বিজ্ঞাপন

২৪ বছর কনডেম সেলে থাকা সেই নারীর সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড

August 1, 2024 | 1:44 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: এক হত্যা মামলায় ২৪ বছর ধরে কারাগারে থাকা শরীফা বেগমের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাকে দ্রুত কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে শরীফার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে, বুধবার (৩১ জুলাই) আদালত ২৬ বছর আগের এক হত্যা মামলায় ২৪ বছর ধরে কারাগারে থাকা শরীফা বেগমের আপিল শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

গত ১ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ফাঁসির দিন গুনে এক নারীর ২৪ বছর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞাপন

এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার প্রধান বিচারপতি উদ্যোগ নিয়ে শরীফার আপিল শুনানির জন্য জন্য উদ্যোগ নেন।

জাতীয় দৈনিকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ বছর আগে হত্যা মামলায় শরীফা বেগম যখন কারাগারে যান, মেয়ে সূচী আক্তারের বয়স তিন মাস। কারাগারে কয়েকবার মাকে দেখলেও কখনো ছুঁয়ে দেখা হয়নি তার। মায়ের স্নেহ বোঝার আগেই মায়ের বুকে জড়িয়ে থাকার সুখানুভূতি কেমন তাও জানা নেই। একই অবস্থা মা শরীফারও। কারাগারে যাওয়ার পর আর কখনো সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরা হয়নি তার। কারণ ৫৫ বছরের জীবনের প্রায় ২৪ বছরই ‘মৃত্যু সেলে’ থাকা শরীফার মামলার বিচারই এখনো শেষ হয়নি।

১৯৯৮-এ গ্রেফতারের পর ২০০০ সালের অক্টোবরে বিচারিক আদালতে তার ফাঁসির রায় হয়। সেই থেকে তিনি ফাঁসির সেলে (কনডেম সেল) বন্দি। ২০০৩ সালে হাইকোর্টে তার সাজা বহাল থাকে। এরপর ২১ বছরেও তার আপিল নিষ্পত্তির তথ্য মেলেনি। এই দীর্ঘসময় ফাঁসির সেলে থাকা শরীফার কথা আদালত, কারা কর্তৃপক্ষ, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় কারো মনে আসেনি। এই নারী জানতে পারেননি তিনি দোষী না নির্দোষ।

বিজ্ঞাপন

কারা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, কারা ইতিহাসে আর কোনো নারী আসামিকে এত দীর্ঘসময় ফাঁসির সেলে থাকতে হয়নি। এত লম্বা সময় (২৬ বছর) কোনো নারী কারাবাসে ছিলেন কি না, সে তথ্যও মেলেনি।

শরীফার মতো জামালপুরের আবদুস সামাদ আজাদ ওরফে সামাদও একই মামলায় গত ২৪ বছর ধরে ফাঁসির সেলে বন্দি। কারা ইতিহাসে তিনিই সম্ভবত একমাত্র পুরুষ আসামি যাকে এত দীর্ঘসময় ফাঁসির সেলে থাকতে হচ্ছে। শেখ জাহিদ নামে খুলনার এক ব্যক্তি ২০ বছর ফাঁসির সেলে থাকার পর ২০২০ সালে ২৫ আগস্ট আপিল বিভাগের আদেশে খালাস ও পরে মুক্তি পান।

দেশে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে অনেক নারীর মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর সাজা হলেও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগে তা রহিত হয়ে যাবজ্জীবন, খালাস কিংবা অন্য মেয়াদের কারাদ- হয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত কোনো নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি। কিছু ব্যতিক্রম বাদে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) মামলা সর্বোচ্চ ১৫ বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়। আসামি নারী হলে সে সময় আরও কমে যায়। ফৌজদারি আইন ও সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছর হলেও কারাবাসের রেয়াত মিলে সেটি হয় সাড়ে ২২ বছর। কারো বেলায় নানা কারণে সেটি আরও কমে আসে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন