বিজ্ঞাপন

পাহাড় ধসে ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের, ১ মাসে ১৮ মৃত্যু

July 12, 2024 | 9:33 am

ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই শিশুসহ চারজন মারা গেছে। আহত হয়েছে ৩ জন। এই নিয়ে এক মাসের মধ্যে মারা গেছে ১৮ জন। তার মধ্যে শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই মারা গেছেন ১০ জন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া টানা বৃষ্টিতে অন্তত ৫০ টি পয়েন্টে পাহাড় ধসে ৩০টির অধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে। এর পরেও পাহাড় ছাড়ছে না লোকজন। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে- বৃষ্টিপাত আরো ক’দিন থাকবে।

টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে হতাহতের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সর্বশেষ শুক্রবার ভোর রাতে শহরের সৈকত পাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে এক শিশু নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে।

এর আগে, পাহাড় ধসে বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় ১ শিশু ও এবিসি ঘোনা এলাকায় এক নারী এবং বিকেলে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার পাতাবুনিয়া এলাকায় আরেক নারী নিহত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নিহতরা হলেন, শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫), সৈকত পাড়ার মো. সেলিমের স্কুল পড়–য়া মেয়ে মীম (১৩) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরীপাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে একের পর এক পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া গত ১৯ জুন ও ৩ জুলাই উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পৃথক পাহাড় ধসে ১০ জন। পরে ২১ জুন কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনায় পাহাড়ের মাঠ চাপায় ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এর পর আরো দুই জন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় ৪ জন সহ মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারনা চালাচ্ছে।

পাহাড় ধসে ঘটনাস্থলের কাউন্সিলর (৬ নং ওয়ার্ড) ওমর ছিদ্দিক লালু জানান, জেলা প্রশাসক ও পৌরসভা থেকে প্রতিনিয়ত মাইকিং চলছে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কে শুনে কার কথা। তারা জীবন দিতে রাজি এর পরেও পাহাড় ছাড়তে রাজী নন। পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান এই কাউন্সিলর।

পাহাড়ে অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হক জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরাতে মাইকিং এর পাশাপাশি সচেতন করা হচ্ছে। বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড় দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, গতকাল ভোর ৬ টা থেকে আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০৯ মিলিমিটার। আজ ও কাল দুদিনই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন