বিজ্ঞাপন

‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার সংকল্প নিয়ে দেশসেবায় আছি’

July 3, 2024 | 10:13 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েই এ দেশের দুঃখী ও দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার দুরূহ সংকল্প নিয়ে দেশসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি। ১৯৯৬ সালে আমি যখন দায়িত্ব নিই, তখন একটি সমীক্ষা করিয়ে দেখি যে, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ লাখ মানুষ গৃহায়ণের তীব্র সংকটে রয়েছে। তখন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর গৃহায়ণের সমস্যা লাঘবের জন্য ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরের বাজেটে ৫০ কোটি টাকা দিয়ে একটি গৃহায়ণ তহবিল গঠন করি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩ জুলাই) ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময় গৃহায়ণ সমস্যা সমাধানে আরও নানারকম উদ্যোগ নিই। কিন্তু আমার মাথায় ঘুরতে থাকে গ্রামের ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় মানুষজনদের কীভাবে জমির মালিকানা দিয়ে বিনামূল্যে ঘর বানিয়ে দেওয়া যায়। কারণ, আমি উপলব্ধি করি খোলা আকাশের নিচে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করার জন্য মানুষের যে বাসনা তা তো চিরন্তন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুনর্বাসিত মানুষগুলোর হাসিমুখ যখন আমি দেখি, তখন মনে হয় আমার জীবন সার্থক হয়েছে। আমি পরিপূর্ণতা লাভ করেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতোই আমি আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। সহায়-সম্বলহীন, অসহায়, ছিন্নমূল মানুষদের জীবন বদলে যাওয়ার গল্প শুনে, আর তাদের হাসিমুখ দেখেই আমি আগামী দিনের পথচলার অনুপ্রেরণা পাই।’ ২০০১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি-জামাত জোট আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছিল বলে সংসদকে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সংসদ নেতা বলেন, ‘এ পর্যন্ত ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করেছি। শুধুমাত্র মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার।’

আশ্রয়হীন মানুষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক আশ্রয়ণ প্রকল্পের অফিস থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ সমৃদ্ধ সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এই সফটওয়্যারে এ পর্যন্ত উপকারভোগী সবার নাম-ঠিকানা-ছবি, পেশা প্রভৃতি তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। ডাটাবেজটি ব্যবহার করে পুনর্বাসিত পরিবারগুলোকে কর্মক্ষম ও আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলার সব কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের দীর্ঘদিনের পুরাতন জরাজীর্ণ ব্যারাকগুলো প্রতিস্থাপন করে সেমিপাকা একক ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। উপকারভোগীসহ পুনর্বাসিত পরিবারের সক্ষম সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষতা বাড়ানো হবে। প্রশিক্ষণের পর চাহিদা অনুসারে পেশাভিত্তিক খাতে বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ঋণ দিয়ে উপকারভোগীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, “প্রশিক্ষণ ও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের সঙ্গে অন্যান্য দফতর ও সংস্থার মাঠ পর্যায়ের নিয়মিত কাজের অধিকতর সমন্বয় করে অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম নেওয়া হবে। আশ্রয়ণের উপকারভোগীদের নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে আমি আমার কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছি। তারা উপকারভোগীদের ডাটাবেজ থেকে তথ্য নিয়ে পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণের জন্য ‘কুইক উইন’ নামে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পর্যায়ক্রমে এটি সারাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের দারিদ্র ও বৈষম্য বিমোচনের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামের স্মৃতি।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘কিছু ঘাতকের নির্মম বুলেট বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশের দরিদ্র মানুষকে আরও দরিদ্র করা হয়। গরিব-দুঃখী মানুষের ভাগ্য বদলের পরিবর্তে ক্ষমতা দখলকারী অত্যাচারী শাসকদল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আর জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন