বিজ্ঞাপন

ট্রানজিট জুজু, বিএনপির রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা

July 4, 2024 | 5:31 pm

তাপস হালদার

বাংলাদেশ-ভারত রেল ট্রানজিট নিয়ে এতোদিন স্যোশাল মিডিয়ায় একশ্রেণির মানুষ জনগণকে বিভ্রান্ত করে আসছিল। তাদের দাবি এর ফলে দেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে। এই অপপ্রচার যে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা শুরু করেছিল, সেটা স্পষ্ট। এখন শুধু স্যোশাল মিডিয়ায় সীমাবন্ধ নয়, এখন বিএনপির নেতারা বলেছেন, রেল ট্রানজিটের ফলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে, ভারতের কলোনিতে পরিনত হবে, দেশের উপর দিয়ে রেল যেতে দিব না ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব গঁদবাধা কথা তাদের পুরনো ইতিহাস। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষকে এভাবে মিথ্যা বলে বোকা বানানো এতো সহজ নয়। মানুষ চাইলেই অতি সহজে সকল তথ্য পেয়ে যায়। জনগণ কাছে স্পষ্ট, ট্রানজিট জুজু, বিএনপির রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছুই নয়।

বিজ্ঞাপন

বিগত পনের বছরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দু-দেশের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের কারণে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয় গুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। দু-দেশের জনগণই সমভাবে লাভবান হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোলমডেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি কিংবা মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার উপস্থিতি বন্ধুত্বের গভীরতা কতটুকু সেটা বোঝা যায়। বাংলাদেশকে ভারত কতটা গুরুত্ব দেয় সেটা মোদির বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘বিশেষত্ব এটাই যে শেখ হাসিনাই আমার তৃতীয় দফায় প্রথম আমন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় অতিথি।’

গত ২০-২১ জুন ভারতে দ্বিপাক্ষিক সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত পাঁচ বছরে দুই প্রধানমন্ত্রী মুখোমুখি দশবার বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে প্রতিবারই বেশকিছু ভালো সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা দু-দেশই লাভবান হয়েছে। গত ২১ জুন নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারে ১০টি সমঝোতা স্মারক ও ১৩ টি ঘোষণাপত্র সই হয়েছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, গঙ্গা পানি চুক্তির যৌথ কারিগরী কমিটি গঠন, ই-মেডিকেল ভিসা প্রবর্তন, বাংলাদেশের রংপুরে একটি নতুন সহকারী হাইকমিশনের দপ্তর স্থাপন, ভারতীয় গ্রিডের সাহায্যে নেপাল থেকে বাংলাদেশের মধ্যে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি, বাংলাদেশের ৩৫০ জন পুলিশ কর্মকর্তার জন্য প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল অংশীদারত্ব ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সবুজ অংশীদারত্ব, সমুদ্র সহযোগিতার অন্তর্গত সুনীল অর্থনীতি বা ‘ব্লু ইকোনমি’, ও বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ সমঝোতা স্মারক অন্যতম। এরমধ্যে অনেক বেশ কিছু চুক্তিতে জনগণ সরাসরি দ্রুতই উপকৃত হবে। প্রতিবছর বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারত যায়, ভিসা প্রাপ্তির বিলম্বের অভিযোগ ছিল। কিন্তু ই-মেডিকেল ভিসার ফলে এখন ভিসা প্রাপ্তি দ্রুত ও সহজ হবে। রংপুরে সহকারি হাইকমিশন দপ্তর স্থাপনের ফলে উত্তরবঙ্গের মানুষের ভিসা প্রাপ্তির ভোগান্তি কমাবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ পেতে বাধা কাটবে। তিস্তা জট খুলবে।

রেল ট্রানজিট নিয়ে একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে। রেল সমঝোতা স্মারকের মধ্যে আছে, রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু, গেদে-দর্শনা ও হলদিবাড়ী-চিলাহাটির দলগাঁও পর্যন্ত মালগাড়ি চালানো, ভারতের সহায়তায় সিরাজগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো তৈরি করা। কথায় আছে, যাকে দেখতে নারী, তার চলন বাঁকা। বাংলাদেশ – ভারত সুসম্পর্ক একশ্রেণির দল কিংবা লোক সহ্য করতে পারে না। তারাই সবকিছুতে দোষ খোঁজ, দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায়। কিন্তু তারা সুকৌশলে আসল সত্য এড়িয়ে যায়। ভারত তো ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশকে ট্রানজিট দিয়েছে। বিনা মাশুলে তাদের স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের পণ্যবাহী ট্রাক নেপাল ও ভুটানে সরাসরি যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এরফলে সেখানে বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারিত হবে। অথচ এ নিয়ে ভারতের কোনো বিরোধীদল প্রশ্ন তুলেনি, দেশ বিক্রির অজুহাত খাঁড়া করেনি।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট -ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি নতুন নয়। এটি স্বাক্ষরিত হয় ২০১০ সালে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালে । দু-দেশের মধ্যকার নৌ প্রটোকলের মাধ্যমে কলকাতা থেকে আশুগঞ্জ নৌ বন্দর ব্যবহার করে আখাউড়া -আগরতলা পর্যন্ত সড়কপথে ভারতীয় পণ্য পরিবহন এবং ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে কার্যক্রম চালু হয়েছে। ভারত থেকে জাহাজে এসে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভেতর আটটি রুট দিয়ে চারটি স্থল বন্দর হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে নেওয়ার কাজ হলো ট্রান্সশিপমেন্ট। ঠিক একই ভাবে ঐ সব রাজ্যগুলোর পণ্য বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে আবার ভারতে যায়। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখন্ডে পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী যানবাহন ব্যবহার করতে হয়। এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অন্যদিকে ট্রানজিট হলো একদেশের পণ্যবাহী যানবাহন অন্যদেশ কিংবা তৃতীয় দেশে সরাসরি ঢুকতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার ট্রান্সশিপমেন্ট করতে হবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরে রেল ট্রানজিট নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে এখন ভারতের রেলগাড়ী বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারতের পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ স্থাপিত করতে পারবে। যা এতদিন বাংলাদেশের সীমান্তে এসে ইঞ্জিন পরিবর্তন করে বাংলাদেশের ভূখন্ডে বাংলাদেশের ইঞ্জিনে চলতো। রেল ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের সুবিধা হলো ট্রানজিট ব্যবস্থাকে কার্যকরী করতে ভারত নিজের স্বার্থেই অবকাঠামো খাতে, যেমন রাস্তা-সেতু সহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করবে। বন্দর সমুহের সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ ও অর্থায়ন করবে। যার কারণে ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটবে। বন্দরের মাশুল আদায় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। আন্তঃবানিজ্য বাড়াতে ট্রানজিট ও ট্রানশীপমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অন্যদিকে ভারতের সুবিধা হলো ভারতের পশ্চিম পাশের রাজ্যগুলো থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হবে। যার ফলে পণ্য পরিবহনে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। অর্থাৎ ট্রানজিট চালু হলে উভয় দেশই লাভবান হবে।

ভারতকে রেলপথ ট্রানজিট সুবিধা দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও স্বকীয়তা বজায় রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করছি। এই যে আমরা সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম, তাতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে আমাদের দেশের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কি?রেল যেগুলো বন্ধ ছিল তা আমরা আস্তে আস্তে খুলে দিযেছি। যাতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। মানুষ উপকৃত হচ্ছে, তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যে সমস্ত জিনিস আমাদের দেশে নেই তা আনার সুযোগ হচ্ছে। অর্থনীতিতে এটা সুবিধা হচ্ছে। আমরা কি চার দিকে দরজা বন্ধ করে থাকব? সেটা হয় না। ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডারই নেই, তাই বলে একটা দেশ আরেকটা দেশের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে?একসময় সেখানে নো ম্যানস ল্যান্ড ছিল। এখন কিন্তু সেসব কিছু নেই। এখন সেসব উঠে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কেন বাধা দিয়ে রাখব?’ এছাড়া সংসদ অধিবেশনেও প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী?বরং দেশের লাভ, জনগণের লাভ।

বিজ্ঞাপন

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ট্রানজিট নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা থাকতে পারেনা। ট্রানজিট দিলেই যদি দেশ বিক্রি হয় তাহলে ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানির মতো শক্তিশালী দেশগুলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলোকে দখল করে নিত।

বাংলাদেশ ২০০৭ সালে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে যুক্ত হওয়ার চুক্তি করেছে। এ নেটওয়ার্কের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের মতো দেশে সহজে পণ্য পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। এই রেল নেটওয়ার্কে যোগ দিতে পদ্মাসেতুতে দ্বিতলা রেল সংযোগ, ঢাকা -কক্সবাজার -মায়ানমার সীমান্তের ঘুনধুম পর্যন্ত রেলপথের মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। বাংলাদেশকে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে হলে ভারতের সাথে ট্রানজিট চুক্তি ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ বাংলাদেশের স্থল ভাগের প্রায় পুরোটা ভারত দ্বারা বেষ্টিত। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলে এটা শুধু দু-দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেনা, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে। দ্বিপক্ষীয় বানিজ্যের বাইরে একটা আঞ্চলিক গেটওয়ে তৈরি হবে।

১৯৭৫ পরবর্তী নির্বাচন গুলোতে বিএনপি-জামায়াত মিথ্যা ভারতীয় আগ্রাসনের জুজু দেখিয়ে বারবার জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ হিন্দু রাষ্ট্র হবে, মসজিদে আজানের পরিবর্তে উলুধ্বনি শোনা যাবে, শান্তি চুক্তির ফলে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বলে কিছু থাকবেনা, আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিবে। জনগণ আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে এগুলো সবই ছিল বিএনপির রাজনৈতিক ভন্ডামি।

২০০১ সালে নির্বাচনের আগে বিএনপি ভারতের কাছে মুসলেকা দিয়েছিল তারা ক্ষমতায় গেলে ভারতীয় বিছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় ও জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিবেনা। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর তারা প্রতিশ্রুতি রাখেনি, তখন ভারতীয় বিছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে ভারতে জঙ্গি হামলা চালানো হত। আর এই কাজে সহযোগিতা করতো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী থেকে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল বাংলাদেশের অস্ত্র চোরাচালানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে। ধরা পড়ে ১০ ট্রাক অত্যাধুনিক অস্ত্র। যা ভারতের বিছিন্নতাবাদীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চীন থেকে আনা হয়েছিল। চট্রগ্রাম থেকে স্থল পথে ভারতের বিছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার কাছে প্রেরণের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি টের পেয়ে যায়, তাদের চাপে তৎকালীন সরকার অস্ত্র উদ্ধার করতে বাধ্য হয়। অথচ আদালতের রায়ে প্রমাণিত, এ কাজে জড়িত ছিল তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সহ গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দরা। আজ তারাই সার্বভৌমত্বের কথা বলে?এ যেন ভূতের মূখে রাম নাম।

বিজ্ঞাপন

ট্রানজিট নিয়ে ভারতের দ্বিচারিতা নতুন নয়। যখন ২০১০ ট্রানজিট -ট্রানশীপমেন্ট প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়, তখন তারা বলেছিল যদি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয় তাহলে তারা ট্রানজিটের পক্ষে। এছাড়া ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেতা হিসেবে ভারত সফর করেছিলেন। তখন তিনি অঙ্গীকার করেছিলেন ক্ষমতায় গেলে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিবেন। এছাড়াও ভারতীয় বিছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশে স্থান দিবে না। বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য সব শর্ত মেনে নেয়, আবার পরবর্তীতে বেমালুম ভুলে যায়। বিগত তিনটি নির্বাচনের পূর্বে দেখা গেছে বিএনপি ভারতের সাথে সম্পর্ক করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, কিন্তু নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেয়ে আবার সমালোচনা মূখর বক্তব্য শুরু করে। এবারও জাতীয় নির্বাচন বর্জনের পর নতুন করে ভারত বিরোধিতায় সোচ্চার হয় বিএনপি। তারা প্রথমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে ইন্ডিয়া বয়কটের প্রচারণা চালায়। যা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বর্জনের ডাক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন আবার রেল ট্রানজিট ইস্যু নিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। তাদের জনসমর্থনহীন চেষ্টা এবারও বুমেরাং হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, আর তার কন্যা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিবেন, এমন চিন্তা করা মূর্খের বাতুলতা ছাড়া কিছু নয়। বরং দেশরত্ন শেখ হাসিনার সময়েই ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য হিস্যা আদায় করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় ও মজবুত হয়েছে।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা ও কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন