July 13, 2024 | 1:04 pm
ফারজানা আকতার সুপর্ণা
চারদলীয় জোট সরকারের সময় খালেদা জিয়া বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে ৮০ জনকে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সরাসরি হাওয়া ভবনের তত্ত্বাবধানে ক্যাডার নিয়োগ পেতো- যা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। এমনকি বিসিএস পরীক্ষা নেওয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং সরকারি চাকরি যেন হয়ে উঠেছিল সোনার হরিণ।
আর নারীরা, যারা শাহবাগে আন্দোলন করছেন, আপনাদের নারী কোটা না থাকলে কতজন নিয়োগ পাবেন তার একটি ছোট ধারণা দিচ্ছি।
ইস্যু আপনার কতটুকু উপকারে আসছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এরপরে সিদ্ধান্ত নিন পড়ার টেবিলে ফিরবেন নাকি শাহবাগে।
কোটা সংস্কার হলো, কিন্তু আপনাদের পেছনে যারা ইন্ধন দিচ্ছিলেন তারা কী একবারও বলেননি নারী কোটা নারীদের ক্ষমতায়নে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। চিলে কান নিয়ে গেছে বলে কেবলই চিলের পিছনে ছোটাছুটি অত্যন্ত দুঃখজনক! ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পর পুলিশে চারজন এবং ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুইজন নারী সুযোগ পেয়েছেন। ২৩ জেলায় কোনো নারীই পুলিশের চাকরিতে সুযোগ পাননি। আর ৫০ জেলায় কোনো নারীই সরকারি চাকরির সুযোগ পাননি। যেখানে ২৬ শতাংশ নারীর সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হতো। যা বিগত বছরগুলো থেকে ১৯ শতাংশে এসে নেমেছে।
নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কতোটুকু এগিয়ে যাওয়া সম্ভব? আদালতের বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করছি না, কিন্তু যেখানে যৌক্তিক সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনার সুযোগ রয়েছে, সেখানে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ তৈরি করা কতোটুকু সমীচীন।
জনদুর্ভোগ তৈরি করে তো আলটিমেটলি পাবলিক সার্ভিসের কনসেপ্টটাই পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
জনদুর্ভোগ তৈরি করে জনগণের পাশে থাকার চাকরির জন্য আকুলতা নাকি একেকজন আগামীর মনস্টার হওয়ার চেষ্টা।
বাংলাদেশে মেধাবীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি ছিন্নমূল মানুষ থেকে শুরু করে নারী ডিসএবল, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক সকল শ্রেণির মানুষের কথা ভাবেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট নিরসন হয়েছে,সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে , মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে। নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। সরকার পাশে আছে, সরকারের সদিচ্ছা আছে বলেই আজ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অংশীদার হতে পারছে। তাই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে আস্থা রাখুন বর্তমান সরকারের উপর। অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে কর্মক্ষেত্রে অসুবিধা নয়, কর্মক্ষেত্রে গতিশীলতা প্রয়োজন। কাজেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা কালক্ষেপণ না করে ক্লাসে ফিরে আসুন। মেধাবী শিক্ষার্থী হলেই কিন্তু দায়িত্ব শেষ নয়, মানবিকতা মননে মগজে ধারণ করে চলাও কর্তব্য। একটি প্রজন্ম আমাদের কেবল দিয়েই এসেছে, দেশ পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি। ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন সোনার বাংলা পেয়েছি। যার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করলেই কেবল দেশের প্রতি কমিটমেন্ট তৈরি হয়।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামী প্রজন্মের বাংলাদেশ হবে স্বনির্ভর বাংলাদেশ। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে বিবেচনায় না রেখে বাংলাদেশকে চিন্তা করা সম্ভব নয়। অথচ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছে মাত্র ৮.৭ শতাংশ।
আওয়ামী লীগ সরকার কখনো জাতিকে নিরাশ করেনি। এদেশের যা উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে কেবল শেখ হাসিনা সরকারের মাধ্যমেই হয়েছে।
উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য স্মার্ট বাংলাদেশের অংশীদারই হলো তরুণ প্রজন্ম।
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা
সারাবাংলা/আইই