বিজ্ঞাপন

৮৯ মিনিটে সমতা জার্মানির, ১১৯ মিনিটের গোলে সেমিতে স্পেন

July 6, 2024 | 12:40 am

স্পোর্টস ডেস্ক

ফাইনালের আগেই এ যেন আরেক ফাইনাল। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালেই মুখোমুখি স্বাগতিক জার্মানি আর স্পেন। দুই সাবেক চ্যাম্পিয়নদের লড়াই হলো হাড্ডাহাড্ডি। ৫১ মিনিটে অলমোর গোলে লিড নেয় স্পেন। আর নির্ধারিত সময়ের ৮৯তম মিনিটে ভ্রিটজের গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ের ১১৯তম মিনিটে মেরিনোর গোল করে স্পেনকে জয় এনে দেন।

বিজ্ঞাপন

জার্মানির মাটিতে তাদের বিপক্ষে ৮৯ বছর পর জিতল স্পেন। ১৯৩৫ সালে দুই দলের প্রথম দেখায় প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছিল স্প্যানিশরা। এরপর তাদের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে আটবারের সাক্ষাতে পাঁচটি জয়ের সঙ্গে তিনটি ড্র করেছিল জার্মানরা।

শুক্রবার (৫ জুলাই) স্টুটগার্টের মার্সিডিজ বেঞ্জ অ্যারেনায় দানি অলমোর গোলে ম্যাচের ৫১তম মিনিটে লিড নেয় স্পেন। এরপর গোটা ম্যাচজুড়ে লড়াই করেও ফিরতে পারছিল না জার্মানি। তবে ৮৯তম মিনিটে এসে ফ্লোরিয়ান ভ্রিটজের গোলে সমতায় ফেরে জার্মানরা। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়েও। সেখানেও বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করে স্বাগতিকরা। তবে ম্যাচের ১১৯তম মিনিটে অলমোর পাস থেকে বদলি হিসেবে নামা মিকেল মেরিনো এনে দেন স্পেনের জয়সূচক গোল। এতেই ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে স্প্যানিশরা। আর ঘরের মাঠেই জার্মানদের দর্শক বানিয়েছে তারা।

এদিকে প্রথম ইউরোর শেষ আট থেকে বাদ পড়ল জার্মানি। এর আগে চারবার (১৯৯৬, ২০০৮, ২০১২ ও ২০১৬) এই পর্যায়ে পৌঁছে প্রতিবারই তারা পেয়েছিল সেমির টিকিট। শুধু তাই নয়, ইউরোপের ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসরে প্রথমবারের মতো স্বাগতিক দল ছিটকে পড়ল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। এর আগে চারবারই (১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড, ২০০০ সালে নেদারল্যান্ডস, ২০০৪ সালে পর্তুগাল ও ২০১৬ সালে ফ্রান্স) আয়োজকরা সেমি নিশ্চিত করেছিল।

বিজ্ঞাপন

পুরো ম্যাচে ৪৮ শতাংশ সময় পজেশন রেখে গোলের জন্য মোট ১৮টি শট নেয় স্পেন, যার ৬টি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমার্ধে গোলের জন্য মাত্র তিনটি শট নেওয়া জার্মানি বাকি সময়ে শট নেয় আরও ২০টি, লক্ষ্যে থাকে সব মিলিয়ে ৫টি।

ম্যাচের ২১তম মিনিটে প্রথমবার স্পেন গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারে জার্মানি। যদিও কাই হাভার্টজের হেড ঠেকাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি উনাই সিমনের। ৩৪তম মিনিটে আন্টোনিও রুডিগারর উঁচু করে বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে শট নেন হাভার্টজ, এবারও তা ব্যর্থ করে দেন সিমন। ৩৭তম মিনিটে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্টে উইলিয়ামসের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন নয়ার, যদিও অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। তিন মিনিট পর ২৫ গজ দূর থেকে ওলমোর জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ৩৮ বছর বয়সী নয়ার।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫১তম মিনিটে ‘ডেডলক’ ভাঙেন পেদ্রির বদলি নামা অলমো। বক্সে ঢুকে দারুণ পাস দেন ইয়ামাল, ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন লাইপজিগ ফরোয়ার্ড ওলমো। আসরে তার দ্বিতীয় গোল এটি। ইউরোর ইতিহাসে প্রথম টিনএজার হিসেবে এক আসরে তিনটি অ্যাসিস্ট করলেন ১৬ বছর বয়সী ইয়ামাল।

বিজ্ঞাপন

পিছিয়ে পড়ার পরেও দারুণভাবে আক্রমণ সাজাতে থাকে জার্মানি। জামাল মুসিয়ালা, নিকলাস ফুলক্রুগের দুটি লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের পর ৭০তম মিনিটে দুর্দান্ত সেভে ব্যবধানে ধরে রাখেন সিমন। বক্সের বাইরে থেকে হোবার্ত আনড্রিসের প্রচেষ্টা ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। ৭৭তম মিনিটে স্বাগতিকদের সামনে বাঁধ সাধে পোস্ট। ডান দিক থেকে সতীর্থের পাস পেয়ে বক্সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলেও শট নেন ফুলক্রুগ, গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল পোস্টে লাগে।

খেলা নির্ধারিত ৯০ মিনিটের দিকে গড়াচ্ছিল আর স্পেন জয়ের সুবাস পাচ্ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে সমতার স্বস্তি ফেরে স্বাগতিক শিবিরে। মাক্সিমিলিয়ানের ক্রসে দূরের পোস্টে লাফিয়ে দারুণ হেডে বল ভেতরে পাঠান জসুয়া কিমিখ, দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা ফ্লোরিয়ান ভ্রিটজের শট পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। আর তাতেই সমতায় ফিরে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে টেনে নেয় জার্মানি।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরেকটি গোলের সুযোগ পান ভ্রিটজ। টমাস মুলারের পাসে বায়ার লেভারকুজেন মিডফিল্ডারের শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। ১০৭তম মিনিটে বক্সে মুসিয়ালার শট স্পেনের মার্ক কুকুরেইয়ার হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে জার্মানির খেলোয়াড়রা। রেফারির পেনাল্টি না দেওয়াটা ছিল বিস্ময়কর। ১১৭তম মিনিটে কিমিখের ক্রসে বক্সে ফুয়েলখুগের হেড ঝাঁপিয়ে আটকান সিমন।

ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়াবে বলে মনে হচ্ছিল যখন, ঠিক তখনই জার্মানির জালে বল পাঠান মেরিনো। ওলমোর ক্রসে বক্সে ফাঁকায় হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ৮০তম মিনিটে বদলি নামা এই মিডফিল্ডার। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে মুসিয়ালাকে পেছন থেকে টেনে ধরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দানি কারভাহাল। একটু পরই বাজে শেষ বাঁশি। উচ্ছ্বাসে মাতে স্পেন।

বিজ্ঞাপন

তাতেই জার্মানি শিবিরে তখন শুধুই একরাশ হতাশা। ঘরের মাঠের আসরে শেষ আট থেকে বিদায় নেওয়ার বিষাদ সঙ্গী হলো তাদের। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর দলটির আরেকটি বড় টুর্নামেন্ট জয়ের অপেক্ষা বেড়ে গেল আরও।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্রান্স অথবা পর্তুগালের মুখোমুখি হবে তিনবারের ইউরো জয়ী স্পেন।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন