বিজ্ঞাপন

“কারফিউ না দিলে ‘শ্রীলঙ্কা স্টাইলে’ গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল”

July 28, 2024 | 7:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি না করলে বিএনপির ‘শ্রীলঙ্কা স্টাইলে’ গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি) নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কার স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ছিল সেই রাতে। যদি কারফিউ জারি না হতো, এই প্ল্যান তাদের ছিল।

রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে দুঃস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্ল্যাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে, লেজও সেদিকে যাবে। এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে তাদের ঐক্য অগ্নিসন্ত্রাসের ঐক্য। দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।’

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, যুদ্ধ চলছে দেশে ও বিদেশে, সেখানে আজ ওয়ান ইলেভেনের মতো কুশীলব ড. ইউনূস যোগ দিয়েছেন। তিনি আগে গোপনে দেশের বিরোধিতা করলেও এখন প্রকাশ্যে করছেন। বিবৃতি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি। গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নতুন নির্বাচনের দাবি করছেন।’

চলমান সহিংসতা নিয়ে বিদেশিদের বিবৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে অনেকেই বিবৃতি দিচ্ছেন। অনেক সংস্থা, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন। কারা সমন্বয় করছেন আমরা জানি। তাদের বলব, কারও প্ররোচণায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটিএর ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, তা দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিবৃতিযুদ্ধ চলছে দেশে-বিদেশে। যেখানে ওয়ানইলেভেনের কুশীলব ইউনূসও যোগ দিয়েছেন।’

ইউনূস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অতীতে যিনি রাজনৈতিক দল খুলে ওয়ানইলেভেনে সাড়া পাননি, যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান, যিনি পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন, তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন।’

বিজ্ঞাপন

ইউনূসকে ‘নির্লজ্জ’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (ইউনূস) ভারতকে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আমক্রণকারী নন। তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন। বিবৃতি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপের জন্য বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান ইউনূস। তিনি সাক্ষাৎকারে নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই দেশ স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো! কী বোঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন, খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কি?’

সেনাবাহিনী কোথাও গুলি করেনি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কারফিউ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলেন, সেনাবাহিনী নামল। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, সেনাবাহিনী কোথাও একটা গুলিও ছোড়েনি। অথচ অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, আমরা যেন হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলেছি। গতকাল তালিকায় দেখেছি আমাদের ১২ কর্মীকে মেরে ফেলা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবেকের টানে হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের মতো মায়াকান্না করতে নয়, বিবেক ও হৃদয়ের টানে শেখ হাসিনা হাসপাতালে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য যা করতেন, তার কন্যাও সেই সহানুভূতি নিয়ে যাচ্ছেন।’

বিজ্ঞাপন

মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু না থাকায় রাজধানীতে ভয়াবহ যানজট হচ্ছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ঢাকা সিটিতে অসহনীয় যানজট। কেন এই যানজট? মেট্রোরেল নেই। যে ধ্বংসলীলা মেট্রোরেলের ১০ নম্বর স্টেশন, কাজীপাড়া স্টেশনে; এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা আগুনে কয়লা হয়ে গেছে। উত্তরা থেকে মানুষ আসা যাওয়া করতে পারছে না। সময়ও বাড়ছে, পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে। এই কষ্ট বহুকালের। শেখ হাসিনাই জনগণের কষ্ট লাঘবে এসব প্রকল্প নিয়েছেন। বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের ৩৪টি এসকেলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেমনে চালু করা হবে? এগুলো তো মানুষের জন্য করা হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণ উপলব্ধি করছেন মেট্রোরেল, এলিভেটেড বন্ধ থাকলে তারা কত কষ্টে থাকেন। এই কষ্টটা সরকার দেয়নি। এটা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে তারা।’

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুঃস্থদের মাঝে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল ও লবণ এবং এক লিটার তেল দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন