July 17, 2024 | 6:40 pm
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত-শিবির নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেলে নগরীর মুরাদপুর মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। চট্টগ্রামের মহানগর আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যেগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াত-শিবির ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণ ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদল ১৯৭১ সালের মতো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। কোনো অশুভ শক্তি বাংলার মানুষের সঙ্গে লড়াই করে কখনও পারেনি। এবারও তারা পারবে না।’
‘সাধারণ ছাত্র সমাজ নিরীহ। এরা উশৃঙ্খল নয়। এদের ব্যবহার করে জামায়াত-শিবিরের নেতৃত্বেই কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করেছে। শিবিরের সন্ত্রাসীরা আমাদের ছাত্রলীগের ভাইদের ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে, হাতের ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে এবং মাথার গিলু বের করে দিয়েছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ধৈর্য ধরে আছি। তবে সজাগ আছি। যখন মাঠে নামার সময় আসবে তখন নামব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন কি করতে হবে। উনি সিদ্ধান্ত না দেওয়ার আগে আমরা কোনো কিছু করব না।’
রাজাকারদের সন্তানরা বাংলাদেশের পতাকা খামচে ধরেছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এখনও বেঁচে আছি। রাজাকারের বাচ্চাদের কাছ থেকে ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একটি পতাকা পেয়েছি। তাদের সন্তানরা আজ সে রক্তাক্ত পতাকাকে খামছে ধরেছে।’
‘রাজাকারদের ঠাঁই স্বাধীন বাংলাদেশে নেই। সেসব রাজাকারের সন্তানদের তালিকা করে তাদের মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে বিচার করা হবে।’
চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী) আসনের সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম বলেন, ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। ১৯৭১ সালে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করেছি, সেভাবে আমরা এ স্বাধীন বাংলাদেশকে জামায়াত-শিবির মুক্ত করব।’
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক আজিজের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের নগর সহ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাবেক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ কমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনি ও নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
সমাবেশ শেষ একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর মুরাদপুর থেকে দুই নম্বর গেট, জিইসি হয়ে ওয়াসা গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর, দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে তিনজন নিহত ও প্রায় শ’খানেক আহত হন। আহতদের মধ্যে ৭১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
সারাবাংলা/আইসি/এনইউ