বিজ্ঞাপন

‘দাবি তো পূরণ হয়ে গেছে, বুদ্ধিজীবীদের সমর্থনটা কেন?’

August 1, 2024 | 6:46 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই আন্দোলনকে আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী, বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। কীসের সমর্থনটা দিচ্ছেন? দাবি যেটা ছিল সেটা তো পূরণ হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি চাই প্রতিটি জিনিসের তদন্ত হোক— কারা এর পেছনে, কী কী ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য জাতিসংঘেও আমি আবেদন করেছি, তারা বিশেষজ্ঞ পাঠাক। অন্য কোনো দেশ যদি চায়, তারা বিশেষজ্ঞ পাঠাক। কারণ, আমি চাই, এই ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হোক। যেই দায়ী হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘জাতীয় শোক দিবস স্মরণে’ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার গঠনের একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং সেইসঙ্গে জাতির পিতার হত্যার বিচার। এ ছাড়া বিচারহীনতার যে পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছিল, সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছিল— আবার সেই আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করেছি। এটা করতে গিয়ে সেখানেও অনেক হুমকি-ধমকি সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমরা করতে পেরেছি। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কারণ লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই শহিদের রক্তের মূল্য আমাদের দিতে হয়েছে। তাই আমরা এই খুনিদের বিচার করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যার বিচার আমরা করতে পেরেছি। আমার মনে হয়, এর থেকে বড় পাওয়া বাঙালি জাতির জন্য আর কিছু নেই। একটা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ন্যায় বিচারের পথটা আমরা সহজ করে দিয়েছিলাম।’

কোটা আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলন হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন আমরা সেটা মেনে নিয়ে বাতিল করে দিয়েছিলাম কোটা পদ্ধতি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মামলা করল, সেখানে আমার করা প্রজ্ঞাপনটা বাতিল করে দিল হাইকোর্ট। আবার কোটা ফিরে এলো। সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাপিলেট ডিভিশনে আপিল করা হলো। আপিল করা হলে হাইকোর্টের রায়টা সাসপেন্ড করে দেওয়া হলো। কাজেই আবার সেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল হয়ে গেল এবং পূর্ণাঙ্গ শুনানির তারিখও দেওয়া হলো। ৫ জুন এই রায় হয়েছিল। পুরো জুন মাস চলে গেল। জুলাইয়ের ৭ তারিখ থেকে হঠাৎ দেখি ফের কোটার জন্য আন্দোলন— যখন কোটা পদ্ধতিই নাই।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেখা গেল ঝাঁকে ঝাঁকে সবাই জড়ো হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক থেকে শুরু করে, গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে অনেক শিশুদের নিয়েও হাজির হচ্ছে। আমার খুব সন্দেহ হলো, এটার পেছনে অন্য কিছু আছে। আমি সেটা বলেওছিলাম। তাহলে এই ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কী হবে! যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করা। এমনকি তারা মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল; সে ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো কিছুই মানবে না। হাইকোর্টের (শুনানির) তারিখ এগিয়ে নিয়ে আসা হলো। তাদের একদফা দাবি ছিল কোটা সংস্কার। যে দাবি করেছিল, সেই দাবি সংস্কার করে দেওয়া হলো। কিন্তু তার পরও তাদের আন্দোলন থামে না, দাবি থামে না।’

তিনি বলেন, ‘এর পেছনে ঠিক কী ছিল? আমরা দেখলাম, মানুষের জীবন নেওয়া। কোটা আন্দোলন করছে এক জায়গায়, ঢাকার চারিদিক থেকে জঙ্গি ঢুকে একদিকে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান মানুষের সেবা দেয় সেগুলো ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দিচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সব থেকে অগ্রগামী ছিলাম। আমাদের সামনে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস যেকোনো সময় আসতে পারে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমরা এত চমৎকার সিস্টেম তৈরি করেছিলাম, যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গার ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস-বন্যার খবর পেতে পারব। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সহযোগিতা করতে পারব। এটা তো মানুষকে বাঁচানোর জন্য, মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য। সেখানে অগ্নিসংযোগ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন মানুষের সাংস্কৃতিক চর্চার একটি জায়গা, সেখানে অগ্নিসংযোগ। আমাদের সেতু ভবন; সারা বাংলাদেশকে আমরা একটা নেটওয়ার্কে তৈরি করে দিয়েছি এবং পদ্মা সেতু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। সেই সেতু ভবনে অগ্নি সংযোগ। ডিজিটাল সিস্টেম আমরা যেটা করেছি, ডেটা সেন্টার, বিটিআরসি ভবন— যেখান থেকে পুরো সিস্টেমটা পরিচালনা করা হয়। স্যাটেলাইট থেকে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেটাতে আগুন দেওয়া হলো। এমনকি সাবমেরিন ক্যাবল, এটা মাটির নিচ দিয়ে ছিল। রাস্তা করার জন্য কিছু দিনের জন্য উপরে রাখা হয়েছিল, সেটাকেও নষ্ট করা হলো। একের পর এক ধ্বংস, আগুন দিয়ে পোড়ানো।’

বিজ্ঞাপন

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে আমরা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। তার জন্য যে হসপিটালটা তৈরি করেছিলাম, সেই কোভিড-১৯ হসপিটালে আগুন। সেইসঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্থানে আগুন। অর্থাৎ মানুষের সেবা দেওয়ার প্রতিটি জায়গায় আঘাত হানা। তার সঙ্গে যোগ হলো মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের অত্যন্ত আধুনিক দুটি স্টেশন পুড়িয়ে দিল। মিরপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন এক লাখ মানুষ যাতায়াত করতো। গোটা মেট্রোরেলে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষ নির্বিঘ্নে তার কর্মস্থলে যেতে পারতো, ফিরে আসতে পারতো। কর্মঘণ্টা বাঁচতো। নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতো, বিশেষ করে মেয়েরা। সেখানে আঘাত করা হলো।’

তিনি বলেন, ‘সুপেয় পানি-পয়োঃনিষ্কাশন থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গায় আগুন দিয়ে পোড়ানো- এটা কোন ধরনের আন্দোলন? সেইসঙ্গে কত মানুষের জীবন গেছে! চারিদিক থেকে অস্ত্রধারী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ কামরা তছনছ। সেখানকার ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে। কারও হাতে অস্ত্র, কারও হাতে তরবারি, কেউ লাঠি, আবার কেউ শাবল নিয়ে পুরো তছনছ করে দিয়েছে। ছেলেদের সব জিনিস পুড়িয়ে দেওয়া। রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেছা কলেজ— মেয়ে হয়ে মেয়েদের ওপর যে টর্চার। পাকিস্তান আমলে হানাদার বাহিনী যেভাবে টর্চার করেছে, ঠিক সেই ধরনের টর্চার করল মেয়েদের ওপর।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা ছাত্রলীগ করে যারা, তারা ছাত্রলীগ করতে পারবে না। তাদের ওপর জুলুম-অত্যাচার। এক মেয়েকে ১০০ বার কান ধরে উঠবস করাল। একজন নারী সাংবাদিককে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে, উলঙ্গ করে তার ওপর পাশবিক অত্যাচার। তারা তিন জন সাংবাদিকের ওপর এই অত্যাচার করেছে। এদের হাত থেকে সাংবাদিক রেহাই পায়নি। সাংবাদিককে হত্যা করেছে, মারধর করেছে। সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুবক-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে কেউ রেহাই পায়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেইসঙ্গে পুলিশ হত্যা করে তাকে ঝুলিয়ে রাখা হলো পা বেঁধে। তার পা উপর দিকে, মাথা নিচের দিকে। আমাদের গাজীপুরের কর্মীদের মেরেছে। এর পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছে, সেখানে থেকে বের করে নিয়ে এসে পা গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে তারপর তাকে গুলি করা হয়েছে। পুলিশের ওপর আক্রমণ, কত গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। র‌্যাবের গাড়ি চালাচ্ছে, তাকে যেভাবে মারা! এমনকি আমার মোটরকেডের পাইলট, থাকে যাত্রাবাড়ীর ওদিকে, ডিউটিতে আসবে, তাকে মেরে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জীবনগুলো ঝরে গেল, ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা গুলিবিদ্ধ। এই গুলিগুলো কিভাবে লাগলো? তার পরে মিথ্যাচার! দোতলা বাড়ির মধ্যে জানালার কাছে ছেলেটা। তার গুলি লেগেছে। বলে হেলিকপ্টার থেকে গুলি লেগেছে। আপনারা বলেন, হেলিকপ্টারের গুলি ঘরের মধ্যে ঢুকবে কীভাবে? আর সেই গুলি ঢুকে কিন্তু দেয়ালে যেয়ে ফুটো করে দিয়েছে। সেখানে তদন্তের জন্য লোক গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিটিভিতে, এখানে-ওখানে আগুন দিচ্ছে একটার পর একটা, আমরা হেলিকপ্টার থেকে সেখানে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি। কারণ, ফায়ার ব্রিগেড যেতে পারে না। আমার সব থেকে আধুনিক ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। মানুষগুলোকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। তখন বাধ্য হয়ে হেলিকপ্টার থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করা হয়েছে। সেসময় আবার অনেক জায়গায় পুলিশ আটকা পড়ে। নিচে আগুন দিয়ে দিয়েছে, তারা উপরে বসে আছে। আমাদের খবর দিল, আমরা হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের উদ্ধার করলাম। শুধু পুলিশ কেন! অনেক জায়গায় বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের যেসব কর্মকর্তারা আটকা পড়েছে, আমরা হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাদের জিঘাংসা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালায়, তারা তো তাদেরটা করে; এতে ভুক্তভোগী হয় সাধারণ মানুষ। এখানে পুলিশ, র‌্যাব, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ, কেউ তো রেহাই পায়নি! এই যে আহতদের আমরা দেখতে গেলাম, সেখানে পেলাম মাত্র ছয়-সাতজন ছাত্র। কয়েকটা শিশু ছিল, আর বেশিরভাগই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। কারণ, আঘাত পেলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলোই বেশি পায়। তাদের জীবন-জীবিকা কীভাবে চলবে! কেউ পরীক্ষা দিতে যাবে বা দিয়েছে, সেরকম ছাত্র আমি দুয়েকজন পেলাম কয়েকটা হাসপাতালে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জিনিস গেলে ফের গড়ে তোলা যায়, কিন্তু একটা জীবন গেলে, প্রাণ গেলে তো আর ফিরে পাওয়া যায় না। যারা আপনজন হারিয়েছে, যে মা তার সন্তান হারিয়েছে, যে সন্তান তার বাবাকে হারিয়েছে, তাদের কষ্ট আর কেউ না বুঝুক, আমি তো বুঝি! কারণ এই আগস্ট মাসে আমি তো বাবা-মা, ভাই সব হারিয়ে এই বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম ছোট ছোট বাচ্চাদের মাতৃস্নেহবঞ্চিত করে। কেন? বাংলাদেশের মানুষের জন্য। এই দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে, উন্নত জীবন পাবে, স্বাধীনতার সুফল পাবে। প্রত্যেকে পেট ভরে ভাত খাবে, প্রত্যেকে লেখাপড়া শিখবে, দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পাবে। বাংলাদেশ উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে, বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসন পাবে। যে মর্যাদা আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পেয়েছিলাম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর যা আমরা হারিয়েছিলাম, আবার সেই মর্যাদা ফিরিয়ে নিয়ে আসব।’

তিনি বলেন, ‘আমি কিন্তু এনেছিলাম। বাংলাদেশ বিশ্বে সেই মর্যাদা পেয়েছে। সেই জায়গায় আমরা নিয়ে গিয়েছিলাম। আজ বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিটি জায়গায় নেতিবাচক একটা মনোভাব হয়ে গেছে। এই যে এতদিন এত শ্রম দিলাম, এত কষ্ট, নিজের দিকে তো তাকাইনি! নিজের ছেলে-মেয়ের তো কিছু করিনি! যেটুকু করেছি, এ দেশের মানুষের জন্য।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি সময়, দিন-রাত পরিশ্রম করেছি। কারণ, আমি জানি, টাইম ইজ টু শর্ট! যেকোনো সময় ঘাতক আমাকে আঘাত করতে পারে। কারণ, আমি বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। মানুষের জন্য কাজ করব। সেই যে ১০ বছরের ছেলে আর আট বছরের মেয়েকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে এ দেশের মানুষের জন্য আনাচে-কানাচে সব ঘুরেছি এবং প্রতিটি জায়গা উন্নত করেছি। প্রতিটি গ্রাম আজ শহর হয়ে গেছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। মানুষের জীবনমান উন্নত করে দিয়েছি। এটা কি অপরাধ?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে নানাভাবে, জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বদনাম। আর আমি তো আছিই! যখন থেকে আছি তখন থেকেই গালি খাচ্ছি তো খাচ্ছিই। আমি তো পরোয়া করিনি! আমি জানি, আত্মবিশ্বাস নিয়ে, সততা নিয়ে কাজ করে গেছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছি।’

কোটা আন্দোলনে হতাহতের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানে কারও দাবির অপেক্ষা থাকিনি। তার আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে দিই। প্রথমে মাত্র ছয়জন মারা গিয়েছিলেন। এখন আরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। আমি এখন তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিটি করে দিয়ে তাদের কর্ম পরিধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জঙ্গি সারা বিশ্বব্যাপী কী ঘটনা ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশে হলি আর্টিজানের পরে আমরা আর একটা ঘটনাও ঘটতে দিইনি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ থেকেছে। নিজেরা জীবন দিয়েছে, কিন্তু জঙ্গিবাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। আজ কোটা আন্দোলনের ছাত্রছায়ায় এরা এসে জঙ্গির সেই ভয়াল দাঁত দেখাল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন এরা বসেছে, মিটিং করছে, আমি বললাম ঠিক আছে, ছেলেমেয়েরা বসছে বসুক। আমরা তো রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, মিছিল-মিটিং করে, পোড় খেয়ে খেয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। অন্তত আমি সরকারে আসার পরে এদের তো সেই ধরনের কষ্ট কাউকে করতে হয়নি। তারা যদি একটু রোদে পোড়ে, একটু স্লোগান দেয়, বসে তো বসল! এটাতে তোমরা কিচ্ছু বলবা না। পুলিশ কত সহনশীলতা দেখিয়েছে! তারা মিছিল করে যেখানে যেতে চেয়েছে, সেখানেই তাদের নিয়ে গেছে। খালি বলেছি, তাদের একটু নিরাপত্তা দাও তোমরা। তাদের দাবিটা কী? এটা তো আমার করা! প্রজ্ঞাপন বাতিল হয়েছে, আমরা আপিল করেছি, সেটা আবার আমরা পেয়ে গেছি। সেখানে আন্দোলনের ইস্যুটা আর কি থাকে? যেখানে দাবি শতভাগ মেনে নেওয়া হয়ে গেছে। সেখানে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কি যৌক্তিকতা আছে? কার স্বার্থে, কেন?’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে এরা তো মিথ্যা অপবাদ চালিয়েই যাচ্ছে। আমি ক্ষমতায় থেকে মানুষের জীবন নেব, সেটা তো কখনো হতে পারে না। কারণ, আমি তো সবকিছু হারিয়েছি। বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন রাখে আল্লাহ, মারে কে?

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
‘হামলাকারীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে’আগস্টকে দ্রোহের মাস হিসেবে পালন করুন: রব‘আইন প্রয়োগ হবে সন্ত্রাসীদের ওপর, শিক্ষার্থীদের ওপর নয়’৫ ঘণ্টা পর শিক্ষকদের জিম্মায় ১২ শিক্ষার্থীর মুক্তিকুবি শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা, মানববন্ধন করলেন ৬ জনইন্টারনেট বন্ধের ধাক্কায় জুলাইয়ে রেমিট্যান্স ১৯০ কোটি ডলারশিক্ষার্থী হতাহত ও ধ্বংসযজ্ঞে সিভাসু শিক্ষকদের উদ্বেগশিক্ষার্থী আটক হলে ‘উদ্ধার করবে’ চবি প্রশাসনআবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় সাক্ষ্য নেবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনশেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আইসিসি প্রসিকিউটরের সব খবর...
বিজ্ঞাপন