বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিল পুলিশ, কয়েকজন আটক

July 29, 2024 | 8:00 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোটা সংস্কারের আন্দোলন নিয়ে টানা সহিংসতার নয়দিন পর চট্টগ্রাম নগরীতে ‘বৈষম্যবিরোধী’ আন্দোলনকারীরা আবারও জড়ো হয়ে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

‘শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়াসহ নয় দফা দাবিতে’ কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় অবস্থান নেন আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ জন, যাদের মধ্যে মেয়েরা সংখ্যায় বেশি ছিলেন। তবে তারা কে কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্দোলনকারীরা চেরাগির মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থী হত্যার বিচার চেয়ে এবং আরও বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের একদল কর্মী। তারা আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। পরে পুলিশ গিয়ে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীরা মোমিন রোডে কদমমোবারক মসজিদের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

এরপর পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে তিনজনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তুলতে গেলে অন্যরা এসে বাধা দেন। তখন পুলিশের সামনেই আন্দোলনকারীদের ওপর আরেক দফা চড়াও হন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে তারা আন্দোলনকারীদের কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা সড়কে বসে পড়েন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সামনে সাউন্ড গ্রেন্ডে ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন অলি-গলিতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। বাকিরা নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে অবস্থান নিলে পুলিশ সেখানেও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। কিছুক্ষণ পর অবশ্য বিক্ষোভকারীরা আন্দরকিল্লা থেকে চলে যান।

ঘটনাস্থলে থাকা নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আশরাফুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা হলে আমরা তাদের (আন্দোলনকারী) সরিয়ে দিই। এসময় তারা আমাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করে। আমাদের কোতোয়ালী থানার এসআই মোশাররফসহ তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা যাচাইবাছাই করে দেখছি।’

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রাবণী চৌধুরী নামে চট্টগ্রাম কলেজের এক শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। তবুও তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের কয়েকজন ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই পুলিশ, বিজিবি অবস্থান নেয়। সেনাসদস্যদেরও টহল দিতে দেখা যায়। এর ফলে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবের পরিবর্তে চেরাগি পাহাড় মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত টানা চারদিন চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুলাই রাতে সারাদেশে কারফিউ ঘোষণা করা হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন