বিজ্ঞাপন

আন্দোলনে অচল বরিশাল, বিএম কলেজে সংঘর্ষ

July 16, 2024 | 7:19 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বরিশাল: সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নেমেছে বরিশালের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল অংশে বিভিন্ন পয়েন্ট অবরোধ করেছেন তারা।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

এছাড়াও নগরীর ভেতরেও চলছে বিক্ষোভ প্রতিবাদ। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরী। যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিএম কলেজ এবং ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ওই সড়কে। নগরীর চৌমাথা এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আমতলার মোড় এলাকায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। অবরোধের প্রতিটি পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ থাকলেও আন্দোলনকারীদের কোনোরকম বাধা দিচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বিএম কলেজে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

সকাল ১০টায় সরকারি ব্রজমোহন কলেজে (বিএম) কোটা বহাল রাখার দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। অভিযোগ রয়েছে, মিছিল শেষে তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।

বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বরিশাল নগরীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে এসে সড়ক অবরোধ করেন। এরপর তারা সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ভেতরে ঢুকে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দেন। ছাত্রলীগ তখন দেশীয় অস্ত্রসহ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের পাল্টা ধাওয়া করে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা পুরো ক্যাম্পাস দখলে নেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ক্যাম্পাসে রয়েছি। উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছি।’

বিজ্ঞাপন

বিএম কলেজ শিক্ষার্থী ও কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক হুজাইফা রহমান বলেন, ‘নথুল্লাবাদ এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি চলছে। তবে বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

বিএম কলেজ ছাত্রলীগের নেতা এসএম সাউদ জানান, প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে কতিপয় শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে স্লোগান দিচ্ছিল। তাদের প্রতিহত করা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাকসুদ আলম বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিএম কলেজ ও হাতেম আলী কলেজের শিক্ষার্থীরা নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালসংলগ্ন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছে। সরকারি যানমাল রক্ষা ও বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুর রহমান বলেন, ‘কোথাও কোনো বড়ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা শান্তভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

এদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করলে হামলাকারীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ওই শিক্ষার্থীকে ওই ব্যাচ থেকে বহিষ্কার করার দাবি তুলবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পর এ সিদ্ধান্ত নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন