বিজ্ঞাপন

এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না, ১০ বিশিষ্টজনের বিবৃতি

June 2, 2018 | 9:18 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট দশ ব্যক্তি।

শনিবার (২ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ  দাবি জানান।

বিবৃতিদানকারীরা হলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সংস্কৃতিকর্মী নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, সাহিত্যিক মফিদুল হক, সংস্কৃতিকর্মী গোলাম কুদ্দুস ও হাসান আরিফ।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বলা হয়, সারাদেশে যে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে তার যৌক্তিকতা আমরা অনুধাবন করি। দেশে খুব কম পরিবার আছেন যারা মাদকের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন। তাই সঙ্গত কারণে সর্বস্তরের মানুষের স্বতস্ফূর্ত সমর্থনও এ অভিযান প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। যা অভিহিত করা হচ্ছে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বলে।

বিবৃতিদানকারীরা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধানে প্রদত্ত জীবনের অধিকার এ ভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না। গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় কিছু নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।’

টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহতের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে তারা বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আগে কোনো প্রকার অভিযোগের কথা জানা যায়নি। তাকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পৌর মেয়র। তার পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে হত্যা পূর্ব ফোনালাপ সাংবাদিকদের কাছে  প্রকাশ করেছেন। যা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়।’

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ রকম একটি ঘটনাই  সমগ্র অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ ও জনগণকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্ট। যত দ্রুত সম্ভব বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সঠিক তথ্য প্রকাশের মধ্যদিয়ে ভয়ভীতি থেকে মানুষকে মুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মাদকবিরোধী অভিযানে গুলিতে ১২৩ জন মারা গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি যারা মারা গেছেন তারা তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। অভিযান চলাকালে বন্দুকযুদ্ধে তারা মারা গেছেন।

চলমান এ অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। মাদকবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন মহলের সন্তুষ্টি থাকলেও প্রশ্ন উঠেছে অভিযানের ধরন নিয়ে। গত কদিন ধরে অভিযান প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার।

গত সপ্তাহে টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সেখানকার পৌর কাউন্সিলর ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. একরামুল হক নিহত হন। এর কয়দিন পর ৩১ মে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য দেন একরামুল হকের স্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

তার পরিবারের দাবি- বাসা থেকে র‌্যাব ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর একরামুল হককে গুলি করে মারা হয়েছে।

এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এত বড় অভিযানে দুয়েকটা ভুল হতেই পারে। তারপরও পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যদি কেউ জড়িত থাকে, তার যথোপযুক্ত বিচার হবে।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলেও একজন ম্যাজিস্ট্রেট একরাম নিহত হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করবে। তদন্ত শেষে ওই ম্যাজিস্ট্রেট যে রিপোর্ট দেবেন তার ভিত্তিতেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/জেএ/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন