বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থী মৃত্যুতে রংপুরে থমথমে পরিস্থিতি, বিজিবি মোতায়েন

July 16, 2024 | 9:40 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রংপুর: পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় রংপুরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক বিভিন্ন অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে এড়াতে রংপুরে অতিরিক্ত পুলিশ ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন করেছে জেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় শিক্ষার্থী ও পুলিশের সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত হন। নিহত আবু সাঈদ দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার বাবুনপুর গ্রামে। তিনি কোটা আন্দোলনকারীদের একজন সমন্বয় ছিলেন। এছাড়া এঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী বলেন, বিকেল ৪টার কিছু পর গুলিবিদ্ধ ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার আগেই মৃত্যু হয়েছিল। আমাদের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার জানিয়েছেন, তার বুলেট ইনজুরি ছিল। আমাদের এখান থেকে মরদেহ দিতে চায়নি। কিছু প্রসিডিউর আছে। কিন্তু সেখানে অনেক শিক্ষার্থী ছিল, তারা মরদেহ নিয়ে যায়। শুনেছি পুলিশ নাকি মরদেহ ফেরত আনার চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকী বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তার পরিচয় এবং কীভাবে মারা গেছে, আমরা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসিফ আল মতিন বলেন, পুলিশের ছড়রা গুলিতে সাঈদ নিহত হয়েছেন।

এদিকে আবু সাইদের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রংপুরের সাতটি জেলার প্রবেশদ্বার মডার্ণ মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া নগরির লালবাগ, খামাড়মোড়, কামারমোড়, চকবাজার, কলেজপাড়া দর্শনা, শিক্ষা অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনের ভিডিও সংগ্রহের সময় বেসরকারি টেলিভিশন সময় সংবাদের ভিডিও জার্নালিস্ট তারিকুল ইসলাম ওপরও হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা। তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, পলেটেকনিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আবু সাইদের মৃত্যুর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা মিছিল-সমাবেশসহ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেন জানান তারা।

এর আগে কোটার যৌক্তিক সংস্কার, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। আন্দোলনকারীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন