বিজ্ঞাপন

কোটার অনুপাত কমাতে-বাড়াতে পারবে সরকার: হাইকোর্ট

July 11, 2024 | 7:14 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করে সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। এতে বলা হয়েছে, সরকার প্রয়োজনে কোটার অনুপাত বা শতাংশ কমাতে, বাড়াতে বা পরিবর্তন করতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন। একই হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের ওই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন।

রায়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী, জাতিগত সখ্যালঘু বা ক্ষুদ্র ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও কোটা পদ্ধতি বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন- বৃষ্টি-ব্যারিকেড সব ডিঙিয়ে শাহবাগ অবরোধ কোটাবিরোধীদের

বিজ্ঞাপন

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে কোটা পুনর্বহাল করতে বলেছেন হাইকোর্ট। আরও বলেছেন, হাইকোর্টের উল্লেখ করা বিভিন্ন কোটার জন্য অনুপাত বা শতাংশ কমানো, বাড়ানো বা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে এই রায় বাধা হবে না। পাশাপাশি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ মেধা তালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দিতে পারবেন।

এদিকে হাইকোর্টের ৫ জুনের রায়ের পর আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। গত ৯ জুন চেম্বার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তবে ওই দিন (৪ জুলাই) আপিল বিভাগ এ আবেদনের শুনানি নেননি। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও কোটা সংস্কার নিয়ে আবেদন করা হয় আদালতে।

গতকাল বুধবার (১০ জুলাই) রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি নেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। শুনানি শেষে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের (সাবেক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) জারি করেন আপিল বিভাগ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বানও জানান।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করে বৃহস্পতিবারও শাহবাগ চত্বর অবরুদ্ধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে ৫ জুন হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই ফের আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় কোটা নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়। ১ জুলাই থেকে সারা দেশেই শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এর মধ্যে ৪ জুলাই থেকে তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অধীনে সর্বাত্মক অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা জারির পরও আন্দোলকারীরা বলছেন, আদালতের রায় বা পরিপত্র নয়, কমিশন গঠনের মাধ্যমে পর্যালোচনার মাধ্যমে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চান তারা। তাদের এই দাবি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগে কাছে। নির্বাহী বিভাগ কমিশন গঠন করে কোটা সংস্কারের উদ্যোগ নিলে বা যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য কোনো আশ্বাস দিলে তবেই তারা আন্দোলন স্থগিতের কথা ভাববেন।

আন্দোলনে অনড় এ অবস্থানের প্রতিফলন দেখা গেছে আজ বৃহস্পতিবারও। এ দিনও বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা শাহবাগের দিকে এগিয়ে যান। পুলিশ শাহবাগ থানার সামনে ব্যারিকেড তৈরি করে তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ চত্বর দখলে নিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

কেবল শাহবাগ নয়, রাজধানীর তেজগাঁও, মহাখালী, ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, চানখাঁরপুল, আগারগাঁও এলাকাসহ ঢাকার বাইরে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকাতেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন