বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে মরিচের ঝাল কমেছে, সবজিও কমতির দিকে

July 26, 2024 | 8:24 pm

ইমরান চৌধুরী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-কারফিউসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে হুট করেই দাম বেড়ে গিয়েছিল সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কাঁচামরিচের দাম কমেছে অন্তত ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনকে ঘিরে গত সপ্তাহে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার কারফিউ জারি করলে বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খুচরা বাজারে কাঁচা শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেড়ে যায়। কারফিউ শিথিলের পর আগের তুলনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় কিছুটা পণ্য সরবরাহ শুরু হয়। চট্টগ্রামে বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করে পণ্যবাহী গাড়ি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কারফিউ ও কোটা আন্দোলনকে ঘিরে বেশকিছু দিন পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় পণ্য পরিবহনে সংকট দেখা দেয়। পরিবহনে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়েছে। বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে দিনব্যাপি কারফিউ শিথিল করায় বিভিন্ন জেলা থেকে কিছু পণ্য আসতে শুরু করায় দাম কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে দাম আরও কমতে পারে।

বিজ্ঞাপন

রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারফিউ এখনও চলমান। সীমিত পরিসরে পণ্যবাহী ট্রাক চট্টগ্রামে প্রবেশ করছে। দাম সামান্য কমতে শুরু করেছে। সামনে আরও কমবে। অনেকেই ভয়ে রাস্তায় গাড়ি বের করছে না। এ সুযোগে অনেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। তাই এ মাসে দাম পুরোপুরি কম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কাঁচামরিচের দাম পাইকারিতে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ছিল। বর্তমানে সেটা ১৬০ টাকা করে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে।’

এদিকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে নগরীর বহদ্দারহাট ও কাজির দেউড়ি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত চার দিনের তুলনায় বাজারে সব সবজিতে দাম কমেছে খুচরায় ছয় থেকে আট টাকার মত। এছাড়া আলু, শসা, কাঁকরোল, ঝিঙ্গে, লাউ, পেঁপে, চিচিঙ্গা, বেগুন, তিতকরলা, পটল, বরবটি, মিষ্টিকুমড়ারও দাম কমেছে। দাম কমলেও এসব সবজির দাম গড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আমদানি করা গাজর ও টমেটোর দাম এখনও চড়া।

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পটল ৭০, লাউ ৬০ থেকে ৭০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, ধুন্দল ৬০, ঝিঙ্গা ৬০ , ফুলকপি ১০০, টমেটো ২০০, গাজর ১০০, বরবটি ৭০, কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ও পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজারে আলু ৬০, কাঁকরোল ৮০, পটল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার বেগুন, বরবটি, করলার মতো সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকায়। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকায়।

খুচরা দোকানিরা বলছেন, পাইকারিতে সরবরাহ বাড়লেও শহরে এখনও গাড়ি ভাড়া বেশি। তবে তা কমতে শুরু করায় দাম কমেছে কিছুটা। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে দাম আরও কমে যাবে।

কাজির দেউড়ি কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলনের কারণে সবজি তেমন আসেনি। সরবরাহ হয়নি। তাই দুইদিন আগেও দাম বাড়তি ছিল। এখন দেশ একটু স্বাভাবিক হওয়ায় সবজি আসা শুরু হয়েছে। তাই দাম একটু কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে কাঁচামরিচের দাম। চারদিন আগেও কাঁচামরিচ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেটা ২৩০ টাকা করে বিক্রি করছি।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর গোলপাহাড় মোড়ের একটি ভ্যান থেকে সবজি কিনছিলেন রাশেদা বেগম নামে এক গৃহিনী। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে তো সবজিতে হাতও দেওয়া যায়নি। বাজারও বন্ধ ছিল। বাসার সামনে সবজি বিক্রেতা ভ্যান নিয়ে আসলে সেখান থেকেই প্রায়ই কেনা হয়।’

‘এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজি কেজিতে ২০ টাকা করে বেড়ে গিয়েছিল। এখন সবজির দাম একটু কমেছে। আমরা ছয়জনের পরিবার। প্রতিদিনই বাজার করা লাগে। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই নেই। এভাবে কতদিন আর চট্টগ্রাম শহরে থাকতে পারব জানি না।’

ভ্যানের সবজি বিক্রেতা মো. রাশেদ সারাবাংলাকে জানান, কারফিউর কারণে পাইকারিতে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরাতেও বেশিতে বিক্রি করতে হয়েছে। এজন্য অনেক ক্রেতার কাছেও কথা শুনতে হয়েছে। এখন ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল হওয়ায় বাজারে সবজি আসতে শুরু হয়েছে। তাই দামও কমেছে।

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন