আ.লীগ নেতা খুন: ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১০ জনের যাবজ্জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১২ বছর আগে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে খুনের মামলায় চার জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। এদিকে, একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৩ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক হালিম উল্লাহ চৌধুরী এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অশোক কুমার দাশ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

খুনের শিকার ইকবাল আজাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন। ইকবাল আজাদের স্ত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত ৩১২ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- রফিকউদ্দিন ঠাকুর, মাহফুজ আলী, মোকারম আলী সোহেল ও ইসমত আলী। অন্যদিকে যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিরা হলেন- আবদুল জব্বার, ইদ্রিস আলী, সিজার, বাবু, হারিস, বকুল, লিমন, আবদুল্লাহ, শরীফ ও মিজান।

এদিকে, আদালত রায় ঘোষণা করার পর-পরই বাইরে থাকা আসামিদের আত্মীয়-স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় সরাইলে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ। পরদিন তার ভাই এ কে এম জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে সরাইল থানায় হত্যা মামলা করেন।

একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আবদুল হালিম (প্রয়াত), সহসভাপতি সাদেক মিয়া (প্রয়াত), তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তৎকালীন কমান্ডার ইসমত আলী, ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী, উপজেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি মাহফুজ আলী, সাবেক সহসভাপতি আল ইমরান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল আসাদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানসহ ২৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আসামিদের মধ্যে দু’জন মারা গেছেন এবং বাকি ছয়জন পলাতক আছেন।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অশোক কুমার দাশ সারাবাংলাকে জানান, আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদকে নির্মমভাবে খুনের মামলায় আদালত চার জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একই রায়ে আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৩ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে দু’জন মারা গেছেন এবং ছয় জন পলাতক রয়েছেন। রায়ের সময় অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম