বিজ্ঞাপন

‘চব্বিশের রাজাকারদের’ বিচারের দাবি জানাল একাত্তরের শক্তি

July 15, 2024 | 3:38 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২০২৪ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে রাজাকার পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিতে পারে তারা দেশের স্বাধীনতার পক্ষের কেউ হতে পারে না। আর তাই যারাই নিজেদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষের থাকা অপশক্তির পরিচয় দিবে তারাই চব্বিশের রাজাকার। আর তাই তাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের শক্তি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এমন দাবি জানায় সংগঠনটি। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৭টায় রাজাকারদের কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘোষণাও দিয়েছে একাত্তরের শক্তি।

এ দিন সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে ‘তুমি কে, আমি কে-বাঙালি, বাঙালি’, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘আছিস যতো রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, তোরা যারা রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ —সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।

একইসঙ্গে রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের আহবানও জানানো হয় মানববন্ধনে।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা বলেন, রাজাকার হল মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে নিজেকে রাজাকার ঘোষণা করার সাহস করে কারা? ৩০ লাখ শহীদের রক্তের ভেজা বাংলাদেশে কারা এমন আস্ফালন দেখায়?

তিনি বলেন, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর পরিচয় দেশের স্বাধীনতার পক্ষের কোনো মানুষ দিতে পারে না। আর যারা বর্তমান সময়ে এমন পরিচয় দিবে তাদের পরিচয় একটাই। তারা হলো ২০২৪ সালের রাজাকার। তারা চব্বিশের রাজাকার। তাদের অতি দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই। যদি তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হয়ে থাকে তবে তাদের বহিষ্কারের দাবি জানাই।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে শহীদ পরিবারের সন্তান ও সাংবাদিক রহমান মুস্তাফিজ বলেন, রাজাকারের বিষয়টি একাত্তরেই মীমাংসা হয়েছে। ২০২৪ সালে এসেও যদি কেউ নিজেকে রাজাকার হিসেবে পরিচয় দেয়, তবে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন করে যারা কথা বলে তারা বাংলাদেশের সন্তান হতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা গেলো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকাশ্যে নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিয়ে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। যারা ঘৃণিত এই পরিচয় প্রকাশ্যে দিতে পারে তারা হলো চব্বিশের রাজাকার। আর তাই তাদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।

মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও সাংবাদিক মোরসালিন মিজান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর পরিচয় ঘৃণার। কেউ যদি সেই পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিয়ে থাকে তবে সেটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। কোনো পরিস্থিতিতেই এই পরিচয় স্বাধীন বাংলাদেশের কোনো নাগরিক দিতে পারে না।

তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রদ্রোহিতা যারা করেছে তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। তাদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানাই। এই দাবিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবে একাত্তরের শক্তি।

মানববন্ধনে অংশ নেন ডা. লে. কর্নেল (অব) কানিজ ফাতিমা সুলতানা, শরিফুল হাসান সুমন, জহির আহমেদ আসিফ, ডা. সুব্রত ঘোষ, রাজীব পোদ্দারসহ অন্যান্যরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, রোববার মধ্যরাতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে আপত্তিজনক কথা বলার পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার পরিচয়ে স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে শাহবাগে অবস্থান নেয় একাত্তরের শক্তি। এ সময় বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ২০২৪ সালের রাজাকারদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে প্রতিবাদী জমায়েতের শুরু করা হয়। পরবর্তীতে সকালের কর্মসূচি ঘোষণা জানিয়ে জমায়েত শেষ ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরের পর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার এর দাবি জানানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই রাতে ‘তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার’ ‘রাজাকার’সহ নানা স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের পাশাপাশি আন্দোলনে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা মিছিল সমাবেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে ভীতি সঞ্চারিত করে।

সারাবাংলা/এসবি/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন