বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনাকে ‘ইকেবানা’ উপহার পাঠালেন বাবা হারানো জাপানি কন্যা

July 4, 2024 | 10:13 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ’ইকেবানা’ উপহার পাঠিয়েছেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জাপানি নাগরিক হিরোশি তানাকার মেয়ে আতসুকো তানাকা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (জুলাই ৪) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এই উপহার গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এই উপহার এবং আতসুকো তানাকার একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেন।

’ইকেবানা’ হলো ফুল, পাতা, শাখা- প্রশাখার নান্দনিক ও শৈল্পিক উপস্থাপন। সৌন্দর্যের পাশাপাশি জাপানিজ এ শিল্পকলার পেছনে লুকিয়ে থাকে দার্শনিক ভাবধারা।

গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা চিঠিতে আতসুকো তানাকা লেখেন, ‘এই উপহারটি (ইকেবানা) তার মা নিজের হাতে তৈরি করেছেন। এই উপহারটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার প্রতীক।’ উপহারের ফুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রশান্তি নিয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আতসুকো তানাকা তার চিঠির শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং চলতি বছরের শুরুতে টানা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

গেল নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয় প্রসঙ্গে আতসুকো বলেন, “আপনার এই অর্জন আপনার নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার ‘ভিশনের’ ওপর বাংলাদেশের জনগণের আস্থা প্রমাণ।”

গত ৩ জুলাই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এর অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন উল্লেখ করেন তানাকা। আতসুকো তানাকা ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তাকে পাঠানো একটি চিঠির কথা স্মরণ করেন।

বিজ্ঞাপন

আতসুকো বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) যে চিঠি পাঠিয়েছেন সে চিঠি আমার হৃদয়ের ক্ষত নিবারণের অনেক বড় উৎস।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা একজন পেশাদার শিল্পী এবং তিনি নিজের হাতে এটি (ইকেবানা) বানিয়েছেন।’ ফুলের এই উপহারটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রশান্তি দিবে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এই উপহারটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার প্রতীক (টোকেন) উল্লেখ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি কামনা করেন তানাকা। আতসুকো বাংলাদেশে ‘শান্তির শিক্ষা’ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “জাইকা বাংলাদেশ অফিসে এক সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশ কীভাবে পাঠ্য কারিকুলামে ‘শান্তি শিক্ষা’ সংযুক্ত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছে।”

কারিকুলামের এই শান্তি শিক্ষাকে সক্রিয়ভাবে প্রসারে মি. ইচিগুচি একটি শান্তি রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করার পরামর্শ দেন বলে জানান আতসুকো তানাকা। তানাকা বলেন, ‘পুরস্কার বিজয়ী প্রবন্ধ ঢাকা মেট্রোতে প্রদর্শন করা হবে। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের শান্তির বিষয়ে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সমাজ সেবাতেও উৎসাহিত করবে।’

তানাকা আরও বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোতে প্রদর্শিত এই প্রবন্ধ তার বাবার মতো হোলি আর্টিজানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মাকে প্রশান্তি দেবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল চেষ্টায় সফলতা কামনা করে চিঠি শেষ করেন আতসুকো।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানে হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে নয় জন ইতালির, সাত জন জাপানের, একজন ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। জঙ্গিদের গুলিতে সেদিন দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।

জাপানি নাগরিকের মধ্যে ছয় জনই ছিলেন ঢাকার মেট্রো রেল প্রকল্পের পরামর্শক। আতসুকো তানাকার বাবা হিরোশি তানাকা তাদেরই একজন। এছাড়া পরবর্তী সময়ে হোলি আর্টিজানে জিম্মিদের উদ্ধারে পরিচালিত কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন