বিজ্ঞাপন

শপথ নিলো অন্তর্বর্তী সরকার, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

August 8, 2024 | 9:31 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের আন্দোলনের পথ ধরে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের চার দিনের মাথায় শপথ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রধান উপদেষ্টাসহ বাকি উপদেষ্টারা শপথ পাঠ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাত সোয়া ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন উপদেষ্টাদের শপথ পড়ান। এর মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেল অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রথমে শপথ পাঠ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শপথ পাঠের পর গোপনীয়তা রক্ষার শপথ পড়েন তিনি। এরপর ১৩ উপদেষ্টা একসঙ্গে শপথ নেন। এরপর তারাও গোপনীয়তা রক্ষার শপথ নেন।

ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা এ দিন শপথ নিতে পারেননি। তারা হলেন— সুপ্রদীপ চাকমা, বিধান রঞ্জন রায় ও ফারুক-ই-আজম। তারা পরবর্তী সময়ে সুবিধামতো শপথ পাঠ করবেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

উপদেষ্টাদের শপথ পড়াচ্ছের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: পিআইডি

বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও বাম দলগুলোসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ইরান, আর্জেন্টিনা, ফিলিস্তিন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের সচিবও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সমন্বয়কও সেখানে ছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা যারা—

১. সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ

বিজ্ঞাপন

২. লেখক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, কলামিস্ট অধ্যাপক আসিফ নজরুল

৩. মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান

৪. সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ

৫. সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন

বিজ্ঞাপন

৬. বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

৭. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম

৮. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

৯. সাবেক নির্বাচন কমিশনার, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন

১০. সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা

১১. বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা -উবিনীগ-এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার

১২. হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর আ ফ ম খালিদ হোসেন

১৩. গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরজাহান বেগম

১৪. চিকিৎসক বিধান রঞ্জন রায়।

১৫. নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর শারমিন মুরশিদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন মুরশিদ

১৬. অপারেশন জ্যাকপটে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক

শপথ অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, খাইরুল কবীর খোকন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, তাবিথ আউয়াল ও মিজানুর রহমান মিনু।

বামপন্থি দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও জোনায়েদ সাকি। এ ছাড়াও ছিলেন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, মাহমুদুর রহমান মান্না ও নূরুল হক নূর। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানকেও দেখা যায় অনুষ্ঠানে। তবে আওয়ামী লীগের কাউকে দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানে প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের সচিবও উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি ছিলেন সরকার পতনের আন্দোলনে নেৃতত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সমন্বয়কও।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে তিনি ভারতে চলে যান। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে সেনাবাহিনী। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বাসভবন বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রধান উপদেষ্টা পদে ড. ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেন। তিনি এতে সায় দিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশে ফেরেন।

সারাবাংলা/জিএস/এএইচএইচ/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন