বিজ্ঞাপন

‘সরকার প্রত্যেকের, সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার থাকবে’

August 9, 2024 | 12:17 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহিদ ছাত্র-জনতা ও আহত অসংখ্য আন্দোলনকারীকে দেশবাসীর পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বলেছেন, তাদের দুঃসাহসিক আত্মত্যাগ, সাহস ও সারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া গণঅভ্যুত্থান ও নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন কখনোই সম্ভব হতো না।

বিজ্ঞাপন

ড. ইউনূস বলেন, দেশের সব মানুষকে স্বাধীন, নির্ভয় ও নিরুদ্বেগ থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্যেই ছাত্র শহিদরা প্রাণ দিয়েছেন। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার দেশের প্রত্যেকের সরকার। এখানে থাকবে সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বঙ্গভবনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণে আনার প্রত্যয় জানান তিনি।

আরও পড়ুন- শপথ নিলো অন্তর্বর্তী সরকার, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বিজ্ঞাপন

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন উৎসবের মুহূর্তে এ স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে একটি অরাজকতা ও ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। অরাজকতা আমাদের শত্রু। একে দ্রুত পরাজিত করতে হবে। অরাজকতার বিষবাষ্প এখন যে-ই ছড়াবে, বিজয়ী ছাত্র-জনতাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দেবে।

এ মুহূর্তে অরাজকতা দমনকেই সরকারের প্রথম কর্তব্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, স্বাধীনতার মুক্ত বাতাস যেন প্রত্যেকে বুক ভরে নিতে পারে, এ নিশ্চয়তা দানই আমাদের সরকারের প্রথম প্রতিশ্রুতি। এ ব্যাপারে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। স্বাধীনতার এই মিলন মেলা থেকে বাদ যাবে না শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড, পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা, কোস্টগার্ড কেউ বাদ যাবে না।

আরও পড়ুন- ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানালেন নরেন্দ্র মোদি

বিজ্ঞাপন

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্বৈরাচারী সরকার সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। আমরা তার সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনব। এই ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংঘটিত করেছে, তাদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা দেশের সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য। সব অপরাধীর বিচার করা হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, আমি জাতির পক্ষ থেকে প্রত্যেককে নির্ভয়ে, আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে নিজ নিজ সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি। স্বৈরাচার দূর হয়ে গেছে। কাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্র, সুবিচার, মানবাধিকার, নির্ভয়ে মতপ্রকাশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার সুযোগ অবারিত হবে। জীবনধারণের সুযোগ প্রদানে সচেষ্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য ও সহমর্মী পরশ দলমত নির্বিশেষে সবাই উপভোগ করবেন— এটাই আমাদের লক্ষ্য।

সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আমাদের এ লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করুন। সারা বিশ্ব আজ অবাক হয়ে বলছে— সাবাস বাংলাদেশ, সাবাস বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। আমরা এ অর্জনকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। আমাদের ছাত্র-জনতার জন্য কিছুই অসম্ভব নয়, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আরও ১৬ উপদেষ্টাও শপথ নেন রাষ্ট্রপতির কাছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন