বিজ্ঞাপন

১১ বছরে রাঙ্গামাটিতে জনসংখ্যা বেড়েছে ৫১ হাজার, চাপ বাড়ছে শহরে

July 12, 2024 | 9:29 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটির দশ উপজেলার জনসংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭৯ জন। ২০২২ সালের জনশুমারি তথ্যে জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৬ জনে। সে হিসাবে বিগত ১১ বছরে রাঙ্গামাটিতে জনসংখ্যা বেড়েছে ৫১ হাজার ৬০৭ জন।

বিজ্ঞাপন

২০১১ সালে পল্লী বা গ্রাম এলাকায় জনসংখ্যার হার ছিল ৭৩ দশমিক ২২ শতাংশ আর শহুরাঞ্চলে ছিল ২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২২ সালে জেলায় গ্রামাঞ্চলে ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ আর শহুরাঞ্চলের হার ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ১১ বছরে পাহাড়ি জেলাটির শহর এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়েছে।

দেশে সার্বিকভাবে শহুরাঞ্চলে জনসংখ্যা হার ৩১ শতাংশ হলেও রাঙ্গামাটিতে সেটা ৪৭ শতাংশ হয়েছে। এতে করে বিগত এক দশকে পাহাড়ের এই জেলাটির মানুষের গ্রাম ছেড়ে শহর আসার প্রনবতা বৃদ্ধিতে চাপ বাড়ছে শহরে।

চলতি বছরের জুনে জেলাভিত্তিক জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ এর তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনায় রাঙ্গামাটির জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সাল পর্যন্ত রাঙ্গামাটিতে পুরুষের সংখ্যা তিন লাখ ৩৩ হাজার ২০৪ ও নারীর সংখ্যা তিন লাখ ১৪ হাজার ৩৫৬ জন। আর জেলায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ আছেন ২৬ জন। মোট জনসংখ্যার ৫১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পুরুষ ও ৪৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ নারী। যদিও শহরা এলাকায় নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যাই বেশি।

জরিপ অনুযায়ী রাঙ্গামাটি সদরে সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে; সংখ্যায় যা এক লাখ ৪৬ হাজার ৫৯১ জন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম জনসংখ্যা জুরাছড়িতে ২৬ হাজার ৯৩২ জন। তবে জেলায় জনসংখ্যার বৃদ্ধি হারে পুরুষের চেয়ে নারীর হার বেশি। বয়স অনুপাতে জেলায় সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ১৫-১৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণী। যা সংখ্যায় ৩৩ হাজার ৩৭০ জন, শতকরায় ১০ শতাংশের বেশি।

জরিপের তথ্যে উল্লেখ আছে, বৈবাহিক অবস্থার ক্ষেত্রে জেলায় ১০ বছরের চেয়ে বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ৬৩ শতাংশ বিবাহিত ও প্রায় ৩১ শতাংশ অবিবাহিত; বাকিরা বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে বিবাহিত পুরুষের হার ৬১ শতাংশ ও নারীর হার ৬৫ শতাংশ। মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিবাহিতের হার জুরাছড়িতে এবং সবচেয়ে কম রাঙ্গামাটি সদরে। জুরাছড়িতে বিবাহিতের হার ৬৭ শতাংশ এবং রাঙ্গামাটি সদরে ৬০ শতাংশ। তবে পুরো জেলায় অবিবাহিতদের মধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষের হার বেশি।

বিজ্ঞাপন

ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার হিসাবে রাঙ্গামাটিতে মুসলিম দুই লাখ ৩৪ হাজার ৮৩৪ জন, হিন্দু ৩৩ হাজার ১১২ জন, খ্রিষ্টান আট হাজার ৫৪৭ জন এবং বৌদ্ধ আছেন তিন লাখ ৭০ হাজার ৭৯৩ জন। শতকরায় মুসলিম ৩৬ দশমিক ২৬, হিন্দু ৫ দশমিক ১১, খ্রিষ্টান ১ দশমিক ৩২ এবং বৌদ্ধ ৫৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। জেলায় প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৯১ জন; যা মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

শিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিকের উপরে হলেও রাঙ্গামাটিতে সাক্ষরতার হার ৭১ দশমিক ৪১ শতাংশ। জেলায় পুরুষের সাক্ষরতার হার ৭৭ ও নারীর সাক্ষরতার হার ৬৪ শতাংশ।

তবে গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরে মোট জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার বেশি। গ্রামে ৬৮ শতাংশ হলেও শহরে সাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশের উপরে। উপজেলার মধ্যে সাক্ষরতার হার সবচেয়ে রাঙ্গামাটি সদরে ৮০ শতাংশ ও সবচেয়ে কম বিলাইছড়িতে ৫৫ শতাংশ। জেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে কাজে নিয়োজিত ৩৬ শতাংশ, গৃহস্থালি কাজে নিয়োজিত ২৭ শতাংশ। এর বাইরে ৩৪ শতাংশ মানুষ কোনো কাজ করছে না। আর ২ শতাংশ মানুষ কাজ খুঁজছে।

মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। জাতীয় পর্যায়ে যা প্রায় ৫৬ শতাংশ। বিদ্যুৎ সুবিধার ক্ষেত্রে জেলার ৯২ শতাংশ পরিবার (খানা) বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এলেও এর ৪৭ শতাংশ জাতীয় গ্রিড থেকে বাকি ৪২ শতাংশে এসেছে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে।

বিজ্ঞাপন

জেলায় প্রবাসী আয়ের সংখ্যা খুবই কম। চার হাজার ৫৪৮টি পরিবারের মানুষ প্রবাসী আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত যা মাত্র ৩ শতাংশ। তাও সেটি সদর ও কাউখালী উপজেলাতেই বেশি।

রাঙ্গামাটিতে চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৭৫টি; যা মোট পরিবারের মধ্যে প্রায় ২৭ শতাংশ। এছাড়া তিন সদস্য বিশিষ্ট ২২ শতাংশ ও পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ১৮ শতাংশ পরিবার রয়েছে।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন