বিজ্ঞাপন

প্রভাব পড়েনি ওদের হাসিতে!

July 26, 2024 | 8:20 am

আজাহারুল ইসলাম, ইবি করেসপন্ডেন্ট

কুষ্টিয়া: কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চলছে কারফিউ। সীমিত আকারে যানবাহন চললেও আতঙ্ক কাটেনি জনমনে। এদিকে বন্ধ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো। তবে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী একটি জায়গায় থাকছি আমরা কয়েকজন। দুপুরের আগে হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলাম। হঠাৎই চোখে পড়ল ব্যতিক্রম একটি দোকানের।

বিজ্ঞাপন

থমকে গেলাম। দেখলাম দোকান চালাচ্ছেন তিন ছোট্ট শিশু। রাস্তার পাশে একটি জায়গা নির্ধারণ করে খুলে বসেছেন দোকান। দেখতে দোকানের মতো হলেও আদতে তা দোকান নয়। গাছের পাতার টাকা, বালু দিয়ে চাল, মশলা, ইট দিয়ে তরকারি, পানি দিয়ে তেল এমন নানান জিনিস বানিয়েছে তারা। এছাড়াও খেলনা নানাসামগ্রী আছে তাদের কাছে। সাজিয়েছে দোকানের মতোই। বানিয়েছে চুলাও। সেই দোকানে খেলায় মেতেছে তিন শিশু। হাসছে প্রাণখুলে। তাদের হাসিতে চলমান অস্থিরতার প্রভাব পড়েনি।

তাদের সঙ্গে গল্প করতে গিয়ে জানা গেল তাদের নাম নাঈম, হাফিজা, সামিহা। নাঈমকে বললাম, ‘একটা ছবি তুলি?’ ফিক করে হেসে দিয়ে বললো, ‘ভালো করে তোলেন’। সঙ্গে সাদা ফিকফিকে দাঁত বের করে দিল। তবে হাফিজা আর সামিহাকে হাসাতে বেশ কষ্ট হলো।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনজনের মধ্যে নাঈম বড়। বয়স সবে ১২ বছর। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। বাবা হারিয়েছে অনেক আগেই। চার ভাইবোনের সংসার হলেও নাঈম থাকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন একটি দোকানে কাজ করে। সংসারের দুরবস্থায় মা পড়াশোনা করাতে পারেননি। তবে পড়ার তীব্র ইচ্ছা তারও। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চায় সে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে হাফিজা আর সামিহা দুই বোন। তাদের বয়স হবে যথাক্রমে আট আর তিন বছর। নাঈম যে দোকানে কাজ করেন তাদের দোকান মালিকের মেয়েই তারা। হাফিজা ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

কোন ক্লাসে পড়ো জানতে চাইতেই পাশে থেকে ছোট্ট সামিহা বলে ওঠে, ‘আমি ছোট্ট, এখনো স্কুলে যাই না।’ একই সঙ্গে জানায় ‘আমি খিচুরি রান্না করছি।’ খিচুরিতে দেখা গেল একটি বাটিতে সিমেন্টের গুড়োকে খিচুরি বানিয়েছে সে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন