বিভাগীয় মামলায় তাকে অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে বিধি মোতাবেক চাকরি হতে বাধ্যতামূলক অবসর গুরুদণ্ড আরোপ করা হয়।

বিভাগীয় মামলায় দেওয়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে মাইনুল হাসানের আপিল আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আপিল মামলা রুজু করা হয়। আপিল শুনানিতে অভিযোগের বিষয়ে আপিলকারীর বক্তব্য এবং সরকারপক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয় বলেও এতে জানানো হয়।

আদেশে জানানো হয়, নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বিভাগীয় মামলা পরিচালনায় বিধিমালায়বর্ণিত নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসৃত হয়েছে, কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয়নি, অভিযোগের উপর প্রাপ্ত তথ্য যথার্থ। আপিল শুনানিতে আপিলকারীর বক্তব্যও সন্তোষজনক বিবেচিত হয়নি।

বিজ্ঞাপন

পর্যালোচনায় আরও দেখা যায় যে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হলেও তদন্তে তার বিরুদ্ধে একই বিধি মোতাবেক অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ শেষে অপরাধের প্রকৃতি বিবেচনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আরোপিত দণ্ড মাত্রাতিরিক্ত মর্মে আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এজন্য বিধি মোতাবেক মাইনুল হাসানকে বিভাগীয় মামলায় ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ গুরুদণ্ডাদেশের পরিবর্তে বর্তমান বেতন গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে ৫ বছরের জন্য অবনমিতকরণ লঘুদণ্ড আরোপ করা হলো। দণ্ডের মেয়াদকাল বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য গণনাযোগ্য হবে না।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন