বিজ্ঞাপন

শাহ আমানত সেতুর প্রবেশমুখে অবরোধকারী-পুলিশের সংঘর্ষ

July 18, 2024 | 1:47 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধ চলাকালে চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। পুলিশের পক্ষ থেকেও তাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ আরও দাবি করেছে, যারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, তাদের কেউ অবরোধে ছিলেন না। বহিরাগতরা এসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচলের চেষ্টা করেছিল। এদের মধ্যে ‘কয়েকজনকে’ গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নগরীর বাকলিয়ায় শাহ আমানত সেতুর প্রবেশমুখ অবরোধ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচলের চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তাদের সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এ সময় প্রায় ২০ মিনিট ধরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আবারও জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাটের দিকে চলে যায়।

বিজ্ঞাপন

অবরোধে অংশ নেওয়া বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিলাম। পুলিশ আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ওপর তারা টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’

নগর পুলিশ উপ কমিশনার (দক্ষিণ) আশরাফুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের যে আক্রমণাত্মক আচরণ সেটা দেখে মনে হচ্ছে না তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা একটি বাস ভাঙচুর করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সেটা করতে বারণ করে। এরপর তারা পুলিশের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশকিছু পুলিশ আহত হয়েছে। কয়জন আটক হয়েছে সেটা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আন্দোলন ডেকেছে, তাদের কাউকে আমরা নতুন ব্রিজ এলাকায় দেখিনি। এখানে বহিরাগত একটা গ্রুপ রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করেছে, মানুষজনকে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, মানুষের জানমাল রক্ষার স্বার্থে, জনজীবন স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আমরা তাদের এখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তারা পুলিশের ওপর পাল্টা আক্রমণ করেছে। প্রকাশ্যে তাদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি আপনারা দেখেছেন। এটি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কোনো বিক্ষোভ হতে পারে না।’

‘এখানে আপনারা-আমরা এবং জনসাধারণ দেখেছে, তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়েকে অচল করার উদ্দেশে নাশকতা সংঘটের জন্য এখানে জড়ো হয়েছিল। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। বেআইনি কোনো কর্মকাণ্ড আমরা কোনোভাবেই অ্যালাউ করবো যৌক্তিক আন্দোলন যারা করছে, আমরা অবশ্যই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু আন্দোলনকে পুঁজি করে যারা বিভিন্নস্থানে যানবাহন ভাঙচুর করছে, আগুন দিচ্ছে, জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি করছে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

মোস্তাফিজুর জানিয়েছেন, অবরোধকারীদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানালেও সংখ্যা উল্লেখ করেননি তিনি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে নগরীর চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোমিনুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, নতুন ব্রিজ থেকে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বহাদ্দারহাট মোড়ে এসে সড়কের একপাশ আটকে বিক্ষোভ করছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে নগরীর দুই নম্বর গেইট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়। এরা হলেন- দোকানকর্মী মো. ফারুক (৩২), ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম (২২) ও কলেজ ছাত্র ফয়সাল আহমেদ শান্ত (২১)। একইদিন সারাদেশে আরও তিন শিক্ষার্থী নিহত হন।

সারাদেশে শিক্ষার্থী হতাহতের প্রতিবাদে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে।

সারাবাংলা/আইসি/ইআ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন