বিজ্ঞাপন

রাবির অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করল র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবি

July 17, 2024 | 10:07 pm

রাবি করেসপন্ডেন্ট

রাবি: র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে উদ্ধার করা হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাবি প্রশাসন ভবনে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।

বিজ্ঞাপন

খবর পেয়ে বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে ক্যাম্পাসে পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবি যৌথ অভিযান চালায়। প্রায় আধাঘণ্টার অভিযান শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্যকে উদ্ধার করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে তারা কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন। এতে করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের পেছনে ও বঙ্গবন্ধু হলের দিকে অবস্থান নেন এবং পুলিশের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। তবে, তারা বেশিক্ষণ টিকে থাকতে না পেরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার‌ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমরা অনেক ধৈর্য্য ধরে তাদের সঙ্গে তিন বার বসেছি। তাদের কথা শুনেছি। তারা আমাদের কথা শুরুতে শুনেছিল, এর কিছুক্ষণ পর তারা আমাদের জানালো, বিষয়টি আর আমাদের হাতে নেই, বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে এখানে ছিল না। সবশেষে বহিরাগতরা এখানে রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলা করতে এসেছিল। হলে যারা থাকবে বা চলে যাবে আজকের জন্য তাদের সব দায়িত্ব আমরা নিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে অনুপ্রবেশকারীরা প্রবেশ করে আমাদের পানি ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্ধ করে দিল। ফলে আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর আমরা পুলিশ প্রশাসনকে কল করেছি। তারা আমাদের উদ্ধার করেছে। আজকে যারা হলে থাকবে, তাদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবো। ক্যাম্পাসের পুরো দায়িত্ব এখন প্রশাসনের হাতে, আমরা তাদের নির্দেশে চলবো।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নির্দেশনা দেওয়ার পর আমরা ক্যাম্পাসে এসে সন্ধ্যা সাতটা থেকে আধা ঘণ্টাব্যাপী একটি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবিষ্যতে প্রশাসন সহযোগিতা চাইলে আমরা সাহায্য করবো।

বিজ্ঞাপন

এর আগে আজ দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে হবিবুর রহমান মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লিখিতভাবে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা দুইটার মধ্যে এসব দাবির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দাবি জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দীর্ঘ আলোচনা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন।

একপর্যায়ে প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জন্য নেওয়া খাবারও ছিনিয়ে নেয় আন্দোলনকারীরা। পরে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে শিক্ষার্থীদের দশজন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের ফটক তালা দিয়ে ঘেরাও করে রাখেন। এতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ভেতরেই আটকা পড়েন। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের পানি ও বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন