বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী-ছাত্রলীগ পালটাপালটি হামলা

July 15, 2024 | 7:26 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করতে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর পালটাপালটি ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অন্তত তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুলাই) পালটাপালটি হামলার মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ করেন। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন।

ছাত্রলীগের হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। এছাড়া পালটাপালটি হামলার সময় ছোঁড়া ইটের আঘাতে সারাবাংলার আলোকচিত্রী শ্যামল নন্দী, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান রুনা আনসারিসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিন বিকেল ৪টার দিকে নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নেওয়া বেশিরভাগই নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে শহর অভিমুখী শাটল ট্রেন আটকে রাখায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বড় অংশ সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের আন্দোলন ব্যাহত করতে ছাত্রলীগ শাটল ট্রেন আটকে রাখে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ষোলশহর রেলস্টেশনে অবস্থানের সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। স্টেশনে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনে সড়কে আসেন। সেখানে দ্বিতীয় দফা তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

আবু আওলাদ তোহা নামে চবি’র এক শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাটল ট্রেনে করে আসার কথা ছিল। আমাদের সমন্বয়ককে ছাত্রলীগের নেতারা আটকে রেখেছে। পরে বাসে করে এসে এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার পর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। প্রথমে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়, এরপর হামলা করে। আমরা সাধ্যমতো প্রতিরোধ করেছি।’

পালটাপালটি হামলায় অংশ নেয়া চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নুরনবী সাহেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের নামে কেউ যদি একাত্তরের ঘৃণ্য রাজাকার-আলবদরদের আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের চেষ্টা করে, আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবো না। ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধে আদর্শের অতন্দ্র প্রহরী। আমরা অবশ্যই এসব নব্য রাজাকারকে রাজপথে প্রতিহত করব।’

নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটাকে পুরোপুরি হামলা বলা যাবে না। কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা ষোলশহর রেলস্টেশনে জড়ো হয়েছিল। পরে তারা সামনের রাস্তায় আসে। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা একদিক থেকে চলে আসে। তাদের মধ্যে যাতে সংঘর্ষ না হয়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করেছি। কোটাবিরোধী ছাত্ররা রাস্তায় আছে। ছাত্রলীগ একপাশে আছে। আমরা চাই দুপক্ষই শান্তিতে থাকুক। একপক্ষ যাতে অন্যপক্ষের ওপর হামলা করতে না পারে সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি।’ ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

সংঘাতে আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন- কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের মাহবুব (২২) ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাঈনুল হক (২৩)।

চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের সঙ্গে মারামারিতে আহত দুজন ছাত্রকে হাসপাতালে আনার পর তাদের দুই নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।’

এর আগে, সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে।

এ ছাড়া রোববার রাতেও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর একদফা হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা এ হামলার জন্যও ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন