বিজ্ঞাপন

‘ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার করছে’

July 1, 2024 | 6:53 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারকের সব ধারা না পড়েই এবং না বুঝেই বিএনপি অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেছেন, ধারাগুলো খণ্ডিতভাবে তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বিষয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমঝোতা স্মারক কোনোভাবেই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয়, বরং এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। বিএনপি অপপ্রচার করছে যে, বাংলার বুক চিরে ভারতের ট্রেন চললে বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হবে। এটি মোটেই সঠিক নয়। সমঝোতা স্মারকের ৩ নম্বর ধারায় পরিষ্কার বলা হয়েছে, ‘রেড ট্রাফিক’ তথা অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরকসহ বিপজ্জনক ও আপত্তিকর পণ্য পরিবহন করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকের ৪ নম্বর ধারায় এটাও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য ও মানুষের চলাচল সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় আইন, প্রবিধান এবং প্রশাসনিক বিধানের অধীন হবে। বিএনপি এটা বলে না যে, ভারতের মধ্য দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন নেপাল ও ভুটান পর্যন্ত চলবে, নেপাল-ভুটান থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রেন বাংলাদেশে আসবে এবং কলকাতা বন্দর ব্যবহার না করে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে। তারা এটাও বলে না যে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুত গ্রিডের মাধ্যমে তাদের ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে ভারতের বুক চিরে বাংলাদেশ নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে।’

বিজ্ঞাপন

ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেশ কিছু কূটনৈতিক সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়ে নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশের পক্ষে রায় এনেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি অত্যাধুনিক চীনা সাবমেরিন যুক্ত করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর করে দেশকে সামরিকভাবে শক্তিশালী করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এবং ছিটমহল সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে ১০ হাজার একর জমি বাংলাদেশের মধ্যে সংযুক্ত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের মাটিতে তাদের গ্যাস ব্যবহার করে ভারতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ত্রিপুরার পালাটানা থেকে কম খরচে আমদানি করে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তিতে ভারতকে রাজি করিয়ে, গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা শেখ হাসিনাই আদায় করেছেন। আর বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তো গঙ্গার পানির কথা বলতেই ভুলে গিয়েছিলেন- এ কথা দেশের সবাই জানে। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির জন্য ভারতকে চাপের মধ্যে শেখ হাসিনাই রেখেছেন। এই চুক্তি হলেও তার হাত ধরেই হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।’

বিএনপি’র রাজনীতি নতজানু উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালে বিজেপি প্রথম ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি মিষ্টি বিতরণ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে গিয়ে খালেদা জিয়া গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করার কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলেন। বিএনপি সরকারে থাকাকালীন তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে ভারতের সাথে কখনোই একটি কথাও বলেনি। ভারতকে গ্যাস দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আলী আরাফাত বলেন, ‘আপনাদের চিন্তাধারা নতজানু, যে কারণে আপনারা আঞ্চলিক যোগাযোগ বিরোধী। এ জন্য যখন সাবমেরিন ক্যাবল ফ্রি দেওয়া হয়েছিল তখন তা নেননি এবং বাংলাদেশের জনগণকে হাজার কোটি টাকা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন করেছেন। আপনারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে গ্যাস রফতানি করতে দেননি এবং বাংলাদেশের মানুষকে কম দামে গ্যাস প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের বিবেক নতজানু। যে কারণে আপনারা নিজেরা যা করতে পারেননি, এমনকি কোনো উদ্যোগও নেননি, সেগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্জন থাকার পরও নির্লজ্জের মতো সমালোচনা করেন। আপনাদের সততার মানদণ্ড নতজানু। যে কারণে আপনারা ডাহা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে প্রতিনিয়ত ধোঁকা দেন এবং বিভ্রান্ত করেন।’

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন