বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সব দিক থেকেই ডুবে গেছে: আমীর খসরু

July 12, 2024 | 6:25 pm

স্পেশাল করেপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ সব দিক থেকেই ডুবে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গণতন্ত্র মঞ্চের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

অবিরাম বৃষ্টিতে রাজধানীর জলাবদ্ধতার প্রসঙ্গ টেনে আমীর খসরু বলেন, ‘দেশ আর্থিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে তো এমনি ডুবে গেছে। এখন আপনারা পানির ডুবা দেখতে পারছেন। প্রকৃত পক্ষে সবদিক থেকেই বাংলাদেশ ডুবে গেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের রেজিমের কারণে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহর তো ডুবে যাবে। মেধাবী লোকজন তো আসতে পারছে না সামনের দিকে। যারা কাজ-কর্ম করেন এই প্ল্যানিং থেকে শুরু করে এটা বাস্তবায়ন পর্যন্ত। সেখানে তো কিছু মেধাবী লোককে উঠে আসতে হবে। সেটা তো হচ্ছে না। দলীয় লোকজন দিয়ে যদি চালানো হয় তাহলে ঢাকা শহর ডুববে এবং সারা বাংলাদেশও ডুববে।’

বিজ্ঞাপন

কোটা আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খসরু বলেন, ‘কোটা বিষয়ে আমার বক্তব্য স্পষ্ট, এটি বাংলাদেশের মেধাবীদের ধবংস করতে চায়। যেভাবে তারা (আওয়ামী লীগ) সরকার চালাচ্ছে, যেভাবে শাসন ব্যবস্থা চালাচ্ছে। এরকম চল তে থাকলে আগামী দিনে মেধাবী বাংলাদেশের কোনো ‍সুযোগ নাই, বাংলাদেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘আজকের এই রেজিম ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে একটা মেধাবী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, এটা আমার মনে হচ্ছে না। মেধাবী রাষ্ট্র হয়ত এরকম একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে খুব একটা সুযোগ নাও হতে পারে। কারণ, মেধাবীরা সত্য কথা বলে, মেধাবীরা সত্য পথে চলে, মেধাবীরা প্রতিবাদ করে, মেধাবীরা প্রতিরোধ করে। আমি কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্রতি একটু অনুরোধ করব, তারা যেভাবে কোটার জন্য লড়াই করছে তাদেরকে তাদের ভোটের জন্য এভাবে লড়াই করতে হবে, তাদেরকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যে এভাবে লড়াই করতে হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা যে কর্মসূচি দিয়েছি ৩১ দফার, এই ৩১ দফা একটা চৎমকার কর্মসূচি। কিন্তু কি কি কনস্টিটিউশনার পরিবর্তন আনলে মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার পাবে সেই কথা কি মানুষ ভালো করে ঝোঝে? সাধারণ মানুষ বরংঞ্চ সিএমএম কোর্টে গেলে বুঝা যায়- কত বড় অনাচার চলছে। কারণ, তার উচিত জামিন, সেই জামিন দেয় না। কারণ ঘুষ না দিলে কোনো কাজ হয় না। তারা মনে করে এটার কী রকম করে পরিবর্তন করা যায়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাদের এজন্য আরও কথা আসছে। যেরকম করে যুক্তফ্রন্ট হয়েছে, যেরকম করে কংগ্রেস কর্মসূচি দিয়েছে, যেরকম করে কিজরিওয়াল দিয়েছে, সেই রকম করে এমন কর্মসূচি হতে হবে। এমনও হতে পারে এই যে কোটার দাবিটাও আমাদের দাবিনামার মধ্যে আসতে পারে, যাতে ছাত্রদেরও আমরা অন্তর্ভুক্ত করতে পারি এবং বড় আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে পারি।’

মান্না বলেন, ‘আমাদের সবাইকে মিলে লড়াইটা করতে হবে। সেই লড়াইটা হচ্ছে এই সরকারের পতন। যেরকম করে ছাত্ররা গতকাল ব্যারিকেডে ভেঙেছে, সেরকম করে লড়াইয়ের চিন্তা করি।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ৫৩/৫৪ বছরে পরে একটা জাতি রাষ্ট্র তাদের নিয়োগ পদ্ধতি কি হবে, মেধার ভিত্তিতে যোগ্যতার ভিত্তিকে। এটা নিয়ে জাতির মধ্যে জাতীয় ঐক্যমত তৈরি হয়েছে। কোটা আন্দোলন ইতিমধ্যেই জনগণের মন স্পর্শ করেছে। ছাত্র-তরুণরা বাস্তবে সমগ্র জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটা মামলা মোকাদ্দমার বিষয় না। এটা রাজনৈতিক বিষয়, এটা একটা প্রশাসনিক বিষয়। সুতরাং আজকে সরকারকে নীতিগতভাবে কোটা সংস্কারের দাবি গ্রহণ করে খুব দ্রুত একটা কমিশন গঠন করে কীভাবে মেধার ভিত্তিতে আমাদের চাকুরি নিয়োগ হবে সে ব্যাপারে একটা কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি মিয়া মসিউজ্জামান, অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন