বিজ্ঞাপন

কুবি শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা, মানববন্ধন করলেন ৬ জন

August 1, 2024 | 9:41 pm

কুবি করেসপন্ডেন্ট

কুবি: সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হত্যা, গণ গ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষকরা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের দুইজন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুইজন, নৃবিজ্ঞান বিভাগ ও ফার্মেসি বিভাগের একজনসহ মোট ছয়জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ কর্মসূচি পালনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসতে চাইলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেয়। এতে করে গণিত বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাকিম, খলিফা মোহাম্মদ হেলাল, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামানসহ আসতে পারেননি আরো অনেকে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী এম আনিছুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত শিক্ষকেরা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।

গণিত বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাকিম বলেন, আমরা কোটবাড়িতে আসার পর কয়েকজন মানুষ আমাদের পথরোধ করে। আমরা শিক্ষক পরিচয় দিলেও নমনীয় হয়নি। আমাদেরকে শহরের দিকে চলে যেতে বলে। কেন আমাদের চলে যেতে বলছে এবং তাদের পরিচয় জিঞ্জেস করলেও তারা কোনো উত্তর দেয়নি। বিষয়টি আমরা প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছি। দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো পুলিশ বা কারো থেকে কোন সাহায্য আসেনি। আমাদেরকে বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের অনেক সহকর্মী জানিয়েছেন, কোটবাড়িতে তাদের আটকে দেয়া হচ্ছে। তারা শিক্ষক পরিচয় দিয়েও ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। প্রক্টরকে জানিয়েছেন, তারা আসতে চান কিন্তু সে ব্যবস্থাও করা হয়নি। আমার প্রশ্ন যারা শিক্ষকদের আটকাচ্ছেন তারা আসলে কারা? তারা কী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী? এটা কোন ব্যবস্থার মধ্যে বাস করছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না।

বাধা প্রাপ্ত হওয়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামিমা নাসরিন বলেন, মানববন্ধনে অংশ নেওয়া জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ক্যাম্পাসে আসার পথে প্রায় দুইশত ছেলে আমার সিএনজি আটকায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দেয়ার পরেও ওরা আমাকে বাধা দেয়। সিএনজি ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। যখন আমি ফিরে যেতে চাচ্ছিলাম না তখন কয়েকজন আমার শরীরে হাত দিতে উদ্যত হয়। এরপর অনেকক্ষণ চেষ্টা করে আমি তাদের কাছ থেকে ক্যাম্পাসে আসার অনুমতি পাই। কিন্তু আমি আসতে পারলেও আমার অনেক সহকর্মী আজকে চেষ্টা করেও ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। পথে পথে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

গত ১৮ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গুলিবিদ্ধ হওয়া সন্তানের মা ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার (শীলা) বলেন, আমার সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়েছে এজন্য আমি এখানে আসিনি। শুরু থেকেই আমি শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষদের ওপর নিপীড়ন, হত্যা এসব ঘটনা নিয়ে মর্মাহত ছিলাম অন্যান্য শিক্ষকদের মতোই।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমার সন্তান গুলিবিদ্ধ হওয়ায় আমি নিতে পারতেছিলাম না, আর যাদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে তারা যে কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদেরকে টার্গেট করে গুলি করা হচ্ছে। এই যে নৈরাজ্য অবস্থা, তার দ্রুত নিরসন চাই আমরা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বলি তারা যেন আন্দোলনের পাশে থাকে সবসময়।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয় চন্দ্র রাজবংশী, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. গোলাম মাহমুদ পাবেল।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন