বিজ্ঞাপন

কুষ্টিয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ ১১ শিক্ষকের

July 10, 2024 | 10:53 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার আলাউদ্দিন নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ১১ শিক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেছেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক দুর্নীতিবাজ এবং স্বেচ্ছচারিতার মাধ্যমে স্কুল পরিচালনা করার চেষ্টা করেন এবং সবাইকে তিনি কথায়-কথায় হুমকি দেন। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষক কথা বললে তিনি তাকে চাকরিচ্যুত করারও হুমকি দেন।

ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষরের পর চেকের টাকার অংক টেম্পারিং করার অভিযোগ ওঠে। তৎকালীন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. টিপু সুলতান তাকে শোকজ করেন। তিনি নিজে বাঁচতে টিপু সুলতানের হাত পা ধরে ক্ষমা প্রদান করে রক্ষা পান। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় কর্ত্তৃক প্রদত্ত অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

তৎকালীন জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বিষয়টি তদন্ত করতে দেন জেলা শিক্ষা অফিসারকে। জেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান এবং জেলা প্রশাসককে তদন্ত রিপোর্ট দেন। জেলা প্রশাসক জহির রায়হান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরকে ২০১৮ সালে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক জহির রায়হান পরবর্তী সময়ে দুদকের মহাপরিচালক ছিলেন তার রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন করে তদন্ত করার আবেদন করেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তদন্ত কমিটি আবারো তদন্ত করেন।

১২/০৮/২০২০ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দুই বার তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরও আজও প্রধান শিক্ষক বহাল তবিয়তে। সম্প্রতি সময়ে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত রিপোর্ট তার বিরুদ্ধে গেলেও তার কিছু না হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছাচারিতার চরমে পৌঁছেছেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি সময়ে কোনো রকম শোকজ ছাড়া বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক শাহিন উদ্দিনকে গত ২৬/০৬/২০২৪ তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। ৩০/০৬/২০০৪ তারিখে শিক্ষক শাহিন উদ্দিন তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের রেজুলেশন চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। অপরদিকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি আহবায়ক কমিটি। কমিটিতে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি ছিলেন। যার নাম আবু সালেহে। যার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মহানবী (সাঃ) কে কটূক্তি করার অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলায় তিনি কারাভোগ করেন।

কারাভোগকারী আবু সালেহে কয়া চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের এমপিওভুক্ত শিক্ষক অপরদিকে কুমারখালী আলাউদ্দিন নগর বালিকা বিদ্যালয়েরও এমপিওভুক্ত শিক্ষক। একই ব্যক্তি সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে দুই জায়গায় কর্মরত ছিলেন। তিনি মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করার পর তার বিরুদ্ধে যখন ধর্মানুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগ ওঠে তখন তিনি আলাউদ্দিননগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তেফা দেন।

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক আবু সালেহের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি। কথা বলতে পারবেন না।

অপরদিকে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির প্রমাণ করেছিলেন সেটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

শাহিন উদ্দিন নামের শিক্ষককে বহিষ্কারের ব্যাপারে বলেন, এটা ম্যানিজং কমিটির সভাপতির কাজ এব্যাপারে আমার কোনো দায় নেই।

এদিকে, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেজাউর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক শাহিন উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিরুদ্ধাচারণ করার কারণে আমাকে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ দিয়েছেন। যা আইনগতভাবে তিনি পারেন না। কোনো রকম শোকজ ছাড়া তিনি সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ করেছেন। প্রধান শিক্ষক সভাপতির দোহাই দিয়ে বাঁচতে চাইছেন। কিন্তু তিনি তার নোটিশে সভাপতি নির্দেশক্রমে বা সভাপতির সম্মতিক্রমে এই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেননি। কোন রেজুলেশন ছাড়াই তিনি কাজটি করেছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমি আদালতে মামলা দায়ের করব।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , , , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন